পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পলাতকা কাগজপত্ৰে চলল। গালাগালি । কাজের মাঝে অনেকটা ফাক হঠাৎ পড়ল। হাতে, এমন সময় হঠাৎ দখিন-পবন ভরে ছেড়া চিঠির টুকরো এসে পড়ল আমার কোলের পরে । অন্যমনে হাতে তুলে ד এই কথাটা পড়ল চোখে, “মনুরো কি গেছ এখন ভুলে ।” মনু ? আমার মনোরমা ? ছেলেবেলার সেই মনু কি এই ! অমনি হঠাৎ এক নিমেষেই সকল শূন্য ভ’রে, হারিয়ে-যাওয়া বসন্ত মোর বন্যা হয়ে ডুবিয়ে দিল মোরে । পায়ে পায়ে বাজাত মল রিনিঝিনি । সেই তো আমার এই জনমের ভোর-গগনের তারা অসীম হতে এসেছে পথহারা ; সেই তো আমার শিশুকালের শিউলি ফুলের কোলে শুভ্ৰ শিশির দোলে ; ; সেই তো আমার মুগ্ধ চোখের প্রথম আলো, এই ভুবনের সকল ভালোর প্রথম ভালো । মনে পড়ে, ঘুমের থেকে যেমনি জেগে ওঠা অমনি ওদের বাড়ির পানে ছোট । ওরই সঙ্গে শুরু হত দিনের প্রথম খেলা ; সেই আনন্দমূর্তিখানি, স্নিগ্ধ ডাগর আঁখি, কণ্ঠ তাহার সুধায় মাখামাখি । অসীম ধৈর্যে সইত সে মোর হাজার অত্যাচার সকল কথায় মানত মনু হার । উঠে। গাছের আগডালেতে দোলা খেতেম। জোরে, ভয় দেখাতেম পড়ি-পড়ি ক’রে, কঁদো-কাদো কণ্ঠে তাহার করুণ মিনতি সে, ভুলতে পারি কি সে । মনে পড়ে, নীরব ব্যথা তার, বাবার কাছে যখন খেতেম। মার ; ফেলেছে সে কত চোখের জল, মোর অপরাধ ঢাকা দিতে খুঁজত কত ছল । আরো কিছু বড়ো হলে আমার কাছে নিত সে তার বাংলা পড়া বলে । \S)*