পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

st R নিকেতন ჯგ8* শোক নেই, মলিনতা নেই, যার ভয় নেই, সে উত্তম মঙ্গল পেয়েছে। এতদিসানি কত্বান সকবখমপরাজিত সব্বথ সােথি গচ্ছন্তি তং তেসং মঙ্গলমুক্তমন্ত । এই রকম যারা করেছে, তারা সর্বত্র অপরাজিত, তারা সর্বত্র স্বন্তি লাভ করে, তাদের উত্তম মঙ্গল হয় । যারা বলে ধর্মনীতিই বৌদ্ধধর্মের চরম তারা ঠিক কথা বলে না । মঙ্গল একটা উপায় মাত্র । তবে । নির্বণই চরম ? তা হতে পারে, কিন্তু সেই নির্বাণটি কী ? সে কি শূন্যতা ? যদি শূন্যতাই হত তবে পূর্ণতার দ্বারা তাতে গিয়ে পীেছােনাে যেত না। তবে কেবলই সমস্তকে অস্বীকার করতে-করতে, নয় নয় নয় বলতে-বলতে, একটার পর একটা ত্যাগ করতে-করতেই সেই সর্বশূন্যতার মধ্যে নির্বাপণ লাভ করা যেত । কিন্তু বৌদ্ধধর্মে সে পথের ঠিক উলটা পথ দেখি যে | তাতে কেবল তো মঙ্গল দেখছি নেমঙ্গলের চেয়েও বড়ো জিনিসটি দেখছি যে । মঙ্গলের মধ্যেও একটা প্রয়োজনের ভাব আছে । অর্থাৎ তাতে একটা কোনো ভালো উদ্দেশ্য সাধন করে, কোনো একটা সুখ হয় বা সুযোগ হয় | কিন্তু প্রেম যে সকল প্রয়োজনের বাড়া । কারণ প্রেম হচ্ছে স্বতই আনন্দ, স্বতই পূর্ণতা, সে কিছুই নেওয়ার অপেক্ষা করে না, সে যে কেবলই দেওয়া । যে দেওয়ার মধ্যে কোনো নেওয়ার সম্বন্ধ নেই সেইটেই হচ্ছে শেষের কথা— সেইটেই ব্ৰহ্মের স্বরূপ— তিনি নেন না । a এই প্রেমের ভাবে, এই আদানবিহীন প্রদানের ভাবে আত্মাকে ক্রমশ পরিপূর্ণ করে তোেলবার জন্যে বুদ্ধদেবের উপদেশ আছে, তিনি তার সাধনপ্রণালীও বলে দিয়েছেন । এ তো বাসনা-সংহরণের প্রণালী নয়, এ তো বিশ্ব হতে বিমুখ হবার প্রণালী নয়, এ যে সকলের অভিমুখে আত্মকে ব্যাপ্ত করবার পদ্ধতি। এই প্রণালীর নাম মেত্তিভাবনা— মৈত্রীভাবনা। প্রতিদিন এই কথা ভাবতে হবে।-- 缺 সব্বে সত্তা সুখত হােন্তু, অবেরা হােন্তু, অব্যাপজব্বা হােন্তু, সুখী আত্তানং পরিহরস্তু ; সব্বে সত্তা মা যথালব্ধসম্পত্তিতে বিগচ্ছন্তু । সকল প্রাণী সুখিত হােক, শত্রুহীন হােক, সুখী অহিংসিত হােক, সুখী আত্মা হয়ে কালাহরণ করুক। সকল প্রাণী। আপনি যথালব্ধ সম্পত্তি হতে বঞ্চিত না হোক । মনে ক্ৰোধ দ্বেষ লোভ ঈর্ষা থাকলে এই মৈত্রীভাবনা সত্য হয় না— এইজন্য শীলগ্রহণ শীলসাধন প্রয়োজন । কিন্তু শীলসাধনার পরিণাম হচ্ছে সর্বত্র মৈত্রীকে দয়াকে বাধাহীন করে বিস্তার। এই উপায়েই আত্মাকে সকলের মধ্যে উপলব্ধি করা সম্ভব হয় । এই মৈত্রীভাবনার দ্বারা আত্মাকে সকলের মধ্যে প্রসারিত করা এ তো শূন্যতার পন্থা নয়। তা যে নয় তা বুদ্ধ যাকে ব্রহ্মবিহার বলছেন তা অনুশীলন করলেই বােঝা যাবে। করণীয় মাথ কুসলেন যন্তং সন্তং পদং অভিসমোচ্চ সক্কো উজু চ সুহুজু চ, সুবচো চসস মৃদু অনতিমানী । শান্তপদ লাভ করে পরমাৰ্থকুশল ব্যক্তির যা করণীয় তা এই—তিনি শক্তিমান, সরল, অতি সরল, সুভাষী, মৃদু, নম্র এবং অনভিমানী হবেন। সন্তুসসকো চ সুভবো চ অপপকিচে ১ সাল্লহুকবৃত্তি