পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাময়িক সারসংগ্ৰহ sья কিন্তু, আমরা চিরকালই অনুপযুক্ত থাকিব। এমনও কেহ মনে করিবেন না। কোনো কার্যের প্ৰথমে ও প্রারম্ভে পরিপকতা স্বভাবতই সম্ভাবে না। কেবল সেই পরিপকস্তার কপট পরিচয় দেওয়াই মহাভ্রম। পক্ষান্তরে, গবর্নমেন্টের অযথা কঠোরতা এবং অশেষ ক্ৰটি সত্ত্বেও, উহা মূলত প্রজাতান্ত্রিক প্রণালী। ভারতীয় ইংরাজের অসীম প্ৰভুত্ব-স্পহার অভ্যন্তরেও শাসনপ্রণালীর প্রজাতান্ত্রিক আসক্তি অলক্ষ্যে বিদ্যমান। যুরোপীয় ডেমক্রেসিকে একেবারে অতিক্রম করিয়া যুরোপীয়দিগের শাসনযন্ত্র কোথাও চলিতে পারে না। কোনো-না-কোনো প্রকারে তাহার সঙ্গে সংস্রব রাখিতে বাধ্য হয়। সুতরাং সাধারণ মত ও জনসাধারণের স্বত্বাধিকারকে উহা একেবারেই উপেক্ষা করিতে পারে না। ইহাই অবশ্য আমাদিগের আশা এবং এ আশা একান্ত বৃথা আশাও নহে। ইংরাজ শাসনের যেরূপ গতি প্রকৃতি তাহাতে এমন দিন অবশ্যই একসময়ে আসিতে পারে, যখন এদেশীয়েরা শ্রেণী ও সম্প্রদায়নির্বিশেষে ব্রিটিশ প্রজার প্রাপ্য স্বত্বাধিকারের সম্যক বা আংশিক অংশ পাইলেও পাইতে পারে। কিন্তু, তাহার উপযুক্ত ও তাহার জন্য প্রস্তুত হওয়া প্রয়োজন। প্ৰজানীতি, প্রকৃত প্ৰস্তাবে প্রতিষ্ঠিত ও সমগ্রদেশে পরিব্যাপ্ত হওয়ার পূর্বে, ব্রিটিশ রাজনীতি, ব্রিটিশ প্রজার স্বত্বাধিকার এদেশীয়দিগকে দিবেন না, ইহা নিশ্চিয়; পরন্তু আমাদের অনুপযুক্ততা ও অপ্ৰস্তুত অবস্থায় তাহা দেওয়াও নিৰ্ম্মফল। উষরক্ষেত্রে বীজ বপন বৃথা। আমাদের আশঙ্কা, ক্ষেত্র অদ্যাপি প্ৰস্তুত হয় নাই। প্রকৃত প্ৰজনৈতিক পলিটিক্সের এখনও আমাদের মধ্যে অত্যন্ত অভাব। পলিটিক্স এখনও আমাদের মধ্যে একটি পোশাকি জিনিসের বেশি আর কিছুই নয়। উহা এখনও আমাদের রক্ত মাংসে মেদ মজায় মিশে নাই। উহা অদ্যপি আমাদের প্রাত্যহিক জীবন ধারণের আহাৰ্য স্বরূপ হয় নাই। তাহা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের দাসত্ব ঘুচিয়া প্রকৃত ও পুষ্টিকর প্রজাত্ব জন্মিবে না। আমরা বোধ হয় আমাদের রাজনৈতিক প্রবণতা কী প্রকৃতির তাহা উপরি-উক্ত আলোচনায় কিয়ৎ পরিমাণে বিবৃত করিয়াছি। এক্ষণে, সাম্রাজ্যের রাশিচক্র কীেন্সিলগুহের উচ্চাকাশে কীরূপে আবর্তিত হইতেছে তাহা খণ্ড খণ্ড ভাবে দেখা আবশ্যক। । কনগ্রেসে বিদ্রোহ কিন্তু তৎপূর্বে প্রসঙ্গক্রমে সংক্ষেপে একটা কথা বলিতে ইচ্ছা করি। কনগ্রেসের গত অধিবেশনে হইয়া উঠিয়াছিলেন। চরিত্র-দোষজন্য কনগ্রেসের সহিত নর্টনের ঘনিষ্ঠতা তাহারা প্রার্থনীয় মনে दन् की । নর্টন যদি সমাজে পতিত হইয়া থাকেন তবে সমাজে তাহার নিমন্ত্রণ বন্ধ হইতে পারে— কিন্তু কনগ্রেসসভায় অকৃত্রিম ভারতহিতৈষী মাত্রেরই অধিকার আছে। হাবড়ার ব্রিজ যদি কোনো পার হইতেন ? ভারত কোন্সিলের স্বাধীনতা ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভার ‘সেসনাই এ শীতে, সতেজ, সরগরম। বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক বৈঠক বরং কিছু বিমৰ্য। কটন আইন ও ক্যান্টনমেন্ট বিলের আলোচনায় এক বিরাট সমস্যা উপস্থিত; পুলিস রেগুলেশন বিলে বিস্তৃত আন্দোলনতরঙ্গ উত্তোলন করিয়াছে। আমাদের সুপ্রিম কীেন্সিল (বা বড়ো ব্যবস্থাপক সভা) সর্বতোভাবে স্বাধীন অথবা স্টেট সেক্রেটারির সারথ্যে ব্রিটিশ