পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পলাতকা ফেলাছড়া-ভাঙাচোরার ‘পর আমার প্রাণের চির-বালক নতুন করে বাধল। খেলাঘর বয়সের এই দুয়ার পেয়ে খোলা । আবার বক্ষে লাগিয়ে দোলা এল তার দীেরাত্ম্য নিয়ে এই ভুবনের চিরকালের ভোলা । ছিন্ন পত্ৰ কর্ম যখন দেবতা হয়ে জুড়ে বসে পূজার বেদী, মন্দিরে তার পাষাণ-প্ৰাচীর অভ্ৰভেদী চতুর্দিকেই থাকে ঘিরে ; তারই মধ্যে জীবন যখন শুকিয়ে আসে ধীরে ধীরে, পায় না। আলো, পায় না বাতাস, পায় না ফাকা, পায় না কোনো রস কেবল টাকা, কেবল সে পায় যশ, তখন সে কোন মোহের পাকে মরণ-দশা ঘটেছে তার, সেই কথাটাই ভুলে থাকে । বৃহৎ সর্বনাশে হারিয়েছিলেম বিশ্বজগৎখানি নীল আকাশের সোনার বাণী সকাল-সাঝের বীণার তারে পৌছোেত না মোর বাতায়ন-দ্বারে । ঋতুর পরে আসত ঋতু শুধু কেবল পঞ্জিকারই পাতে, আমার আঙিনাতে আনত না তার রঙিন পাতার ফুলের নিমন্ত্রণ | অন্তরে মোর লুকিয়ে ছিল কী যে সে ক্ৰন্দন জানব এমন পাই নি অবকাশ । প্ৰাণের উপবাস সংগোপনে বহন করে কর্মরথে সমারোহে চলতেছিলেম নিম্বফলতার মরুপথে । তিনটে চারটে সভা ছিল জুড়ে আমার কঁধ ; দৈনিকে আর সাপ্তাহিকে ছাড়তে হত নকল সিংহনাদ ; বীডন কুঞ্জে মীটিং হলে আমি হতেম বক্তা ; রিপোর্ট লিখতে হত তক্তা তক্তা ; যুদ্ধ হত। সেনেট-সিন্ডিকেটে, তার উপরে আপিস আছে, এমনি করে কেবল খেটে খেটে দিনরাত্ৰি যেত কোথায় দিয়ে । বন্ধুরা সব বলত, “করছি কী এ |