পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ | | Տ Տ) পূরবী ঘরের খবর পাই নে কিছুই, গুজব শুনি নাকি কুলিশপাণি পুলিস সেথায় লাগায় হাকাহঁকি । শুনছি। নাকি বাংলাদেশের গান হাসি সব ঠেলে কুলুপ দিয়ে করছে আটক আলিপুরের জেলে । হিমালয়ে যোগীশ্বরের রোষের কথা জানি, অনঙ্গেরে জ্বলিয়েছিলেন চোখের আগুন হানি । এবার নাকি সেই ভূধরে কলির ভূদেব যারা বাংলাদেশের যৌবনেরে জ্বলিয়ে করবে। সারা । সিমলে নাকি দারুণ গরম, শুনছি। দাৰ্জিলিঙে নকল শিবের তাণ্ডবে আজ পুলিস বাজায় শিঙে । জানি তুমি বলবে আমায়, "থামো একটুখানি, বেণুবীণার লগ্ন এ নয়, শিকল ঝমােঝমানি ! শুনে আমি রাগিব মনে, কোরো না সেই ভয়সময় আমার আছে বলেই এখন সময় নয় । যাদের নিয়ে কাণ্ড আমার তারা তো নয়। ফাকি, গিলটি-করা তকমা-ঝোলা নয় তাহদের খাকি । কপাল জুড়ে নেই তো তাদের পালোয়ানের টিকা, তাদের তিলক নিত্যকালের সোনার রঙে লিখা । সেদিনও তো সাজাবে জুই দেবাৰ্চিনার থালা । সেই থালাতে আপন ভাইয়ের রক্ত ছিটোয় যারা, লড়বে তারাই চিরটা কাল ? গড়বে পাষাণ-কারা ? রাজ-প্ৰতাপের দম্ভ সে তো এক দমকের বায়ু, সবুর করতে পারে এমন নাই তো তাহার আয়ু । ধৈর্য বীর্যক্ষমা দয়া ন্যায়ের বেড়া টুটে লোভের ক্ষোভের ক্রোধের তাড়ায় বেড়ায় ছুটে ছুটে । আজি আছে কাল নাই ব’লে তাই তাড়াতাড়ির তালে কড়া মেজাজ দাপিয়ে বেড়ায় বাড়াবাড়ির চালে | পাকা রাস্তা বানিয়ে বসে দুঃখীর বুক জুড়ি, ভগবানের ব্যথার পরে হাকায় সে চার-ঘুড়ি । তাই তো প্রেমের মাল্য গাথার নাইকো অবকাশ, শান্ত হবার সাধনা কই, চলে কলের রথেসংক্ষেপে তাই শান্তি খোজে। উলটো দিকের পথে । জানে সেথায় বিধির নিষেধ, তর সহে না। তবুধর্মেরে যায় ঠেলা মেরে গায়ের জোরের প্রভু । রক্ত-রঙের ফসল ফলে তাড়াতাড়ির বীজে, বিনাশ তারে আপনি গোলায় বোঝাই করে নিজে । বাহুর দম্ভ, রাহুর মতো, একটু সময় পেলে নিত্যকালের সূর্যকে সে এক-গরাসে গেলে । Sbrዓ