পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्ञ* ब्रफ़नाबल" হইবে ? রজনী প্রভাত হইল, প্রথম সৰ্য্যোলোকে হেমলতা চকিত হইয়া উঠিল। চক্ষ কোটরপ্রবিষ্ট, বদনমণ্ডল মলিন, শরীর অবসন্ন। ধীরে ধীরে বালিকা গবাক্ষপাশ্ব হইতে উঠিল, শন্যহৃদয়ে শনাগহে গহকাষে প্রবত্ত হইল। সেই কি এক দিন ? দিনে দিনে, সপ্তাহে সপ্তাহে, মাসে মাসে বালিকা সেই গবাক্ষপাশ্বের্ণ বসিত। যে গঙ্গাতীরে নরেন্দ্র বিদায় লইয়াছে, সেই গঙ্গার দিকে দেখিত। প্রাতঃকালে, মধ্যাহে, সায়ংকালে, গভীর রজনীতে শুন্যহৃদয়া বালিকা সেই গঙ্গার দিকে চাহিয়া থাকিত। কত ভাবিত, কত কথা মনে আসিত কে বলিবে ? একদিন নরেন্দ্রনাথ হেমের কাণে কাণে কি বলিয়াছিল, একদিন ওপার হইতে হেমের জন্য কি আনিয়াছিল, একদিন গাছ হইতে আম পাড়িয়া হেম ও নরেন লুকাইয়া খাইয়াছিল, একদিন পিতাকে না বলিয়া হেম সন্ধ্যার সময় নরেনের সহিত নৌকায় চড়িয়াছিল, একদিন হেম নরেনকে ফলের মালা পরাইয়া দিয়াছিল, একদিন নরেন হেমের কেশে ফলে দিয়া সাজাইয়া দিয়াছিল; সহস্ৰ সহস্ৰ কথা একে একে নদীজলের হিল্লোলের ন্যায় হেমের হৃদয়ে উঠিত। দ্বিপ্রহর হইতে সায়ংকাল পৰ্য্যন্ত, কখন কখন সন্ধ্যা হইতে গভীর রজনী পৰ্য্যস্ত হেমলতা ভাবিত, এক একবার চক্ষ জলে পরিপণ হইত, পাছে কেহ দেখিতে পায় এই ভয়ে বালিকা জল মলছিয়া ফেলিত। নবকুমারের বিপুল সংসারে সে দুঃখের ভাগিনী কে হইবে ? হেম কাহাকেও মনের কথা মুখ ফুটিয়া বলিত না। বালিকা সকলের নিকটেই সঙ্গোপন করিত, ৯ বাড়ীর লোকদিগের নিকট হইতে সরিয়া আসিয়া ভাবিত। কখন কখন শোকপারাবার উথলিলে গোপন করিতে পারিত না, নয়ন হইতে অবিরল বারিধারা বাঁহত। সকেন্ঠ পক্ষী দ্বারা পরিপণ করিল। নবপল্লবিত ব্যক্ষগণ সমেন্দ বায়তে মধর গান করিতে লাগিল, তাহার সঙ্গে সন্দের পক্ষিগণ আনন্দে গান করিয়া নিজ নিজ কুলায় নিম্মাণ করিতে লাগিল। মধ্যাহ্নে ছায়াপ্রদায়ী বক্ষমলে উপবেশন করিয়া পত্রের মমর শব্দ শুনিয়া পক্ষিশাবক ও পক্ষিদম্পতির দিকে চাহিয়া বালিকা হস্তে গন্ড স্থাপন করিয়া চিন্তা করিত; যতক্ষণ না সন্ধ্যার গাঢ় ছায়া সেই বাক্ষাবলী আবত করিত, হেমলতার চিন্তা-সত্র ছিন্ন হইত না। তাহার পর বর্ষণ আসিয়া সমস্ত দেশ প্লাবিত করিল, বর্ষা শেষ হইল, কৃষকগণ আনন্দে ধান্য কাটিতে লাগিল, গ্রামে, গহে, গোলায়, ধান্য পরিপন্ণ হইল। জগৎ আনন্দিত হইল, কিন্তু হেমের নিরানন্দ হৃদয় শাস্ত হইল না। সন্দের আশ্বিন মাসে পাজার রব উঠিল, চারিদিকে আনন্দধবনি উঠিল; আকাশ পরিকার হইল, কিন্তু হেমলতার হৃদয়াকাশ তমসাচ্ছন্ন। আবার শীতকাল আসিল, আনন্দে কৃষকগণ আবার ধান কাটিল, আনন্দে সংসারী, গহস্থ, ধনী, কাঙ্গালী, সকলেই পৌষপার্বণ করিল, হেমলতার পাবণের দিন কি ইহজন্মে আর আসিবে ? নবকুমারের বিপুল সংসার। কাহারও কিছু ক্ষোভ নাই, অভাব নাই, দুঃখ নাই। সেই সংসারে স্নেহপালিতা একমাত্র দহিতা বিষন্ন। বিপুল সংসারেও হেমলতা একাকিনী! সপ্তম পরিচ্ছেদ ঃ জগতে একাকী AND leaves the world to darkness and to me. —Gray. নরেন্দ্র অতিশয় সস্তরণপট ছিলেন, সেই রাত্রিতে সস্তরণ দিয়া গঙ্গা পার হইয়া অপর পারে উপস্থিত হইলেন । সম্মুখে অনেক দরে পয্যন্ত কেবল বালকো, তাহার পর কেবল অনন্ত প্রাস্তর দেখা যাইতেছে। নরেন্দ্র সেই অন্ধকার নিশীথে সিক্তশরীর ও সিক্তবসে সেই বালকোক্ষেত্রে বিচরণ করিতে লাগিলেন। নরেন্দ্র গঙ্গার অপরপাশ্বের দিকে দটি করিলেন। অন্ধকারেও বীরনগরের শ্বেত প্রাসাদ ঈষৎ দন্ট হইতেছে, নরেন্দ্র সেই দিকে দেখিলেন, আবার চক্ষ ফিরাইয়া বিচরণ করিতে লাগিলেন, সময়ে সময়ে পেচকের ভীষণ রব শনা যাইতেছে, আর এক একবার দরে শাগালের কোলাহল শ্রত হইতেছে। নরেন্দ্র গঙ্গা দেখিতেছিলেন না, নরেন্দ্র পেচক বা শগালের ধনি শুনিতে షిశి