পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূরবী Str) বক্ষে আমার কালোর ধারা, আলোর ধারা আমার চোখেস্বৰ্গে আমার সুর চলে যায়, নৃত্য আমার মর্তলোকে । অশ্রুহাসির যুগল ধারা ছোটে আমার ডাইনে বামে । আচল গানের সাগর মাঝে চপল গানের যাত্রা থামে । বুয়েনোস এয়ারিস ১১ ডিসেম্বর ১৯২৪ আকন্দ সন্ধা-আলোর সোনার খেয়া পাডি যখন দিল গগন-পারে অকল অন্ধকারে, ছমছমিয়ে এল রাতি ভুবন ডাঙার মাঠে একলা আমি গোয়ালপাড়ার বাটে । নতুন- ফোটা গানের কুড়ি দেব বলে দিনুর হাতে আনি মনে নিয়ে সুরের গুনগুনানি চলেছিলেম, এমন সময় যেন সে কোন পরীর কণ্ঠখানি বাতাসেতে বাজিয়ে দিল বিনা ভাষার বাণী ; বললে আমায়, “দাড়াও ক্ষণেক-তরে, ওগো পথিক, তোমার লাগি চেয়ে আছি। যুগে যুগান্তরে । আমায় নেবে চিনে সেই সুলগন এল এতদিনে । পথের ধারে দাড়িয়ে আমি, মনে গোপন আশা কবির ছন্দে বান্ধব আমার বাসা ।” দেখা হল, চেনা হল সাঝের আঁধারেতে ; বলে এলেম, “তোমার আসন কাব্যে দেব পেতে ।” সেই কথা আজ পড়ল মনে হঠাৎ হেথায় এসে সাগরপারের দেশে ; মন-কেমনের হাওয়ার পাকে অনেক স্মৃতি বেড়ায় মনে ঘুরে তারি মধ্যে বাজল করুণ সুরে“ভুলো না গো ভুলো না। এই পথ-বাসিনীর কথা, আজও আমি দাড়িয়ে আছি, বাসা আমার কোথা ?” শপথ আমার, তোমরা বোলো তারে তার কথাটি দাড়িয়েছিল মনের পথের ধারে, বোলো তারে চোখের দেখা ফুটেছে আজ গানে— লিখনখানি রাখিনু এইখানে । আকন্দবল্লভ রবি