পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুক্তধারা V8S ভাই ? সে বললে, ‘যে-সব পথ এখনো কাটা হয় নি। ঐ দুৰ্গম পাহাড়ের উপর দিয়ে সেই ভাবীকালের পথ দেখতে পাচ্ছি— দূরকে নিকট করবার পথ।” শুনে তখনই মনে হল, মুক্তধারার উৎসের কাছে কোন ঘরছাড়া মা ওকে জন্ম দিয়ে গেছে, ওকে ধরে রাখবে কে ? আর থাকতে পারলুম না, ওকে বললুম, “ভাই, তোমার জন্মক্ষণে গিরিরাজ তোমাকে পথে অভ্যর্থনা করেছেন, ঘরের শঙ্খ তোমাকে ঘরে ডাকে নি ।” রণজিৎ । এতক্ষণে বুঝলুম | বিশ্বজিৎ । কী বুঝলে ? রণজিৎ | এই কথা শুনেই উত্তরকুটের রাজগৃহ থেকে অভিজিতের মমতা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেইটেই স্পর্ধা করে দেখাবার জন্যে নন্দিসংকটের পথ সে খুলে দিয়েছে। বিশ্বজিৎ । ক্ষতি কী হয়েছে ? যে পথ খুলে যায় সে পথ সকলেরই— যেমন উত্তরকুটের তেমনি শিবতারাইয়ের । রণজিৎ । খুড়া মহারাজ, তুমি আত্মীয়, গুরুজন, তাই এতকাল ধৈর্য রেখেছি। কিন্তু আর নয়, স্বজনবিদ্রোহী তুমি, এ রাজ্য ত্যাগ করে যাও । বিশ্বজিৎ । আমি ত্যাগ করতে পারব না । তোমরা আমাকে ত্যাগ যদি কর তবে সহ্য করব । [ প্ৰস্থান অম্বার প্রবেশ অম্বা | (রাজার প্রতি) ওগো তোমরা কে ? সূর্য তো অস্ত যায়— আমার সুমন তো এখনো ফিরল রণজিৎ । তুমি কে ? অম্বা | আমি কেউ না । যে আমার সব ছিল তাকে এই পথ দিয়ে নিয়ে গেল । এ পথের শেষ কি নেই ? সুমন কি তবে এখনাে চলেছে, কেবলই চলেছে, পশ্চিমে গৌরীশিখর পেরিয়ে যেখানে সূর্য ডুব।ছে, আলো ডুবিছে, সব ডুবছে ? রণজিৎ । মন্ত্রী, এ বুঝি— মন্ত্রী । হা মহারাজ, সেই বাধ বাধার কাজেই— - রণজিৎ । (অম্বাকে) তুমি খেদ কোরো না । আমি জানি পৃথিবীতে সকলের চেয়ে চরম যে দান তোমার ছেলে আজ তাই পেয়েছে । অম্বা । তাই যদি সত্যি হবে তা হলে সে-দান সন্ধেবেলায় সে আমার হাতে এনে দিত, আমি যে তার মা | - রণজিৎ । দেবে এনে । সেই সন্ধে এখনো আসে নি । অম্বা | তোমার কথা সত্যি হােক বাবা । ভৈরবমন্দিরের পথে পথে আমি তার জন্যে অপেক্ষা করব । সুমন ! [প্ৰস্থান একদল ছাত্র লইয়া অদূরে গাছের তলায় উত্তরকুটের গুরুমশায় প্রবেশ করিল গুরু ; খেলে, খেলে, বেত খেলে দেখছি। খুব গলা ছেড়ে বল, জয় রাজরাজেশ্বর। ছাত্ৰগণ । জয় রাজরাগুরু । (হাতের কাছে দুই-একটা ছেলেকে থাবড়া মারিয়া)— জেশ্বর } ছাত্ৰগণ । জেশ্বর | @夺1通甜通甜画一 ছাত্ৰগণ । শ্ৰী শ্ৰী শ্ৰী গুরু । (ঠেলা মারিয়া) পাচবার ।