পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা রমেশচন্দ্রের রচনাবলীর প্রতি শিক্ষিত বাঙ্গালী মাত্রেরই একটি আকর্ষণ রহিয়াছে। ইহার কারণ বিশ্লেষণ করার স্থান এ নয়। তবে একটি কথা আমাদের বরাবরই মনে হইয়াছে। তাহা হইল —সবদেশের শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির প্রতি রমেশচন্দ্রের ঐকান্তিক অনুরাগ। স্বদেশের সব্বাবিধ উন্নতিই ছিল তাঁহার আন্তরিক লক্ষ্য। আমরা যাহাকে Patriotism বা সবদেশপ্রেম বলি তাহা তাঁহার ভিতরে বিশেষভাবে ছিল, আর তাঁহার ইংরেজী বাঙ্গালা সকল রকম রচনার মধ্যে এই স্বদেশপ্রেম বিধত। তাই বলিয়া তিনি সংস্কারকে যুক্তির উপরে কখনও জ্ঞাতসারে স্থান দেন নাই। এককথায় বলিতে গেলে রমেশচন্দ্রের সবদেশপ্রেম ছিল বাস্তবধমী এবং | যুক্তিনিঠে। বত্তমান সংস্করণে রমেশচন্দ্রের উপন্যাস ক’খানি সন্নিবেশিত হইল। ইহার মধ্যেও পাঠক ঐ একই ধারা লক্ষ্য করিবেন । রমেশচন্দ্রের জীবিতকালে তাঁহার ছয়খানি উপন্যাস লইয়া হিতবাদী সংস্করণ প্রকাশিত হয় (১৯০৫)। এই পুস্তকে ঐ সংস্করণই অনসত হইয়াছে। হিতবাদী সংস্করণে স্থানে স্থানে মদ্রোকরপ্রমাদ ঘটিয়াছে। বর্ণাশুদ্ধি একই শব্দের বিভিন্ন রকম বানান, বিরতি চিহ্নের অসমতা প্রভৃতি দন্ট হইয়াছে। এই সকল সংশোধন পবেক প্রত্যেকখানি উপন্যাসকেই একটি সসমঞ্জস রপে দিতে প্রয়াস পাইয়াছি। রমেশচন্দুের পঞ্চম উপন্যাস— সংসার’ মৃত্যুর পরে তিনি ঢালিয়া সাজিয়া সংসার-কথা নামে প্রকাশের উদ্যোগ করিয়াছিলেন। তাঁহার মৃত্যুর অলপকাল পরে এখনি মদ্রাঙ্কিত হয়। তিনি এই প্রকারে অন্যান্য উপন্যাসগুলিরও সংস্কার সাধনের মানস করিয়াছিলেন। আমরা এখানে তাঁহার রচনা ও চিন্তাধারার ক্রমিক বিকাশ সংরক্ষণের নিমিত্ত মলে সংসারই প্রকাশিত করিলাম। পাঠক সাধারণের অভীপ্সা পরণের নিমিত্ত পরবত্তী সংস্করণে ‘সংসার-কথা প্রকাশেরও বাসনা আমাদের রহিল। এই রচনাবলীতে দুইটি অধ্যায়ে রমেশচন্দ্রের জীবনকথা এবং সাহিত্য সাধনার বিষয় আলোচনা করিতে যত্ন লইয়াছি। রমেশচন্দ্র সম্বন্ধে তথ্য আহরণ করিতে হইলে তাঁহার সংরক্ষিত "Paper-Cuttings" পাঠ একান্ত আবশ্যক। তিনি সযত্নে সিবিল সাব্বিাস পরীক্ষাদানের সময় হইতে মৃত্যুর অব্যবহিত পাব পৰ্য্যন্ত নিজের এবং সমসাময়িক জ্ঞাতব্য বিষয়াদি বিভিন্ন দেশী, বিদেশী, ইংরেজী, বাঙ্গালা সংবাদপত্র এবং পত্রিকা হইতে সংগ্ৰহ করিয়া কয়েক খণ্ডে সাজাইয়া রাখিয়া গিয়াছেন। রমেশচন্দ্রের প্রামাণিক ইংরেজী জীবনী—Life and Work of Rome্যb Gbander Datt—তাঁহার জামাতা জ্ঞানেন্দ্রনাথ গুপ্ত লিখিয়া গিয়াছেন (১৯১১)। ব্ৰজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষদের ‘সাহিত্যসাধক চরিতমালার অন্তগত রমেশচন্দু দত্ত লিখিয়াছেন। এসব হইতেও রমেশচন্দ্র সম্পবন্ধে নানা তথ্য মিলিবে । উক্ত অধ্যায় দুইটি রচনায় আমি এই সকল সত্রের বিশেষ সুযোগ গ্রহণ করিয়াছি। সমসাময়িক বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা হইতেও কিছু কিছু অত্যাবশ্যক তথ্য প্রাপ্ত হইয়াছি। বত্তমান সংস্করণকে সমস্ত রপেদানে বহুজনেরই আন্তরিক সহায়তা ও সহানুভূতি পাইয়াছি। প্রথমেই বন্ধবের ঔপন্যাসিক শ্ৰীযুক্ত রামপদ মুখোপাধ্যায়কে সমরণ করি। তিনি পান্ডুলিপি প্রস্তুতিকালে আমাকে বিশেষভাবে সাহায্য করিয়াছেন। শ্ৰীযক্ত পলিনবিহারী সেন, চিত্তরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, গোপিকামোহন ভট্টাচাৰ্য্য, বিমল দেব, গৌতম সেন প্রমুখ সহেদবগ আমাকে