পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S, লুকোচুরির ছলে ? বনের পারে আবার তারে কোথায় পেলে খুঁজি শুকনো পাতার তলে ? যে সুর তুমি শিখিয়েছিলে বসে আমার পাশে সকালবেলায় বটের তলায় শিশির-ভেজা ঘাসে, সে আজ ওঠে। হঠাৎ বেজে বুকের দীর্ঘশ্বাসে, উছল চোখের জলেকঁপত যে সুর ক্ষণে ক্ষণে দুরন্ত বাতাসে শুকনো পাতার তলে । মোর প্রভাতের খেলার সাথি আনত ভরে সাজি সোনার চাপা ফুলে । অন্ধকারে গন্ধ তারি ওই যে আসে। আজি এ কি পথের ভুলে । বকুলবীথির তলে তলে আজ কি নতুন বেশে সেই খেলাতেই ডাকতে এল আবার ফিরে এসে । সেই সাজি তার দখিন হাতে, তেমনি আকুল কেশে চাপার গুচ্ছ দুলে । সেই অজানা হতে আসে এই অজানার দেশে, এ কি পথের ভুলে । আমার কাছে কী চাও, তুমি, ওগো খেলার গুরু, কেমন খেলার ধারা | চাও কি তুমি যেমন করে হল দিনের শুরু তেমনি হবে। সারা । সেদিন ভোরে দেখেছিলাম প্ৰথম জেগে উঠে নিরুদ্দেশের পাগল হাওয়ায় আগল গেছে টুটে, কাজ-ভোলা সব খ্যাপার দলে তেমনি আবার জুটে করবে দিশেহারা । স্বপন-মৃগ ছুটিয়ে দিয়ে পিছনে তার ছুটে তেমনি হব। সারা । বাধা পথের বাধন মেনে চলতি কাজের স্রোতে চলতে দেবে নাকো ? সন্ধ্যাবেলায় জোনাক-জ্বালা বনের আঁধার হতে তাই কি আমায় ডাকো ? সকল চিন্তা উধাও করে অকারণের টানে অবুঝ ব্যথার চঞ্চলতা জাগিয়ে দিয়ে প্ৰাণে দাড়িয়ে কোথায় থাকো । না জেনে পথ পড়ব তোমার বুকেরই মাঝখানে, তাই আমারে ডাকো ।