পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&(V রবীন্দ্র-রচনাবলী মহাপঞ্চক। কেন তুমি আমাদের প্রাচীর ভেঙে দিয়ে এলে ? দাদাঠাকুর । তুমি কোথাও তোমার শুরুর প্রবেশের পথ রােখ নি । মহাপঞ্চক । তুমি কি মনে করেছ তুমি অস্ত্ৰ হাতে করে এসেছ বলে আমি তোমার কাছে তাৰ ୪୩ଏ ? দাদাঠাকুর । না, এখনই না। কিন্তু দিনে দিনে হার মানতে হবে, পদে পদে । মহাপঞ্চক । আমাকে নিরস্ত্র দেখে ভাবছ। আমি তোমাকে আঘাত করতে পারি। নে ? দাদাঠাকুর । আঘাত করতে পাের। কিন্তু আহত করতে পার না— আমি যে তোমার গুরু মহাপঞ্চক । উপাধ্যায়, তোমরা একে প্ৰণাম করবে নাকি ? উপাধ্যায় । দয়া করে উনি যদি আমাদের প্রণাম গ্রহণ করেন তা হলে প্ৰণাম করব বৈকি- ত' নইলে যে মহাপঞ্চক | না, আমি তোমাকে প্ৰণাম করব না । দাদাঠাকুর । আমি তোমার প্রণাম গ্রহণ করব না- আমি তোমাকে প্রণত করব । মহাপঞ্চক। তুমি আমাদের পূজা নিতে আস নি ? দাদাঠাকুর । আমি তোমাদের পূজা নিতে আসি নি, অপমান নিতে এসেছি। মহাপঞ্চক । তোমার পশ্চাতে অস্ত্ৰধারী এ কারা ? দাদাঠাকুর । এরা আমার অনুবতী— এরা যুনিক । जकल । शूनक ! মহাপঞ্চক। এরাই তোমার অনুবতী ? দাদাঠাকুর । হাঁ । মহাপঞ্চক । এই মন্ত্রহীন কর্মকাণ্ডহীন স্নেচ্ছদল ! আমি এই আয়তনের আচাৰ্য্য— আমি তোমাকে আদেশ করছি তুমি এখনই ঐ স্নেচ্ছদলকে সঙ্গে নিয়ে বাহির হয়ে যাও । দাদাঠাকুর । আমি যাকে আচার্য নিযুক্ত করব সেই আচার্য ; আমি যা আদেশ করব সেই আদেশ । মহাপঞ্চক । উপাধ্যায়, আমরা এমন করে দাড়িয়ে থাকলে চলবে না | এসো আমরা এদের এখান থেকে বাহির করে দিয়ে আমাদের আয়তনের সমস্ত দরজাগুলো আবার একবার দ্বিগুণ দৃঢ় করে বন্ধ করি । উপাধ্যায় । এরাই আমাদের বাহির করে দেবে, সেই সম্ভাবনাটাই প্রবল বলে বোধ হচ্ছে । প্রথম যুনিক । অচলায়তনের দরজার কথা বলছ— সে আরো আকাশের সঙ্গে দিব্যি সমান করে দিয়েছি । উপাধ্যায়। বেশ করেছ ভাই। আমাদের ভারি অসুবিধা হচ্ছিল। এত তালাচাবির ভাবনাও ভাবতে 55 | মহাপঞ্চক। পাথরের প্রাচীর তোমরা ভাঙতে পাের, লোহার দরজা তোমরা খুলতে পাের, কিন্তু আমি আমার ইন্দ্ৰিয়ের সমস্ত দ্বার রোধ করে এই বসলুম— যদি প্রয়োপবেশনে মারি তবু তোমাদের হাওয়া তোমাদের আলো লেশমাত্র আমাকে স্পর্শ করতে দেব না | প্রথম যুনক। এ পাগলটা কোথাকার রে । এই তলোয়ারের ডগা দিয়ে ওর মাথার খুলিটা ফ’ক করে দিলে ওর বুদ্ধিতে একটু হাওয়া লাগতে পারে। মহাপঞ্চক । কিসের ভয় দেখাও আমায় । তোমরা মেরে ফেলতে পাের, তার বেশি ক্ষমতা তোমাদের নেই | প্রথম যুনিক । ঠাকুর, এই লোকটাকে বন্দী করে নিয়ে যাই— আমাদের দেশের লোকের ভারি মজা লাগবে । দাদাঠাকুর । ওকে বন্দী করবে তোমরা ? এমন কী বন্ধন তোমাদের হাতে আছে। দ্বিতীয় যুনক। ওকে কি কোনো শাস্তিই দেব না ?