পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

と? の রবীন্দ্র-রচনাবলী পূর্ণতা আর এক মহাপুরুষ যিনি তাঁর পিতার মহিমা প্রচার করতে জগতে এসেছিলেন, তিনি বলেছেন। তোমার পিতা যেরকম সম্পূর্ণ তুমি তেমনি সম্পূর্ণ হও এ কথাটিও ছোটাে কথা নয় । মানবাত্মার সম্পূর্ণতার আদর্শকে তিনি পরমাত্মার মধ্যে স্থাপন করে সেই দিকেই আমাদের লক্ষ স্থির করতে বলেছেন । সেই সম্পূর্ণতার মধ্যেই আমাদের ব্ৰহ্মবিহার, কোনো ক্ষুদ্র সীমার মধ্যে নয় । পিতা যেমন সম্পূর্ণ, পুত্র তেমনি সম্পূর্ণ হতে নিয়ত চেষ্টা করবে। এ না হলে পিতাপুত্রে সত্যযোগ হবে কেমন করে । এই সম্পূর্ণতার যে একটি লক্ষণ নির্দেশ করেছেন সেও বড়ো কম নয় । যেমন বলেছেন, তোমার প্রতিবেশীকে তোমার আপনার মতো ভালোবাসো ! কথাটাকে লেশমাত্র খাটাে করে বলেন নি । বলেন নি যে প্রতিবেশীকে ভালোবাসো ; বলেছেন প্রতিবেশীকে আপনারই মতো ভালোবাসো | যিনি ব্ৰহ্মবিহার কামনা করেন তাকে এই ভালোবাসায় গিয়ে পৌছোতে হবে- এই পথেই তাকে চলা চাই । ভগবান যিশু বলেছেন, শক্রকেও প্রীতি করবে । শত্রুকে ক্ষমা করবে বলে ভয়ে ভয়ে মাঝপথে থেমে যান নি । শত্রুকে প্রীতি করবে বলে তিনি “ব্রহ্মবিহার পর্যন্ত লক্ষকে টেনে নিয়ে গিয়েছেন । বলেছেন, যে তোমার গায়ের জামা কেড়ে নেয় তাকে তোমার উত্তরীয় পর্যন্ত দান করে । সংসারী লোকের পক্ষে এগুলি একেবারে অত্যুক্তি । তার কারণ, সংসারের চেয়ে বড়ো লক্ষ্যকে সে মনের সঙ্গে বিশ্বাস করে না । সংসারকে সে তার জামা ছেড়ে উত্তরীয় পর্যন্ত দিয়ে ফেলতে পারে যদি তাতে তার সাংসারিক প্রয়োজন সিদ্ধ হয় ; কিন্তু ব্ৰহ্মবিহারকে সে যদি প্রয়োজনের চেয়ে ছোটো বলে জানে তবে জমাটুকু দেওয়াও শক্ত হয় । কিন্তু যারা জীবনের কাছে সেই ব্ৰহ্মকে সেই সকলের চেয়ে বড়োকেই ঘোষণা করতে এসেছেন তারা তো সংসারী লোকের দুর্বল বাসনার মাপে ব্ৰহ্মকে অতি ছোটাে করে দেখাতে চান নি। তারা সকলের চেয়ে বড়ো কথাকেই অসংকোচে একেবারে শেষ পর্যন্ত বলেছেন । এই বড়ো কথাকে এত বড়ো করে বলার দরুন তারা আমাদের একটা মস্ত ভরসা দিয়েছেন । এর দ্বারা তারা প্রকাশ করেছেন মনুষ্যত্বের গতি এতদূর পর্যন্তই যায়, তার প্রেম এত বড়োই প্ৰেম, তার ত্যাগ এত বড়োই ত্যাগ । অতএব এই বড়ো লক্ষ্য এবং বড়ো পথে আমাদের হতাশ না করে আমাদের সাহস দেবে । নিজের অন্তরতর মাহায্যের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাকে বাড়িয়ে দেবে। আমাদের সমস্ত চেষ্টাকে পূর্ণভাবে উদবােধিত করে তুলবে। লক্ষ্যকে অসত্যের দ্বারা কেটে ক্ষুদ্র করলে, উপায়কে দুর্বলতার দ্বারা বেড়া দিয়ে সংকীর্ণ করলে, তাতে আমাদের ভরসাকে কমিয়ে দেয়- যা আমাদের পাবার তা পাই নে, যা পারবার তা পারি। নে । কিন্তু মহাপুরুষেরা আমাদের কাছে যখন মহৎ লক্ষ্য স্থাপিত করেছেন তখন তারা আমাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন । বুদ্ধ আমাদের কারও প্রতি অশ্রদ্ধা অনুভব করেন নি, যখন তিনি বলেছেনমানসিং ভাবয়ে অপরিমাণং | যিশু আমাদের মধ্যে দীনতমের প্রতিও অশ্রদ্ধা প্ৰকাশ করেন নি যখন তিনি বলেছেন, তোমার পিতা যেমন সম্পূর্ণ তুমি তেমনি সম্পূর্ণ হও । তাদের সেই শ্রদ্ধায় আমরা নিজের প্রতি শ্রদ্ধালাভ করি। তখন আমরা ভূমীকে পাবার এই দুরূহ পথকে অসাধ্য পথ বলি নে— তখন আমরা তাদের কণ্ঠস্বর লক্ষ্য করে তাদের মাভৈঃ বাণী অনুসরণ করে এই অপরিমাণের মহাযাত্রায় আনন্দের সঙ্গে যাত্ৰা করি । যিশুর বাণী অত্যুক্তি নয়। যদি শ্রেয় চাও তবে এই সম্পূর্ণসত্যের সম্পূর্ণতাই শ্রদ্ধার সহিত গ্রহণ করে । মানুষের সঙ্গেও যখন মিলতে যাচ্ছি তখন কত জায়গায় বেধে যাচ্ছে । তার সঙ্গে মিল সম্পূৰ্ণ হচ্ছে uu S BBBSBBS S JS DSDSSS DBDBBSDSDSD SBDBSBSBD BBDBS uBuBB BB BDBBD