পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

A68 রবীন্দ্র-রচনাবলী করিতে পাইত। দরিদ্র শ্রেণীর বক্স-পরিধান-বিলাসের কথা এখানে না বলাই ভালো। ব্রাহ্মণঠাকুরানীরাও তখন চরকা কাটিতেন। অনুন চরিমাস চরকা না ঘুরাইলে একখানা কাপড়ের উপযুক্ত সুতার সংস্থান হইত না। ইহাতেই বুঝিতে হইবে বক্সের সুবিধাটি তখন কেমন ছিল। তোমার সাত গাঁটের বাস্ত্ৰ সওদাগরি ও ঢাকাই মসলিন মসলিদের কথা শুনিবা মাত্রই আমরা মোহিত হইয়া মারি মরি’ বলিলেও বলিতে পারি। কিন্তু সে ‘মরি মরিতে’ আসল ঘটনা মারা যাইবে না। তখন সমগ্ৰ দেশমধ্যেই বক্সের অভাব বিলক্ষণই ছিল। মাফিস্টারের অপরাধ এই যে, সে এ দেশে বহু পরিমাণে বস্ত্ৰ আমদানি করিয়াছিল এবং করিতেছে। সুলভ বস্ত্ৰ আনিয়া দেশের ইত্যর ভদ্র সর্বসাধারণকে বস্ত্র পরাইয়াছে। সে সূক্ষ্ম সূত্র পঠাইয়া তোমার বাবুগিরি বজায় রাখিয়াছে; বরং বিলক্ষণ বৃদ্ধিই করিয়াছে। পরন্তু, তাহারই জন্য দেশীয় তাতির তীতে আজও চলিয়াছে। মাঞ্চিস্টারের অপরাধ এই। এই অপরাধে এত রাগ? তুমি আরও রাগিয়া বলিবে, “অপরাধ অবশ্যই অপরিসীম। অপরাধ। তাঁহারই জন্য তো এ-দেশীয় তাতিকুল উৎসয়ে গিয়াছে।’ এইরূপ উক্তির ধুয়াটা কিছুকাল হইতে খুব অতিরিক্ত মাত্রায় উঠিয়াছে বটে; কিন্তু, প্রিয় মহাশয়, আপনার এ কথাটা সম্পূর্ণ সত্য বলিয়া স্বীকার করা যায় না। কেন স্বীকার করা যায় না। তাহা বুঝাইবার স্থান। এখানে নাই; কিছু সবুর করিলে বুঝাইতে পারি। কিন্তু, তাহা স্বীকার করিলেই বা কী? স্বীকারই না-হয় করিলাম মাঞ্চিস্টারের সুলভ বন্ত্রের দীেরাত্ম্যে দেশের তঁতিদের তাতবোনার ব্যাঘাত হইয়াছে; তাহদের অল্প মারা গিয়াছে; তাহারা উৎসন্ন হইতেছে। কিন্তু মাঞ্চিস্টারের এই অনিষ্টে, অনিষ্টই যদি ইহা হয়- আমাদের তাতিরা কি উৎসরের পথ হইতে ফিরিতে পরিবে? আমরা উপরেই দেখাইয়াছি, মহাশয়রা অনর্থক আন্দোলনে যাহা করিলেন, তাহাতে আমাদের তাঁতিদের তাতিকুল ও বৈষ্ণবকুল দুই কুলই বরং গেল। তার পর কেবল এক র্তাতিকুলের সুবিধা সচ্ছলতার জন্য, সমগ্র দেশের লোক দুঃখ সহ্য করবে, সুলভ বস্ত্ৰ ব্যবহারে বঞ্চিত হইবে, সভ্যতার কথা ছাড়িয়া দিয়া, ইহাই কি স্বভাবের নিয়ম ? অথবা সুযুক্তির কথা ? এখন সর্বশেষে আর-একটি প্রশ্ন আছে। এই যে আমদানি মাশুল বসিল, এ মাশুল ফলিতাৰ্থে দিবে কে? দিবে বিক্রেতা কিংবা ক্রেতা ? ক্রেতারই তো এ মাশুল দিতে হইবে। মাঞ্চিস্টার তো এ মাশুল দিবে না। মহাশয়; দিতে হইবে যে আমাদেরই। এ কথাটি কি আপনারা একটিবারও ভাবিয়াছিলেন ? হায়! ভাবিবার অবসর পান নাই; ভাবা অনাবশ্যক মনে করিয়াছিলেন। অতীব অভাগ্যের বিষয় যে, আবদারকারীরা চিন্তাশীলতার অতি শুরুত্বে বস্তুক্রেতা বলিয়া যে একটা জীবও জগতে আছে তাহা একেবারেই বিস্মৃত হইয়া গিয়াছিলেন; অথবা তাহাদের অস্তিত্ব আন্দীে বিবেচনাধীনে গ্রহণ করেন নাই। তাহারা হয়তো মনে করিয়াছিলেন এ মাশুল মাঞ্চিস্টারই দিবে। ভারতবাসীর দিতে হইবে না। কিন্তু স্টেট-সেক্রেটারি আপন কর্তব্য ভুলেন নাই। তিনি যথাসময়েই স্মরণ করিয়া দিয়াছিলেন যে, আমদানি-কর মাঞ্চিস্টারের স্কন্ধে পড়িবে না; প্রকৃত প্ৰস্তাবে পড়িবে তাহা ভারতেরই স্কন্ধে। পরন্তু তাহাতে করিয়া দরিদ্র রায়তের বস্ত্ৰ ব্যবহারে সবিশেষ বিভ্ৰাটই ঘটিবে। কিন্তু সে কথা শুনে কে? সেক্রেটারির সমীচীন উক্তি তৎপ্রতি পলিসি আরোপেরই কারণ হইয়াছিল। কিন্তু উচিত কথা বলিতে হইলে সেক্রেটারি-অবস্টেট এ সম্বন্ধে অবশ্যই ধন্যবাদের পাত্র। তবে তিনি সকল দিক রাখিতে গিয়া কোনো দিকই রক্ষা করিতে পারেন নাই; এ কথাও সত্য। তিনি এ-দেশীয় আন্দোলকদিগের সন্তোষার্থে বিলাতি S. l should like to ask who is going to pay the taxes on the goods imported? The people of India, the consumers of India... Whether import duties are right or wrong whatever duty yota levy on cotton goods must inevitably be paid by the people who wear these cotton goods in India. The tax, would therefore be a tax upon the people of India and not upon the Lancashire manufacture. Martífa-e-Qt f. Vivic ve Roe Sus