পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমেশ রচনাবলী ಧ್ಧಿ করিবার জন্য মহেশ্বর-মন্দিরে আসিল, পিতা চন্দ্রশেখরের নিকট আসিয়া প্ৰণিপাত | * * যোগিনীবেশধারিণী বিমলার হাত ধরিয়া স্নেহময়ী সরলা ঝর ঝর করিয়া আশ্রজেল ত্যাগ · করিতে লাগিল। চক্ষ মাছিয়া বলিল,—দিদি, আমার কন্টের দিন, বিপদের দিন, তুমিই আমার প্রতি স্নেহ করিয়াছিলে, আজি কি আমি তোমার জন্য কিছু করিতে পারি না ? মায়ার শরীর, কিন্তু আমার এখন কি প্রয়োজন বল ? এই শান্ত আশ্রম অপেক্ষা জগতে কোথায় সুখকর স্থান আছে ? পিতা চন্দ্রশেখর অপেক্ষা স্নেহপরায়ণ সবজন কোথায় পাইব ? দুঃখের হইলে আমি এ জগতে ক্লেশ পাইব না, পরন্তু শাস্তি লাভ করিব। দুই সখীতে অনেক প্রকার কথাবাত্ত" দ্বারা সমস্ত দিন অতিবাহিত করিলেন। আশ্রমের মধ্যে যে যে স্থানে সরলা পাবে পদচারণ করিতে ভালবাসিত, সেই সেই স্থানে প্রিয় সখী বিমলাকে সঙ্গে লইয়া গেল। সন্ধ্যার সময় সরলা বিমলার নিকট বিদায় লইয়া শিবিকা আরোহণ করিল। বিমলা সখীর সঙ্গে সঙ্গে শিবিকা পৰ্য্যস্ত আসিয়া হাসিয়া বলিলেন--সরলা, এখন তুমি রাজরাণী, এখন কি দরিদ্র আশ্রমবাসিনীকে মনে থাকিবে ? সরলা। দিদি, তোমাকে কি আমি ভুলিতে পারি? বিমলা। সরলা, তোমার স্নেহের শরীর, তুমি আমাকে কখনও ভুলিবে না তাহা জানি । তথাপি একটী স্মরণ-চিহ্ন তোমার নিকট রাখিব,—তাহাতে না বলিও না। এই বলিয়া বিমলা কণঠমালা হইতে ধীরে ধীরে একটী সবণের অঙ্গরীয় খসাইয়া সরলার আঙ্গলে পরাইয়া দিলেন। সরলা বিস্মিত হইয়া বলিল,—একি দিদি ? এ যে সবণের অঙ্গরীয় ! এ আমি লইব না। তোমার পৈতৃক সম্পত্তির অবশিষ্ট দই একখানি গহনা যাহা আছে তাহা কি আমি লইতে পারি? সে সমস্ত তোমারই নিকট শোভা পায় । বিমলা একটা হাসিয়া বলিলেন--সরলা, এ অঙ্গরীয় আমার পৈতৃক সম্পত্তি নহে, ইহাতে আমার অধিকার নাই। তুমি ইহার অধিকারিণী, আজীবন এই অঙ্গরীয় ধারণ করিও, জগদীশ্বর তোমাকে সখে রাখনে । সন্ধ্যার ছায়াতে ধীরে ধীরে বিমলা আপন কুটীরাভিমুখে প্রস্থান করিলেন । bミ