পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৯

কবিতা মালতী পুথি 博 হা বিধাতা— ছেলেবেলা হতেই এমন প্রথম সর্গ। হা বিধাতা- ছেলেবেলা হতেই এমন দুর্বল হৃদয় লয়ে লভেছি জনম, আশ্রয় না পেলে কিছু, হৃদয় আমার অবসন্ন হয়ে পড়ে লতিকার মতো। স্নেহ-আলিঙ্গন-পাশে বদ্ধ না হইলে কঁদে ভূমিতলে পড়ে হয়ে ত্ৰিয়মাণ। । তবে হে ঈশ্বর! তুমি কেন গো আমারে। ঐশ্বর্যের আড়ম্বরে করিলে নিক্ষেপ; যেখানে সবারি হৃদি যন্ত্রের মতন; স্নেহ প্রেম হৃদয়ের বৃত্তি সমুদয় কঠোর নিয়মে যেথা হয় নিয়মিত। কেন আমি হলেম না। কৃষক-বালক, ভায়ে ভায়ে মিলে মিলে করিতাম খেলা, পিতামাতা ভাইবোন সকলে মিলিয়া স্বাভাবিক হৃদয়ের সরল উচ্ছাসে, মুক্ত ওই প্রাস্তরের বায়ুর মতন হািদয়ের স্বাধীনতা করিতাম ভোগ। তার স্নেহময় কোলে রাখিতাম মাথা, তা হইলে দ্বেষ, ঘৃণা মিথ্যা অপবাদ মুহুর্তে মুহুর্তে আর হত না সহিতে। গর্বিত এ নগরের ঘোর কোলাহল কৃত্রিম এ ভদ্রতার কঠোর নিয়ম ভদ্রতার কাষ্ঠ হাসি, নহে মোর তরে। দরিদ্র গ্রামের সেই ভাঙাচোরা পথ, যেখানে কোথা বা আছে, তৃণ রাশি রাশি, কোথা বা গাছের তলে বাধা আছে গাভী অযত্নে চিবায় কভু গাছের পল্লব কীভূ বা দেখিছে চাহি বাৎসল্য-নয়নে কুটিরের বধূগণ উঠিয়া প্ৰভাতে । আপনার আপনার কাজে আছে। রাত ।