পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዒd S झीक्ष-झष्नांबी এক বৃহৎ বৃক্ষে পরিণত হইয়াছে। বিলাতি আমদানি কাপড় ও সুতার উপর শুষ্ক বসিয়াছে এবং সেইসঙ্গে ও সেই অনুপাতে এ-দেশীয় কলের সূতার উপরেও কর নির্দিষ্ট হইয়াছে। হইবারই কথা। স্বাধীন বাণিজ্যের মূল সূত্র এবং ততোধিক, বাণিজ্যপরায়ণ ব্রিটিশ গবর্নমেন্টের লাঙ্কেশায়েরি স্বার্থ, উহা অগত্যাই করিতে বাধ্য। বিলাতি আমদানি কাপড় সূতার উপর কর বসিলে এ-দেশীয় কলের কাপড় সূতার উপর অবশ্যই কর বসিবে, এ কথা গবর্নমেন্ট তখনই স্পষ্টাক্ষরে বুঝাইয়া দিয়াছিলেন। আন্দোলনকারীদের কতক লোকে হয়তো তাহা বুঝেন নাই; কতক লোকে তাহা বুঝিয়া সজ্ঞানে ও সুস্পষ্ট ভাষায় সে কারও বহনে সম্মত হইয়াছিলেন। নহিলে পরের যাত্রা- ভঙ্গার্থে আপন নাসিকার সম্পূর্ণ ছেদনকাৰ্য সম্পাদন হইবে কেন? অতএব যাহারা বিলাতি আমদানি বস্ত্রের মাশুলের আকাঙ্ক্ষায় এ-দেশীয় কলের কাপড়ের উপর করা দিতে স্বীকার করিয়াছিলেন, অন্তত তাহদের পক্ষে এখন উক্ত করা বসিয়াছে বলিয়া ক্ৰন্দন করা কেবল অন্যায় ও অসংগত নহে, উন্মাদ রোগের লক্ষণ। বিলাতি আমদানি কাপড়ের উপর কর বসিলে দেশী কাপড়েও কর লাগিবে। ইহা সকলেই জানিত; গবর্নমেন্ট নিজে এ কথা বলিয়াছিলেন, স্টেট-সেক্রেটারি সেই শর্তে আমদানি কর মঞ্জুর করিয়াছিলেন; কাউন্সিল গৃহে স্বদেশহিতৈষী পক্ষ সে কর স্বীকার করিয়া লইয়াছিলেন।” তবে এখন আবার কথা কেন, গবর্নমেন্টকে গালাগালি কেন আর এত গণ্ডগোলই বা কেন ? আপন নাসিকা আপনারাই কাটিয়াছ তাহাতে পরের দোষ কী? আবদার করিয়াছিলে আইন হইয়াছে আবার কী? সাহেব সওদাগরেরা বিলাতি কাপড়ের জন্য কেন অতি আন্দোলন করিয়াছিলেন আমরা অদ্যাপি ভালো করিয়া বুঝিতে পারি নাই। তাহাদের সাধুতার অন্তরালে আসল অভিপ্ৰায় যাহা তাহা অত্যন্ন পরিমাণে অনুমান করিতে পারিলেও আমরা এ স্থলে বলিতে চাই না। পরন্তু স্বদেশভক্ত সম্প্রদায় সে করের জন্য কেন অতি উতলা’ হইয়াছিলেন তাহাও বুঝা কঠিন। তাহাদের অধৈর্যের একটা কারণ আমরা উপরেই নির্দেশ করিয়াছি। তাহা হুজুক 'হবি' ভিন্ন আর কিছুই নহে। কেহ কেহ বলিতে পারেন যে, বিলাতি কাপড়ে মাশুল হইলে, কাপড়ের দেশী কলওয়ালাদিগের সুবিধা হইবে, দেশের শিল্পোন্নতি হইবে এই অনুমানেই স্বদেশহিতৈষীরা আমদানি-কারের আকাঙক্ষা করিয়াছিলেন। কিন্তু এ কথা কাৰ্যত কোনো কথাই নয়। কেননা আমদানি-করা হইলে “এক্সাইস” করাও হইবে ইহা উভয় পক্ষে অঙ্গীকারই করা হইয়াছিল। এ সম্বন্ধে সুপ্রিম কাউন্সিলের সম্মাননীয় সদস্য মি. ফাজুলভাই বিশরামের ইংরাজি উক্তি আমরা ফুটনোট উদধূত করিয়াছি। তিনি বলিয়াছিলেন, “আমি নিজে কাপড়ের কলের স্বত্বাধিকারী তথাচ বিলাতি কাপড় সূতার উপর আমদানি করের আকাঙ্ক্ষায় এ-দেশীয় কাপড় সূতায় শুষ্ক সংস্থাপনে সম্মত হইতেছি।” আর কিছুই নয়। এরাপ বিড়ম্বনাময়ী বিচিত্র কল্পনা কেবল মরীচিকাপ্রলুব্ধ পেট্রিয়টি মস্তিষ্কেই উদ্ভূত হওয়া সম্ভবে। ক্ষুদ্র লোকের এমনি বৃহৎ কল্পনা করা সাধ্য নহে। তঁাতি রাজা মান্ধাতার আমলের আর্য-তীতে বিশুদ্ধ বস্ত্ৰ বয়ন করে; সে বস্ত্ৰ মাঞ্চিস্টারের স্লেচ্ছভাবাপন্ন নহে; অতি উত্তম কথা। পরন্তু সেই বিশুদ্ধ বস্ত্ৰ পরিধান করিয়া পূতাত্মা আৰ্যসন্তানদিগের সন্ধ্যাহিক আওড়াইবার অতিরিক্ত সুবিধা হইতে পারে। ইহা আরও উত্তম। কিন্তু এই যে আর্য-তীতের বিশুদ্ধ বস্ত্ৰ ইহাতে সূত্র কাহার ? সূতা কোথা হইতে আসে সে সংবাদ কি সত্য সত্যই আপনারা ১. সুপ্রিম কাউন্সিলের বেসরকারি সদস্য মাননীয় শ্ৰীযুক্ত ফাজুলভাই বিশরাম বলিয়াছিলেন : I, for one, speaking as a mill owner, would be willing to support the levying of an excise duty on cotton goods manufactured in India, assuming of course that such an import can be practically levied without injustice and serious trouble.