পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ܛܔ 8 রবীন্দ্র-রচনাবলী পাহাড়গুলো মরে যাওয়া শুয়োপোকার মতো, নদীগুলো যত আচল রেখার মিথ্যা কথায় অবাক হয়ে রইত থিতামত সাগরগুলো ফাকা, । দেশগুলো সব জীবনশূন্য কালো-আখার-আঁকা । হাপিয়ে উঠত। পরান আমার ধরণীর এই শিকল রেখার রূপে আমি চুপে চুপে মেঝের 'পরে বসে যেতেম। ওই জানলার পাশে । ওই যেখানে শুকনো জমি শুকনো শীর্ণ ঘাসে পড়ে আছে এলোথোলো, তাকিয়ে ওরই পানে কার সাথে মোর মনের কথা চািলত কানে কানে । ওই যেখানে ছাইয়ের গাদা আছে বসুন্ধরা দাড়িয়ে হােথায় দেখা দিতেন এই ছেলেটির কাছে ।

  • মাথার পরে উদার নীলাঞ্চল

সোনার আভায় করত। কলমল । সাত সমুদ্র তেরো নদীর সুদূর পারের বাণী আমার কাছে দিতেন আনি ! ম্যাপের সঙ্গে হত না তার মিল, বইয়ের সঙ্গে ঐক্য তাহার ছিল না এক তিল । তার চেহারা নয় তো অমন মস্ত ফাকা আঁচড়–কাটা আখর-আঁকা— নয়। সে তো কোন মাইল-মাপা বিশ্ব, অসীম যে তার দৃশ্য ; আবার অসীম সে অদৃশ্য । এখন আমার বয়স হল ষাট গুরুতর কাজের ঝঞাটি । পাগল করে দিল পলিটিকসে, কোনটা সত্য কোনটা স্বপ্ন আজকে নাগাদ হয় নি জানা ঠিক সে ; ইতিহাসের নজির টেনে সোজা একটা দেশের ঘাড়ে চাপাই আরেক দেশের কর্মফলের বোঝা, মাসিক পত্ৰে প্ৰবন্ধ উন্মত্ত । যত লিখছি কাব্য ততই নোংরা সমালোচন হতেছে অশ্রাব্য । কথায় কেবল কথারই ফল ফলে, আজ আমার এই ষাট বছরের বয়সকালে পুঁথির সৃষ্টি জগৎটার এই বন্দীশালে ইপিয়ে উঠলে প্ৰাণ । পালিয়ে যাবার একটি আছে স্থান