পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@fချွဲfù ዓ8$ অপেক্ষা শক্তিপ্রদ বলা উচিত। কিন্তু ডিকুইন্সির উত্তরে আমরা বলি যে ওই শক্তিপ্ৰদ গুণটি উচ্চঅঙ্গের জ্ঞান ও আমোদের সমষ্টি বলিলে কোনো দোষ হয় না। এ বিষয়ে তর্ক না তুলিয়া আমরা এই সিদ্ধান্ত করিয়াই ক্ষান্ত হইলাম যে সকল পুস্তকের উদ্দেশ্যই প্রশস্ত ভাবে জ্ঞান কিংবা আমোদ কিংবা উভয়ের সমষ্টি। এই সিদ্ধান্তটি মনে রাখিলে অনেক পুস্তকের সমালোচনা সহজ হইয়া পড়ে।- এই সিদ্ধান্তটির উপর দৃষ্টি রাখিয়াই আমরা বলিতে বাধ্য হইলাম যে বঙ্কিমবাবুর কবিতা-পুস্তক আমাদিগের ভালো লাগিল না- জ্ঞানের কথা এ স্থলে উল্লেখ করাই বাহুল্য মাত্র, কিন্তু আমোদ- সাধারণ, সামান্য, অকিঞ্চিৎকর আমোদ পর্যন্ত এ পুস্তকের কোনো স্থল পাঠ করিয়া আমরা পাইলাম না- বঙ্কিমবাবুর কোনো গ্ৰন্থই যে এরূপ নীরস, নিজীবী, স্বাদগন্ধহীনকিছুই না- হইবে, তাহা আমরা কখনো স্বপ্নেও ভাবি নাই। প্রথম কবিতা পৃথ্বীরাজ-মহিষী সংযুক্তার বিষয়। বিষয়টি অতিশয় উচ্চ ও মহৎ। পৃথ্বীরাজ দুঃস্বপ্ন দেখিয়া চমকিয়া উঠিলেন- সেই দুঃস্বপ্ন যবন-কর্তৃক ভারত-বিজয়ের আভাস মাত্র, ক্রমে সেই স্বপ্ন প্রকৃত ঘটনায় পরিণত হইল- ঘোরির মহম্মদ আসিয়া স্থানেশ্বরে হিন্দুরাজকে পরাভব করিলেন, সংযুক্ত নিরুপায় হইয়া চিন্তারোহণ করিলেন — এই বিষয়টির উপর যদি একজন প্রকৃত কবির কল্পনা খেলিতে পাইত, তাহা হইলে ইহাকে সূর্যকিরণসংযুক্ত স্ফটিকের ন্যায় নানা । বর্ণে সুরঞ্জিত করিতে পারিত, কিন্তু বঙ্কিমবাবু যেন পরীক্ষা স্থলে “সংযুক্তা কে ছিল'- “স্থানেশ্বরের যুদ্ধে কী হইল”। এবং ‘সংযুক্ত কী রূপে মরিল'- এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিতেছেন। সমস্ত কবিতাটিতে এমন একটি ভােব নাই, এমন একটি কথা নাই, যাহাতে হৃদয় নাচিয়া উঠে, যাহাতে ধমনী দিয়া রক্ত প্রবলতর বেগে প্রবাহিত হয়- যাহাতে আর্য-গৌরবের কণামাত্ৰও কল্পনার চক্ষে বিভাসিত হয়।--- অনর্থক শব্দ আড়ম্বরে কবিতাটির কায়া বৃদ্ধি হইয়াছে- অসংগতি-মোদ-স্ফীত রোগীর ন্যায়। ইহার লাবণ্য-শ্ৰী নাই- জীবনের আভাস মাত্ৰও আছে কি না সন্দেহ। পৃথ্বীরাজ দুঃস্বপ্ন দেখিয়া শিহরিয়া উঠিলেন— মহিষীকে স্বপ্নের কথা ও আশঙ্কিত উৎপাতের কথা বলিয়া দুঃখে ও ভয়ে নিবেদন করিলেন ‘বার বার বুঝি এই বার শেষ! পৃথীরাজ নাম বুঝি না রয়!” জয় জয় জয় পৃথীরাজে জয় জয় জয় জয়! বলিল বামা। কার সাধ্য তোমা করে পরাভব । 5मु शराः বরুণ বাসব! কোথাকার ছার তুরস্ক পহুব জয় পৃথীরাজ প্রথিতনামা। এত বলি বামা দিল করতালি DD BDBBD S SBBB DDDS BDS আর্য-মহিষীর সহস্রাবার সঘনে ‘জয় জয়’ করাতে আমাদের শৈশবকালের একটি কথা মনে পড়ে- ভূতের স্বপ্ন দেখিয়া সহসা জাগিয়া পড়িয়া যখন ভয়সূচক ক্ৰন্দন করিয়া উঠিতাম, তখন ওইরাপ সঘনে বারংবার ‘রাম রাম’ উচ্চারণ করিয়া ভীত ধাত্রী প্রেতিযোনিকে খেদাইতে চেষ্টা করিতেন। পৃথীরাজের মতো বীরপুরুষের পক্ষে দুঃস্বপ্ন দেখিয়া ভীত হওয়া এবং তাঁহার রানী সংযুক্তার পক্ষে সহস্ৰ জয় জয়’ ধ্বনি করিয়া আশ্বাস প্রদান করা যে কতদূর কল্পনার ব্যভিচার