পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

troo আর সহিতে হইবে না। যত দিন পরিবার-পোখীণে সক্ষম না হইবে ততদিন পর্যন্ত পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি করিয়ো না। তাহা হইলে দরিদ্রতার দুঃখ অনেক পরিমাণে হ্রাস হইবে। যখন নববধূকে ঘরে আনিবার জন্যে মা তোমাকে অনুরোধ করিবেন, তখন তুমি মায়ের পা জড়াইয়া কাদিয়া বলিয়ো, মা, আমরা এই কয়জনেই অন্নবস্ত্রের ক্লেশে সারা হইতেছি এখন আবার ঘরে আরও লোক আনিয়া কেন আমাদের দুঃখ-কষ্ট বাড়াইয়া তুলিব, আর কী করিয়াই বা একটি সুকুমারী বালিকাকে আমাদের এই দারুণ দুঃখ-ক্লেশের ভাগী করিব- মা, যতদিন পর্যন্ত আমাদের জীবিকা নির্বাহােপযোগী যথেষ্ট অর্থ উপার্জনে সক্ষম না হই ততদিন তুমি, আমাকে এই অনুরোধটি করিয়ো না। মা পরম স্নেহময়ী, তিনি যখন বুঝিবেন যে, পুত্ৰ এখন বিবাহ করিলে যথার্থই পরিবারস্থ সকলের কষ্ট বৃদ্ধি হইবে তখন তিনি আর এ-অনুরোধ করিবেন না। তোমাদের হাতে সকলই রহিয়াছে। তোমরা দলবদ্ধ, প্ৰতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়া কাৰ্যক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইলে কোন মহৎ কার্যােনা সুসিদ্ধ হইতে পারে। তোমাদের স্বাস্থ্যের উপরেই দেশের স্বাস্থ্য নির্ভর করিতেছে- তোমাদের উন্নতি হইলেই দেশের উন্নতি হইবে- তোমাদের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গলেই দেশের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল। তোমাদের এই সকল কথা বলিবার, তোমাদের অনুরোধ করিবার সুযোগ পাইব বলিয়া এই ‘বালক পত্র প্রকাশে প্রবৃত্ত হইয়াছি- তোমাদের মঙ্গলই ইহার একমাত্র উদ্দেশ্য। -পত্রিকাটির আষাঢ় সংখ্যায় "শ্ৰীকেদার-দক্ষিণেশ্বর’ স্বাক্ষরে কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৬৩-১৯৪৯) লাঠালাঠি’ প্ৰবন্ধ লিখিয়া বিতর্কের উপসংহার ঘটান। R0. RX N. SO. ‘সত্য' প্ৰবন্ধটি রবীন্দ্রনাথ ১ বৈশাখ ১২৯৩ তারিখ মধ্যাহ্নে সিটি কলেজ গৃহে পাঠ করিয়াছিলেন, যদিও তাহার পূর্বেই ইহা চৈত্র ১২৯২-সংখ্যা “বালক’ ও ২৯ চৈত্র ১২৯২সংখ্যা “সঞ্জীবনী’-তে মুদ্রিত হইয়াছিল। ইহা বৈশাখ ১৮০৮ শক-সংখ্যা তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’ এবং ১৬ বৈশাখ ও ১ জ্যৈষ্ঠ-সংখ্যা তত্ত্বকীেমুদী’-তেও পুনর্মুদ্রিত হইয়াছিল। রবীন্দ্রনাথের স্বাক্ষর-সংবলিত আপনি বড়ো” প্ৰবন্ধটি দুগ্ধপ্ৰাপ্য কল্পনা’ পত্রিকা হইতে উদ্ধার করিয়া প্ৰশান্তকুমার পাল ১৩৯৪ বঙ্গাব্দের সাহিত্য-সংখ্যা 'দেশ'-এ পুনর্মুদ্রিত করেন, বর্তমান পাঠটি পত্রিকা হইতে সংকলিত হইয়াছে। বর্তমান বিভাগের ২২-২৭ সংখ্যক রচনাগুলি ‘পারিবারিক স্মৃতিলিপি পুস্তক' নামাঙ্কিত রবীন্দ্রভবনের ২৭২-সংখ্যক পাণ্ডুলিপিতে লিখিত হইয়াছিল, এই পাণ্ডুলিপির পরিচয় পূর্বেই দেওয়া হইয়াছে। পুলিনবিহারী সেন ইহার অন্তর্গত অনেক রচনা ১৩৫২-১৩৫৪ বঙ্গাব্দের শারদীয়া দেশ পত্রিকায় প্রকাশ করিয়াছিলেন, রবীন্দ্রবীক্ষা ১ (শ্রাবণ ১৩৮৩) সংকলনে কানাই সামন্ত অবশিষ্ট রচনাগুলি প্ৰকাশ করেন। দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জামাতা মোহিনীমোহন চট্টোপাধ্যায়ের সহিত পূৰ্ববতী একটি আলোচনার সূত্র ধরিয়া হিন্দুদিগের জাতীয় চরিত্র ও স্বাধীনতা’ নিবন্ধে রবীন্দ্রনাথ একটি বিতর্কমূলক বিষয়ের অবতারণা করিয়া বাঁধা নিয়মের প্রতি হিন্দুদিগের আনুগত্যের প্রকৃতি নির্ণয় করিতে প্ৰবৃত্ত হন। এই রচনাটি ১৭ নভেম্বর ১৮৮৮ (৩ অগ্রহায়ণ ১২৯৫) তারিখে লেখা। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ১৭ ও ১৯ নভেম্বরের দুইটি প্রস্তাবে বক্তব্যের এই অংশ সম্পর্কে তঁহার ভিন্নমত লিপিবদ্ধ করিয়াছেন। এই সমালোচনার প্রত্যুত্তরে রবীন্দ্রনাথ তাহার বক্তব্য ব্যাখ্যা করিয়াছেন “আমাদের সভ্যতায় বাহ্যিক ও মানসিকের অসামঞ্জস্য’-শীর্ষক বর্তমান সংকলনের ২৪-সংখ্যক রচনায়। "স্ত্রী ও পুরুষের প্রেমের বিশেষত্ব’ রচনাটি ১৯ নভেম্বর ১৮৮৮ (৫ আগ্রহায়ণ ১২৯৫) তারিখে রচিত। এইটি পারিবারিক স্মৃতিলিপি পুস্তক'-এর ২৬-সংখ্যক প্রস্তােব- ইহা লাইয়াই সর্বাধিক বিতর্ক উপস্থিত হইয়াছিল। শরৎকুমারী চৌধুরানী, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, যোগেশচন্দ্ৰ চৌধুরী ও সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর বিতর্কে যোগ দিয়াছিলেন। মায়ার থেলা' রচনার