পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী নির্জন প্ৰান্তরিতলে বিদ্যুৎ-বহ্নির সর্প হানে ফণা যুগাস্তের মেঘে । চঞ্চল মুহুর্ত যত অন্ধকারে দুঃসহ নৈরাশে নিবিড় নিবদ্ধ হয়ে তপস্যার নিরুদ্ধ নিশ্বাসে শান্ত হয়ে আসে । জানি জানি, এ তপস্যা দীর্ঘরাত্ৰি করিছে সন্ধান চঞ্চলের নৃত্যস্রোতে আপন উন্মত্ত অবসান দুরন্ত উল্লাসে । বন্দী যৌবনের দিন আবার শৃঙ্খলহীন বারে বারে বহিরিবে ব্যগ্ৰ বেগে উচ্চ কলোচ্ছাসে । বিদ্রোহী নবীন বীর, স্থবিরের শাসন নাশন, বারে বারে দেখা দিবো ; আমি রচি তারি সিংহাসন, তারি সম্ভাষণ । স্বগের চক্রান্ত আমি - আমি কবি যুগে যুগে আসি তব তপোবনে । পূৰ্ণ করে মোর ডালা, উদামের উতরোল বাজে মোর ছন্দের ক্ৰন্দনে । ব্যথার প্রলাপে মোর গোলাপে গোলাপে জাগে বাণী, কিশলয়ে কিশলয়ে কৌতুহল-কোলাহল আনি মোর গান হানি । হে শুষ্ক বন্ধলধারী বৈরাগী, ছলনা জানি সবসুন্দরের হাতে চাও আনন্দে একান্ত পরাভব ছদ্মরণাবেশে । বারে বারে পঞ্চশরে অগ্নিতেজে দগ্ধ করে দ্বিগুণ উজজুল করি বারে বারে বঁাচাইবে শেষে । বারে বারে তারি তুণ সম্মোহনে ভরি দিব বলে আমি কবি সংগীতের ইন্দ্ৰজাল নিয়ে আসি চলে মৃত্তিকার কোলে । জানি জানি, বারংবার প্ৰেয়সীর পীড়িত প্রার্থনা শুনিয়া জাগিতে চাও আচম্বিতে, ওগো অন্যমন, নূতন উৎসাহে । তাই তুমি ধ্যানচ্ছলে বিলীন বিরহীতলে, উমাকে কঁদাতে চাও বিচ্ছেদের দীপ্তদুঃখদাহে ।