পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূরবী SV) হে আত্মবিস্মৃতি, যদি দ্রুত তুমি না যেতে চমকি, বারেক ফিরায়ে মুখ পথমাঝে দাড়াতে থমকি, তা হলে পড়িত ধরা রোমাঞ্চিত নিঃশব্দ নিশায় দুজনের জীবনের ছিল যা চরম অভিপ্রায় । তা হলে পরমলগ্নে, সখী, সে ক্ষণকালের দীপে চিরকাল উঠিত আলোকি । হে পান্থ, সে পথে তব ধূলি আজ করি যে সন্ধান— বঞ্চিত মুহূর্তখানি পড়ে আছে, সেই তব দান । অপূর্ণের লেখাগুলি তুলে দেখি, বুঝিতে না পারি।-- চিহ্ন কোনো রেখে যাবে, মনে তাই ছিল কি তোমারি । ছিন্ন ফুল, এ কি মিছে ভান । কথা ছিল শুধবার, সময় হল যে অবসান । গেল না ছায়ার বাধা ; না-বোঝার প্রদোষ-আলোকে স্বপ্নের চঞ্চল মূর্তি জাগায় আমার দীপ্ত চােখে সংশয়মোহের নেশা— সে মূর্তি ফিরিছে কাছে কাছে আলোতে আঁধারে মেশা, তবু সে অনন্ত দূরে আছে মায়াচ্ছন্ন লোকে । অচেনার মরীচিকা আকুলিছে ক্ষণিকার শোকে । খোলো খোলো, হে আকাশ, স্তব্ধ তব নীল যবনিকা । খুঁজিব তারার মাঝে চাঞ্চলের মালার মণিকা । খুঁজিব সেথায় আমি যেথা হতে আসে ক্ষণতরে আশ্বিনে গােধূলি-আলো, যেথা হতে নামে পৃথী-’পরে শ্রাবণের সায়াহ্নযুথিকা, যেথা হতে পরে ঝড় বিদ্যুতের ক্ষণদীপ্ত টিকা । হারুন-মারু জাহাজ ৬ অক্টোবর ১৯২৪ খেলা সন্ধ্যাবেলায় এ কোন খেলায় করলে নিমন্ত্রণ ওগো খেলার সাথি ! হঠাৎ কেন চমকে তোলে শূন্য এ প্রাঙ্গণ রঙিন শিখার বাতি । কোন সে ভোরের রঙের খেয়াল কোন আলোতে ঢেকে সমস্ত দিন বুকের তলায় লুকিয়ে দিলে রেখে, অরুণ-আভাস ছানিয়ে নিয়ে পদ্মবনের থেকে রাঙিয়ে দিলে রাতি ? উদয়-ছবি শেষ হবে কি অস্ত-সোনায় ঐকে জ্বলিয়ে সাঝের বাতি ।