পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S by যখন বাহির হল শেষে সবাই বললে এসে“তাই না শাস্ত্রে করে মানা দুধে কলায় পুষতে সাপের ছানা । ছেলেমানুষ, দোষ কী ওদের, মা আছে। এর তলে । কানাই বলাই জ্বলে ওঠে। প্ৰলয়বহ্নিপ্রায়, খুনো খুনি করতে ছুটে যায় । মা বললেন, “আছেন। ভগবান, নিদোষীদের অপমানে তারি অপমান ।” ঘোড়ার সহিস বেহারিা চাপরাসি । অপমানের তীব্র আলোক জেলে মাকে নিয়ে দুটি ছেলে পার হল ঘোর দুঃখদশা চলে চলে কঠিন কঁাটার পথে । কানাই বলাই মস্ত উকিল বড়ো আদালতে । মনের মতো বউ এসেছে, একটি-দুটি আসছে নাতনী নাতি জুটল মেলা সুখের দিনের সাথি । মা বললেন, “মিটবে এবার চিরদিনের আশ— মারার আগে করব কাশীবাস ।” অবশেষে একদা আশ্বিনে মনের মতো বাড়ি দেখে দুই ভাইয়েতে মাকে নিয়ে তীর্থে এল রেখে । বছরখানেক না পেরোতেই শ্রাবণ মাসের শেষে হঠাৎ কখন মা ফিরলেন দেশে । বাড়িসুদ্ধ অবাক সবাই— মা বললেন, “তোরা আমার ছেলে তোদের এমন বুদ্ধি হল, অপূর্বকে পুরতে দিবি জেলে ?” তোমার অপমানের জ্বালা মনের মধ্যে নিত্য আছে জ্বলেই । মিথ্যে চুরির দাগ দিয়ে সবার চােখের পরে সেই কথাটা এ জীবনে ভুলি যদি তবে মহাপাতক হবে ।” মা বললেন, “ভুলবি কেন । মনে যদি থাকে তাহার তাপ তা হলে কি তেমন ভীষণ অপমানের চাপ চাপানো যায় আর কাহারো ’পরে বাইরে কিংবা ঘরে ।