পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२७ ...' রবীন্দ্র-রচনাবলী সম্পাদক। শ্ৰীকৃষ্ণবিহারী সেন। শ্ৰী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সভাপতিকে ধন্যবাদ দিয়া সভা ভঙ্গ হইল। রচনাকাল ; শ্রাবণ ১২৮৯ রবীন্দ্ৰ-জিজ্ঞাসা ১, ১৯৬৫ সারস্বত সমাজ ॥২ ১২৮৯ সালের ১৭ অগ্রহায়ণ শনিবার অপরাহু চার ঘটিকার সময় আলবার্ট হলে সারস্বত সমাজের অধিবেশন হয়। ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল মিত্র প্রধান আসন গ্ৰহণ করেন। শ্ৰীযুক্ত বাবু সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রস্তাব করিলেন যে সারস্বত সমাজের মুদ্রিত নিয়মাবলী গ্রাহ্য হউক। শ্ৰীযুক্ত বাবু চন্দ্রনাথ বসু উক্ত প্ৰস্তাবের অনুমোদন করিলে পর সর্বসম্মতিক্রমে সারস্বত সমাজের মুদ্রিত নিয়মাবলী গ্রাহ্য হইল। সভ্যসাধারণের দ্বারা আহুত হইয়া সভাপতি মহাশয় নিম্নলিখিত মতে ভৌগোলিক পরিভাষা সম্বন্ধে তাহার বক্তব্য প্ৰকাশ করিলেন প্রত্যেক গ্ৰন্থকার তাহার ভূগোল-গ্রন্থে নিজের নিজের মনোমতো শব্দ ব্যবহার করিয়া থাকেন- আবার মানচিত্রকারও তাঁহার মানচিত্রে স্বতন্ত্র শব্দ ব্যবহার করিয়া থাকেন। সুতরাং বালকেরা সর্বত্র এক শব্দ পায় না। বক্তা দৃষ্টান্তস্বরূপে উল্লেখ করিলেন যে- এক Isthmus শব্দের স্থলে কেহ বা যোজক, কেহ- বা ডমরু-মধ্যস্থান কেহ- বা সংকটস্থান ব্যবহার করিয়া থাকেন। শেষোক্ত শব্দটি বক্তাই প্রচার করিয়াছেন। সংস্কৃত অর্থ অনুসারে সংকট শব্দ স্থলেও ব্যবহার করা যায়, জলেও ব্যবহার করা যায়, গিরিতেও ব্যবহার করা যায়- সুতরাং উক্ত এক শব্দে Isthmus, channel, mountain-pass Tave RB Wors srgets strait (39 (1 প্ৰণালী ব্যবহার করিয়া থাকেন। কিন্তু প্ৰণালী শব্দে মল-নিৰ্গম পথ বুঝায়। প্ৰণালী অর্থাৎ খাল বা খানা শব্দ সমুদ্রে আরোপ করা অকর্তব্য। Peninsula বাংলায় সকলে উপদ্বীপ বলিয়া থাকেন। কিন্তু উপদ্বীপগুলিতে দ্বীপের ছোটোই বুঝায়, অতএব এইরূপে প্ৰসিদ্ধ শব্দের অপভ্রংশ করা উচিত হয় না। বক্তা উক্ত স্থলে “প্রায়দ্বীপ।” শব্দ ব্যবহার করিয়া থাকেন। প্ৰায়দ্বীপ শব্দেই তাহার অ্যাকার বুঝায়। এইরুপ অনেক পারিভাষিক শব্দ আছে, তাহার একটা নিয়ম করা উচিত। ভূগোলে কতকগুলি কথা আছে যাহা রাঢ়িক- এবং আর-কতকগুলি কথা আছে, যাহা অর্থজ্ঞাপনের নিমিত্ত সৃষ্ট। যেগুলি রাটিক শব্দ তাহার অনুবাদ করা উচিত নহে, আর অপরগুলি অনুবাদের যোগ্য। ইংরাজিতে যাহাকে Red Sea বলে, ফরাসি প্রভৃতি ভাষাতেও তাঁহাকে লোহিত সমুদ্র বলে। কিন্তু India শব্দ অন্য ভাষায় অনুবাদ করে না। আমাদের ভাষায় এ নিয়মের প্রতি আস্থা নাই- কখনো এটা হয়। কখনো ওটা হয়। বক্তা বলিলেন, ইংরাজেরা বিদেশীয় ভাষা হইতে শব্দ গ্ৰহণ করে, কিন্তু সেইসঙ্গে শব্দের তদ্ধিত গ্ৰহণ করে না। ইন্ডিয়া শব্দ গ্ৰহণ করিয়া তাহার তদ্ধিত করিবার সময় তাহকে ইন্ডিয়ান বলিয়া থাকে। বিভক্তিসুদ্ধ অনুকরণ করে না। কিন্তু বাংলায় এ নিয়মের ব্যভিচার দেখা যায়। অনেক বাংলা গ্রন্থকার কম্পপীয় সাগর না বলিয়া কম্পিয়ান সাগর বলিয়া থাকেন। এইরূপ শব্দ গ্রহণের একটা কোনো নিয়ম করা উচিত এবং কোনগুলি অনুবাদ করিতে হইবে ও কোনগুলি অনুবাদ না করিতে হইবে তাহাও স্থির করা আবশ্যক। পরিভাষা- বিশেষ বিবেচনাপূর্বক ব্যবহার করা উচিত। Long সাহেবকে কেহই অনুবাদ