পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SV8 রবীন্দ্র-রচনাবলী সঞ্জীবের প্রবেশ সঞ্জীব । তাই তো শুনেছি। কিন্তু কে এসে খবর দিলে বলো তো । পঞ্চক । কে দিলে তা তো কেউ বলে না | সঞ্জীব । কিন্তু গুরু আসছেন বলে তুমি তো তৈরি হচ্ছে না। পঞ্চক ? পঞ্চক । বাঃ, সেইজন্যেই তো পুঁথিপত্র সব ফেলে দিয়েছি। সঞ্জীব । সেই বুঝি তোমার তৈরি হওয়া ? পঞ্চক । আরে, গুরু যখন না থাকেন তখনই পুঁথিপত্র । গুরু যখন আসবেন তখন ঐ-সব জঞ্জাল সরিয়ে দিয়ে সময় খোলসা করতে হবে । আমি সেই পুঁথি বন্ধ করবার কাজে ভয়ানক বান্ত । সঞ্জীব । তাই তো দেখছি । {{প্রস্তান পঞ্চক | 5R ফিরি। আমি উদাস প্রাণে, তাকাই সবার মুখের পানে, তোমার মতো এমন টানে কেউ তো টানে না । ওহে জয়োত্তম, তুমি কাধে কিসের বোঝা নিয়ে চলেছ ? বোঝা ফেলো । গুরু আসছেন যে | জয়োত্তম । আরে ছুয়ো না ; এ-সব মঙ্গল্য ! গুরুর জন্যে সিংহদ্বার সাজাতে চলেছি। পঞ্চক । গুরু কোন দ্বার দিয়ে ঢুকবেন তা জানবে কী করে ? জয়োত্তম । তা তো বটেই। আচলায়তনে জািনবার লোক কেবল তুমিই আছ । পঞ্চক | তোমরাও জান না, আমিও জানি নে— তফাতটা এই যে, তোমরা বোঝা বয়ে মর, আমি হালকা হয়ে বসে আছি । জয়োত্তম । আচ্ছা, এখন পথ ছাড়ো, আমার সময় নেই । পঞ্চক | 5R বেজে ওঠে। পঞ্চমে স্বর, কেঁপে ওঠে বন্ধ এ ঘর, মহাপঞ্চকের প্রবেশ মহাপঞ্চক । গান ! অচলায়তনে গান ! মতিভ্রম হয়েছে ! পঞ্চক ৷ এবার দাদা, স্বয়ং তোমাকেও গান ধরতে হবে । একধার থেকে মতিভ্ৰমের পালা আরম্ভ शळा | মহাপঞ্চক । আমি মহাপঞ্চক, গান ধরব ! ঠাট্টা আমার সঙ্গে ! পঞ্চক । ঠাট্ট নয়। অচলায়তনে এবার মন্ত্র ঘুচে গান আরম্ভ হবে । এই বোবা পাথরগুলো থেকে সুর বেরোবে। মহাপঞ্চক । কেন বলে তো ? পঞ্চক । গুরু আসছেন যে ! তাই আমার কেবলই মন্তরে ভুল হচ্ছে। মহাপঞ্চক । গুরু এলে তোমার জন্যে লজ্জায় মুখ দেখাতে পারব না। পঞ্চক । তার জন্যে ভাবনা কী ? নির্লজ্জ হয়ে একলা আমিই মুখ দেখাব ৷ মহাপঞ্চক | মস্তরে ভুল হলে গুরু তোমাকে আয়তন থেকে দূর করে দেবেন। পঞ্চক । সেই ভরসাতেই তার জন্যে অপেক্ষা করে আছি । মহাপঞ্চক । অমিতাযুদ্ধািরণী মন্ত্রটা— পঞ্চক । সেই মন্ত্রটা স্বয়ং গুরুর কাছ থেকে শিখব বলেই তো আগাগোড়া ভোলবার চেষ্টায় আছি ! সেইজন্যেই গান ধরেছি। দাদা | [প্ৰস্থান