পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সামরিক সারসংগ্ৰহ ৭১১ : কথামালার একটি গল্প এক কৃষক কৃষিকর্মের কৌশল সকল বিলক্ষণ অবগত ছিল। সে পুত্রদিগকে ওই সকল কৌশল শিখাইবার নিমিত্ত, মৃত্যুর পূর্বক্ষণে বলিল, হে পুত্ৰগণ! আমি এক্ষণে ইহলোক হইতে প্রস্থান করিতেছি। আমার যে কিছু সংস্থান আছে, অমুক অমুক ভূমিতে অনুসন্ধান করিলে পাইবে। পুত্রেরা মনে করিল ওই সকল ভূমির অভ্যন্তরে পিতার গুপ্তধন স্থাপিত আছে। । কৃষকের মৃত্যুর পর, তাহারা গুপ্তধনের লোভে সেই সকল ভূমির অতিশয় খনন করিল। এইরূপে যারপরনাই পরিশ্রম করিয়া তাহারা গুপ্তধন কিছু পাইল না বটে, কিন্তু, ওই সকল ভূমির অতিশয় খনন হওয়াতে, সে বৎসর এত শস্য জন্মিল, যে, গুপ্তধন না পাইয়াও তাহারা পরিশ্রমের সম্পূর্ণ ফল পাইল। —‘কথামালা’, পৃ. ৩৮ ৷৷ আমাদের পোলিটিক্যাল ক্ষেত্র হইতে কোনো গুপ্তধন পাইয়া আমাদের সকল দুঃখ দূর হইবে এরূপ যাহারা প্ৰত্যাশা করেন তাহারা নিরাশ হইবেন- কিন্তু সকলে একত্র মিলিয়া কাৰ্যাণে যে শস্য জন্মিবে তাহাতে পরিশ্রমের সম্পূর্ণ ফল পাওয়া যাইবে। मन्तों ČKafr y Obo SR চাবুক-পরিপাক ইংরাজ গবর্নমেন্ট তাহার ইংরাজ কর্মচারীদিগকে প্রশ্রয় দিয়া কীরূপে নষ্ট করিতেছেন, কোনো দেশীয় পত্রে তাহারই উদাহরণস্বরাপে নিম্নলিখিত ঘটনাটি প্রকাশিত হইয়াছে। লুকস সাহেব সিন্ধুদেশের একটি সাবডিবিশনের হর্তাকর্তা। তাহার ভূত্য সেই অভিমানে রেলওয়ে পুলিসের নিষেধ অমান্য করিয়া রেলওয়ের বেড়া লঙ্ঘন করিয়া গিয়াছিল। পুলিস ইন্সপেক্টর তৎসম্বন্ধে তদন্ত করিয়া সাহেবের সেবককে জ্বলন্ত অঙ্গারবৎ পরিত্যাগ করে। সাহেব সেই সংবাদ পাইয়া ইন্সপেক্টরকে চাবুক মারে, ঘোড়ার পশ্চাতে দৌড় করায়, রাত্রি পর্যন্ত নিজের বাড়িতে ধরিয়া রাখে।- আমাদের দেশীয় পত্রিকা এই উপলক্ষে ইংরাজ গবর্নমেন্টের প্রতি অভিমান প্ৰকাশ করিতেছেন- বলিতেছেন, তোমাদের চাকরীদের তোমরা খারাপ করিয়া দিতেছ। তাহারা আমাদিগকে বড়ো মারে, আমাদের বড়ো লাগে! এরাপ সংবাদ এবং তৎসম্বন্ধে এরাপ ভাষ্য পাঠ করিলে আমাদের স্বজাতির প্রতি নিরতিশয় ধিক্কার উপস্থিত হয়। এবং নতশির লুকাইবার স্থান খুজিয়া পাওয়া যায় না। যে ব্যক্তি চাবুক খাইয়া স্থির থাকে, সেই কাপুরুষ যে চাবুক খাইবার যোগ্য এ কথা আমাদের কোনো সম্পাদক কেন আমাদের দেশের লোককে জানিতে দেন না- কেন হঠাৎ পিসিমা সাজিয়া তাহাকে কোলে তুলিয়া লইয়া তাহার পিঠে হাত বুলাইয়া আহা উহু করিতে থাকেন ? যাহার সম্মান-বোধ নাই তাহার অপমানের সম্ভাবনা কোথায়? এরাপ ব্যক্তিকে বলবানের অবজ্ঞা হইতে রক্ষা করা কি কোনো মর্ত্য গবর্নমেন্টের সাধ্যায়ত্ত? গবর্নমেন্ট কি কখনো প্রাকৃতিক নিয়মের পরিবর্তন সাধন করিতে পারেন? মনে করা যাক, পারেন; মনে করা যাক গবর্নমেন্ট এমন এক আশ্চৰ্য আইন করিলেন, যদ্বারা হেয় ব্যক্তিও লাঞ্ছনার হস্ত হইতে নিস্কৃতি লাভ করিল। তাহাতে আমাদের উপকারটা কী হইল ? চাবুক হজম করিবার জন্য যে এক অসাধারণ পরিপাক শক্তি লইয়া জন্মগ্রহণ করিয়াছি সেটার কি কিছু লাঘব হইল ? গবর্মেন্টের সতর্কতা যখনই শিথিল হইবে তখনই তো উন্নত । প্রভুলোক হইতে আমাদের নতপুষ্ঠে আবার চাবুক-বৃষ্টি হইতে থাকিবে। অপমান চাবুক-পাতে سعه س-س--مح٦