পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

༄ ཊི་ রবীন্দ্র-রচনাবলী কিমাশ্চর্যমতঃপরং, বাপের সাধন-জোরে আশীর্বাদের প্রথম অংশ দু-মাস যেতেই ফলাল কেমন করে পঞ্চাননকে ধরলে এসে যমে ; কিন্তু মেয়ের কপালক্রমে ফলল। না তার শেষের দিকটা, দিলে না যম ফিরে ; মঞ্জলিকা বাপের ঘরে ফিরে এল সিঁদুর মুছে শিরে । দুঃখে সুখে দিন হয়ে যায়। গত স্রোতের জলে ঝরে-পড়া ভেসে-যাওয়া ফুলের মতো, অবশেষে হল। মঞ্জলিকার বয়স ভরা ষোলো । কখন শিশুকালে প্ৰাণের গোপন রহস্যতল ফুড়ি ; শুধায় নি। তার নাম কোনোদিন বাহির হতে খেপা বাতাস এসে, সেই কুঁড়ি আজ অন্তরে তার উঠছে ফুটে মধুর রসে ভরে উঠে । সে যে প্রেমের ফুল আপন রাঙা পাপড়ি-ভারে আপনি সমাকুল । আপনাকে তার চিনতে যে আর নাইকো বাকি, চমকে ওঠে নিজের পানে চেয়ে । আকাশপারের বাণী তারে ডাক দিয়ে যায় আলোর ঝরনা বেয়ে ; রাতের অন্ধকারে ন অসীমের রোদন ভরা বেদন লাগে তারে । বাহির হতে তার ঘুচে গেছে সকল অলংকার ; অন্তর তার রাঙিয়ে ওঠে স্তরে স্তরে, তাই দেখে সে আপনি ভেবে মরে । কখন কাজের ফাকে জানলা ধরে চুপ করে সে বাইরে চেয়ে থাকে— যেখানে ওই শজনে গাছের ফুলের ঝুরি বেড়ার গায়ে আকাশটারে পাগল করে দিবস-রতি | যে ছিল তার ছেলেবেলার খেলাঘরের সাথি। আজি সে কেমন করে জলস্থলের হৃদয়খনি দিল ভরে । অরাপ হয়ে সে যেন আজ সকল রূপে রূপে মিশিয়ে গেল চুপে চুপে ।