পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩৮ রবীন্দ্র-রচনাবলী উপাচার্য। না, আচাৰ্যদেব, এমন কথা বলবেন না। আমরা কঠোর নিয়ম সমস্তই নিঃশেষে পালন कीछि— (कान्ा ऊरैि घाp नि | আচার্য। কঠোর নিয়ম ? ইয়া, সমস্তই পালিত হয়েছে। উপাচার্য। বজশুদ্ধিব্ৰত আমাদের আয়তনে এইবার নিয়ে ঠিক সাতত্তর বার পূর্ণ হয়েছে। আর কোনো আয়তনে এ কি সম্ভবপর হয় ! আচার্য। না, আর কোথাও হতে পারে না | উপাচার্য। কিন্তু তবু আপনার মনে এমন দ্বিধা হচ্ছে কেন ? আচার্য। সুতসোম, তোমার মনে কি তুমি শান্তি পেয়েছ ? উপাচার্য। আমার তো একমুহূর্তের জন্যে অশান্তি নেই। আচাৰ্য । অশান্তি নেই ?, উপাচার্য। কিছুমাত্র না। আমার অহােরাত্র একেবারে নিয়মে বাধা । এর চেয়ে আর শান্তি কী হতে পারে ? ی۔ আচার্য। ঠিক, ঠিক- ঠিক বলেছ। সূতসোম। অচেনার মধ্যে গিয়ে কোথায় তার অন্ত পাব ? এখানে সমস্তই জানা, সমস্তই অভ্যস্ত— এখানকার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর এখানকারই সমস্ত শাস্ত্রের ভিতর থেকে পাওয়া যায়- তার জন্যে একটুও বাইরে যাবার দরকার হয় না । এই তো, নিশ্চল भछि ! উপাচার্য । আচাৰ্যদেব, আপনাকে এমন বিচলিত হতে কখনো দেখি নি । আচার্য। কী জানি, আমার কেমন মনে হচ্ছে, কেবল একলা আমিই না, চারি দিকে সমস্তই বিচলিত হয়ে উঠছে । আমার মনে হচ্ছে, আমাদের এখানকার দেয়ালের প্রত্যেক পাথরটা পর্যন্ত বিচলিত । তুমি এটা অনুভব করতে পারছি না। সূতসোম ? উপাচার্য। কিছুমাত্র না। এখানকার অটল স্তব্ধতার লেশমাত্র বিচূতি দেখতে পাচ্ছি নে। আমাদের তো বিচলিত হবার কথাও না। আমাদের সমস্ত শিক্ষা কোন কালে সমাধা হয়ে গেছে। আমাদের সমস্ত লাভ সমাপ্ত, সমস্ত সঞ্চয় পর্যাপ্ত | ঐ-যে পঞ্চক আসছে। পাথরের মধ্যে কি ঘাস বেরোয় % এমন ছেলে আমাদের আয়তনে কী করে সম্ভব হল !! ঐ আমাদের দুর্লক্ষণ | এই আয়তনের মধ্যে ও কেবল আপনাকেই মানে। আপনি ওকে একটু ভৎসনা করে দেবেন। আচার্য । আচ্ছা তুমি যাও । আমি ওর সঙ্গে একটু নিভৃতে কথা কয়ে দেখি । [উপাচার্যের প্রস্থান পঞ্চকের প্রবেশ আচার্য । (পঞ্চকের গায়ে হাত দিয়া) বৎস পঞ্চক ! পঞ্চক । করলেন কী ! আমাকে ছুলেন ? আচার্য । কেন, বাধা কী আছে ? পঞ্চক । আমি যে আচার রক্ষা করতে পারি নি । আচার্য। কেন পার নি। বৎস ? পঞ্চক ৷ প্ৰভু, কেন, তা আমি বলতে পারি নে। আমার পারবার উপায় নেই। আচার্য। সৌম্য, তুমি তো জান, এখানকার যে নিয়ম সেই নিয়মকে আশ্রয় করে হাজার বছর হাজার হাজার লোক নিশ্চিন্ত আছে। আমরা যে খুশি তাকে কি ভাঙতে পারি ? পঞ্চক । আচার্যদেব, যে-নিয়ম সত্য তাকে ভাঙতে না দিলে তার যে পরীক্ষা হয় না । তাই কি ঠিক N আচার্য। যাও বৎস, তোমার পথে তুমি যাও । আমাকে কোনো কথা জিজ্ঞাসা কোরো না | পঞ্চক । আচার্যদেব, আপনি জানেন না। কিন্তু আপনিই আমাকে নিয়মের চাকার নীচে থেকে টেনে নিয়েছেন ।