পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাময়িক সারসংগ্ৰহ Vebrà ইহা হইতে যতদূর অনিষ্ট আশঙ্কা করা যায়, তাহা এখনও সম্পূর্ণ পরিণত হইবার সময় পায় নাই। কেবল দেখা যাইতেছে, পুরুষদের মধ্যে মদ্যপান এবং পাশাবতা ক্রমশ দুর্দান্ত হইয়া উঠিতেছে এবং শ্ৰীলোকদের মধ্যে নারীসুলভ হৃদয়বৃত্তি শুষ্ক হইয়া মানসিক অসুখ এবং সন্তানপালনে অবহেলা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাইতেছে। লুইতেছে। যুরোপে আজকাল প্রধান সমস্যা এই—জিনিসপত্র, না মনুষ্যত্ব, কাহার WW Golfs প্রাচীন-পুঁথি উদ্ধার য়ুরোপের মধ্যযুগে যখন এক সময় বিদ্যার আদর সহসা অত্যন্ত বাড়িয়া উঠিয়ছিল তখন প্রাচীন গ্ৰীক ও রোমান গ্রন্থের অন্বেষণ পড়িয়া যায়। বহু চেষ্টায় ধর্মমন্দিরস্থিত পুস্তকালয় হইতে অনেক প্রাচীন গ্রন্থের উদ্ধার হয়। সেই অন্বেষণকাৰ্য এখনও চলিতেছে। কাজটা কীরূপ অসামান্য যত্নসাধ্য তাহা নভেম্বর মাসীয় “লেজার আওয়ার” পত্রের প্রবন্ধবিশেষ হইতে কতকটা আভাস পাওয়া य: । প্রাচীন পুস্তকালয় অনুসন্ধান করিয়া যতদূর বাহির হইতে পারে তাহা বোধ করি একপ্রকার সমাধা হইয়াছে। কাজটা নিতান্ত সহজ নহে। কেবল বসিয়া বসিয়া পুথি বাছা বিস্তর ধৈর্যসাধ্য, তাহা ছাড়া আর একটা বড়ো কঠিন কাজ আছে। পুরাকালে লিপিকারগণ অনেক সময়ে একটা পুঁথির অক্ষর মুছিয়া ফেলিয়া তাহার উপর আর একটা গ্ৰন্থ লিখিতেন। বহুকষ্টে সেই মোছা অক্ষর পড়িয়া পড়িয়া অনেক দুর্লভ গ্রন্থ উদ্ধার করা হইয়াছে। এইরূপ এক-একখানি পুঁথি লইয়া এক-এক পণ্ডিত বিস্তর চেষ্টায় গুটিকতক লুপ্তপ্রায় দাঁড়ি কবি বিন্দু খুজিয়া বাহির করিলেন, আবার আর এক পণ্ডিত দ্বিগুণতর ধৈর্যসহকারে তাহাতে আরও গুটিকতক যোগ করিয়া দিলেন। এইরূপে পতিনিষ্ঠ সাবিত্রীর ন্যায় তাহারা অনেক সত্যবান গ্ৰন্থকে যমের দ্বার হইতে ফিরাইয়া व्श्शा उत्रानिशाgछन । নেপলসের নিকটবতী ক্ষেত্ৰ খনন করিয়া হক্‌্যালেনিয়ম নামক একটি প্রাচীন নগর ভূগর্ভমধ্যে আবিষ্কৃত হইয়াছে, সেখানে একটি বৃহৎ অট্টালিকার মধ্যে সেকালের এক পুস্তকালয় বাহির হইয়াছে। তন্মধ্যে সহস্ৰ সহস্র পুঁথি একেবারে কয়লা হইয়া গিয়াছে। ইহার কতকগুলি পুথি মুক্তি ধীরে ধীরে খােলা হইয়াছিল, কিন্তু কােনাে বিশেষ ভালাে বহি এ পর্যন্ত श्म नाश्। উত্তর ইজিপ্টের মরুমৃত্তিকা এত শুষ্ক যে তাহার মধ্যে কোনো জিনিস সহজে নষ্ট হয় না। কাগজ সূতা বস্ত্র পাতা প্রভৃতি দ্রব্যও তিন সহস্ৰ বৎসর পরেও অবিকৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়াছে- যেন তাহা সপ্তাহখানেক পূর্বে পুতিয়া রাখা হইয়াছে। সেখানে প্রাচীন নগরীর ভগ্নাবশেষের মধ্য হইতে অনেক গ্রন্থ বাহির হইয়াছে। ইলিয়াড় প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ মৃতদেহের সহিত একত্রে পাওয়া গিয়াছে। সকলেই জানেন প্রাচীন ইজিপ্টীয়গণ বিশেষ উপায়ে মৃতদেহ রক্ষা করিতেন। অনেক সময় তাহারা কাগজ দিয়া এই মৃতদেহের আবরণ প্ৰস্তুত করিতেন। তাহার মধ্যে অধিকাংশ ছেড়া কাগজ। মাঝে মাঝে আস্ত কাগজও পাওয়া যায়। অনেক সাহিত্যখণ্ড, দানপত্র, হিসাব, খৎ, চিঠি এই উপায়ে হস্তগত হইয়াছে। ভাবিয়া দেখিলে হৃদয় স্তম্ভিত হয়, কত সহস্ৰ বৎসর পূর্বেকার কত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আশা-ভরসা, কত বৈষয়িক বিবাদ-বিসম্বাদ, দর-দাম, মামলা-মোকদ্দমা আজ বিস্মৃতি আমাদের দেশেও কি অনেক প্রাচীন পুথি নানা গোপন স্থানে পুনরাবিষ্কারের প্রতীক্ষা করিয়া নাই? কিন্তু কাহার সেদিকে দৃষ্টি আছে? যে বিদেশীরা আমাদের খনি খুঁড়িয়া সোনা তুলিতেছে,