পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাধবীকঙ্কণ श्रथभ *ब्रिटश्न ६ बाणकबालिका ALL the world's a stage, And all the men and women merely players; They have their exits and their ČIlts&slCeS. —Shakespeare. ভাগীরথীর পশ্চিম তীরে বীরনগর গ্রামে গ্রীমঋতুর একদিন সায়ংকালে গঙ্গাসৈকতে দইটী বালক ও একটী বালিকা ক্রীড়া করিতেছে। সন্ধ্যার ছায়া ক্রমে গাঢ়তর হইয়া গ্রাম, প্রান্তর ও প্রশস্ত গঙ্গানদী আচ্ছাদন করিতেছে। জলের উপর কয়েকখানি পোত ভাসিতেছে, দিনের পরিশ্রমের পর নাবিকেরা রন্ধনাদিতে ব্যস্ত রহিয়াছে, পোত হইতে দীপালোক নদীর চঞ্চল বক্ষে বড় সন্দের নত্য করিতেছে। বীরনগরের নদীকালস্থ আম্ন-কানন অন্ধকার হইয়া ক্রমে নিস্তব্ধ ভাব ধারণ করিতেছে। কেবল বক্ষের মধ্য হইতে স্থানে স্থানে এক একটী দীপশিখা দেখা যাইতেছে আর সময়ে সময়ে পর্ণকুটীরাবলী হইতে রন্ধনাদি সংসার-কাৰ্য্যসম্ববন্ধীয় কৃষকপত্নীদিগের কন্ঠরব শনা যাইতেছে। কৃষকগণ লাঙ্গল লইয়া ও গরর পাল হামবারব করিতে করিতে সব সব স্থানে প্রত্যাবত্তন করিতেছে। ঘাট হইতে সত্রীলোকেরা একে একে সকলেই কলস লইয়া চলিয়া গিয়াছে, নিস্তব্ধ অন্ধকারে বিশাল শান্ত-প্রবাহিণী ভাগীরথী সমাদের দিকে বহিয়া যাইতেছে। অপর পাশ্বে প্রশস্ত বালকোতট ও অসীম কান্তার অন্ধকারে ঈষৎ দন্ট হইতেছে। গ্রীষ্ম-পীড়িত ক্লান্ত জগৎ সন্নিগ্ধ সায়ংকালে নিস্তব্ধ ও শান্ত। তিনটী বালকবালিকায় ক্রীড়া করিতেছে। বালিকার বয়ঃক্রম নয় বৎসর হইবে, ললাট, বদনমণ্ডল ও গণ্ডস্থল বড় উজ্জল, তাহার উপর নিবিড় কৃষ্ণ কেশগুচ্ছ পড়িয়া বড় সন্দের দেখাইতেছে। হেমলতার নয়নের তারা দটী অতিশয় কৃষ্ণ, অতিশয় উজল; সন্দেরী চঞ্চলা বালিকা পরী-কন্যার মত সেই নৈশ গঙ্গাতীরে খেলা করিতেছে। কনিষ্ঠ বালকটীর বয়ঃক্রম একাদশ বৎসর হইবে, দেখিলেই যেন হেমলতার ভ্রাতা বলিয়া বোধ হয়। মুখমণ্ডল সেইরপে উতজবল, প্রকৃতি সেইরুপ চঞ্চল। কেবল উত্তজবল নয়ন দটীতে পরষোচিত তেজোরাশি লক্ষিত হইত, আর উন্নত প্রশস্ত ললাটে শিরা এই বয়সেই কখন কখন ক্রোধে সফীত হইত। নরেন্দ্রকে দেখিলে তেজস্বী ক্রোধপরবশ বালক বলিয়া বোধ হয়। শ্ৰীশচন্দ্র ত্রয়োদশবষীয় বালক, কিন্তু মনষ্যের গম্ভীর ভাব ও অবিচলিত স্থির বৃদ্ধির চিহ্ন বালকের মুখমণ্ডলে বিরাজ করিত। শ্রীশচন্দ্র বৃদ্ধিমান, শান্ত, গম্ভীরপ্রকৃতি বালক । দাইটী বালকে বাল্যকার গহ-নিন্মাণ করিতেছিল, কাহার ভাল হয় হেমলতা দেখিবে। নরেন্দ্র গহ-নিম্মাণে অধিকতর চতুর কিন্তু চঞ্চল; হেম যখন নিকটে দাঁড়ায় নরেনের ঘর ভাল হয়; আবার হেম শ্রীশের ঘর দেখিতে গেলেই নরেন রাগ করে, বালকাগহ পড়িয়া যায়। মহাবিপদ, দই তিন বার উৎকৃষ্ট ঘর পড়িয়া গেল! হেম এবার আর শ্রীশের নিকট যাবে না, সত্য যাবে না, যথার্থ যাবে না, নরেন আর একবার ঘর কর। নরেন মহা আহাদে চক্ষের জল মলছিয়া ঘর আরম্ভ করিল। ঘর প্রায় সমাধা হইল। হেম ভাবিল, নরেনের ত জয় হইবে, কিন্তু শ্রীশ একাকী আছে, একবার উহার নিকট না যাইলে কি মনে করবে। কেশগুচ্ছগুলি নাচাইতে নাচাইতে উক্তজবল জলহিল্লোলের ন্যায় একবার শ্ৰীশের নিকট গেল। শ্ৰীশ ক্ষিপ্ৰহস্ত নহে, বালকাগহ-নিন্মাণে চতুর নহে, কিন্তু ধৈর্য্য ও বৃদ্ধিবলে একপ্রকার গহ করিয়াছে, বড় ভাল হয় নাই।

  1. రి