পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS 8 রবীন্দ্র-রচনাবলী বেড়াইতেছে না। অসীম মানবহৃদয়ের মধ্যে ইহার নীড় প্রতিষ্ঠিত। আমাদের হৃদয়ের উপরে ততই আমাদের বিশ্বাস জন্মে, সুতরাং ততই আমরা বললাভ করিতে থাকি। আমরা তখন যুগের সহিত যুগান্তরের গ্রন্থনিসূত্র দেখিতে পাই। আমার এই হৃদয়ের পানীয়, এ কি আমার নিজের হৃদয়স্থিত সংকীর্ণ কুপের পাঙ্ক হইতে উখিত, না অভ্ৰভেদী মানবহৃদয়ের গঙ্গোত্রীশিখরনিঃসৃত সুদীর্ঘ অতীত কালের শ্যামল ক্ষেত্রের মধ্য দিয়া প্রবাহিত বিশ্ব সাধারণের সেবনীয় স্রোতস্বিনীর জল! যদি কোনাে সুযোগে জানিতে পারি শেষোক্তটিই সত্য, তবে হৃদয় কী প্রসন্ন হয়। প্রাচীন কবিতার মধ্যে আমাদের হৃদয়ের ঐক্য দেখিতে পাইলে আমাদের হৃদয় সেই প্ৰসন্নতা লাভ করে! অতীত কালের প্রবাহধারা যে হৃদয়ে আসিয়া শুকাইয়া যায়, সে হৃদয় কি মরুভূমি। ওরে বংশীবট, অক্ষয় বট, কোথা রে তমাল বন! ওরে বৃন্দাবনের তরুলতা শুকায়েছে কি কারণ! ওরে শ্যামকুঞ্জ, রাধা কুঞ্জ, কোথা গিরি গোবর্ধন!! গ্রন্থ হইতে একটি গান উদধূত করিয়া আমাদের বক্তব্যের উপসংহার করি। ঐ বুঝি এসেছি বৃন্দাবন। আমায় বলে দে রে নিতাই ধন । ওরে বৃন্দাবনের পশুপাখীর রব শুনি না কি কারণ! কেন এ বিলাপ! এ বৃন্দাবনের মধ্যে সে বৃন্দাবন নাই বলিয়া। বর্তমানের সহিত অতীতের একেবারে বিচ্ছেদ হইয়াছে বলিয়া! তা যদি না হইত, আজ যদি সেই কুঞ্জের একটি লতাও দৈবাৎ চোখে পড়িত, তবে সেই ক্ষীণ লতাপাশের দ্বারা পুরাতন বৃন্দাবনের কত মাধুরী বাঁধা দেখিতে পাইতাম!! আমাদের হৃদয়ের কত তৃপ্তি হইত! স্ত্রী শিক্ষা বিষয়ক আপত্তি খণ্ডন।-- কালীকচ্ছের কোনো পণ্ডিত স্ত্রীশিক্ষা সম্বন্ধে কতকগুলি আপত্তি উত্থাপিত করায় কালীকচ্ছ সাৰ্বজনিক সভাস্তগত স্ত্রীশিক্ষা বিভাগের সম্পাদিকা শ্ৰীমতী গুণময়ী- সেই আপত্তি সকল খণ্ডন করিয়া উল্লিখিত পুস্তিকাখানি রচনা করিয়াছেন। পণ্ডিত মহাশয় যে আটটি আপত্তি উত্থাপন করিয়াছেন, তাহার দারুণ গুরুত্ব পাঠকদিগকে অনুভব আপত্তি। ১ । স্ত্রীলোকের বিদ্যাশিক্ষার আবশ্যক কী? শিখিলে উপকার কী ? ২। স্ত্রীলোকে লেখাপড়া শিখিলে অন্ধ হয়। ৩। স্ত্রীলোকে লেখাপড়া শিখিলে বিধবা হয়। ৪। স্ত্রীলোকের, লেখাপড়া শিখিলে, সস্তান হয় না। ৫। স্ত্রীলোক শিক্ষিতা হইলে, অবিনীতা, লজ্জাহীনা ও অকৰ্মণ্যা হয়। ৬। লেখাপড়া করিয়া কি মেয়েরা চাকুরি করিবে না জমিদারি মহাজনী করিবে? ৭ । মেয়ে লেখাপড়া না শিখিলে কী ক্ষতি আছে। ৮। বিদ্যাশিক্ষায় নারীগণের চরিত্র দোষ জন্মে ? আপত্তিগুলির অধিকাংশই এমনতর যে একজন বালিকার মুখেও শোভা পায় না- পণ্ডিতের মুখে যে কিরূপ সাজে তাহা সকলেই বুঝিবেন। শ্ৰীমতী গুণময়ী যে আপত্তিগুলি অতি সহজেই খণ্ডন করিয়াচ্ছেন তাহা ইহার পর বলা বাহুল্য। ভাষাশিক্ষাগ্রন্থকারের নাম নাই। গ্রন্থকর্তা নিজেই লিখিয়াছেন যে এই পুস্তকখানি ইংরাজি প্ৰণালী অনুসারে forfRNE, KTøfrr:R VET PNEJ I VOREFRPM “A Higher English Grammar, by Bain."