পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ο δ Ο বুয়েনোস এয়ারিস ২০ ডিসেম্বর ১৯২৪ রবীন্দ্র-রচনাবলী বিরাহিণী তিন বছরের বিরাহিণী জানলাখনি ধরে কোন অলক্ষ্য তারার পানে তাকাও আমন করে । অতীত কালের বোঝার তলায় আমরা চাপা থাকি, ভাবী কালের প্রদোষ-আলোয় মগ্ন তোমার আঁখি । তাই তোমার ওই কান্দন-হাসির সবটা বুঝি না যে, স্বপন দেখে অনাগত তোমার প্রাণের মাকে | কোন সাগরের তীর দেখেছ জানে না তো কেউ, হাসির আভায় নাচে সে কোন সুদূর অশ্রু-ঢেউ । সেখানে কোন রাজপুত্ত্বর চিরদিনের দেশে তোমার লাগি সাজতে গেছে। প্ৰতিদিনের বেশে । সেখানে সে বাজায় বঁাশি রূপকথারই ছায়ে, সেই রাগিণীর তালে তোমার নাচন লাগে গায়ে । আপনি তুমি জান না তো আছ কাহার আশায়, অনামারে ডাক দিয়েছ চোখের নীরব ভাষায় । হয়তো সে কোন সকালবেলা শিশির-ঝলা পথে জাগরণের কেতন তুলে আসবে সোনার রথে, কিংবা পূর্ণ চাদের লগ্নে বৃহস্পতির দশায়— দুঃখ আমার, আর সে যে হােক, নয়। সে দাদামশায় । N-?\g ওগো মোর না-পাওয়া গো, ভোরের অরুণ-আভাসনে ঘুমে ছুয়ে যাও মোর পাওয়ার পাখিরে ক্ষণে ক্ষণে । সহসা স্বপন টুটে তাই সে যে গেয়ে উঠে কিছু তার বুঝি নাহি বুঝি । তাই সে যে পাখা মেলে। উড়ে যায় ঘর ফেলে, ফিরে আসে কারে খুঁজি খুঁজি । ওগো মোর না-পাওয়া গো, সায়াহ্নের করুণ কিরণে পূরবীতে ডাক দাও আমার পাওয়ারে ক্ষণে ক্ষণে । হিয়া তাই ওঠে কেঁদে, রাখিতে পারি না বেঁধে, অকারণে দূরে থাকে চেয়ে— মলিন আকাশতলে যেন কোন খেয়া চলে, কে যে যায় সারিগান গেয়ে ।