পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

व्यादि পাণ্ডুবণ, কেশপাশ আললোয়িত, বদন বিষন্ন, নয়নদ্বয় জলে ছলছল করিতেছে। নরেন্দ্র দুেখিয়া বিস্মিত হইলেন, জিজ্ঞাসা করিলেন–রমণি ! আপনি কে জানি না, আপনার কি অভিপ্রায় প্রকাশ করিয়া বলনে। জেলেখা উত্তর করিল না, ধীরে ধীরে এক বিন্দ চক্ষের জল মোচন করিল। নরেন্দ্র আবার বলিলেন,--আপনাকে দেখিয়া বোধ হয়, কোন বিপদ বা ভয় সন্নিকট। প্রকাশ করিয়া বলন, যদি উদ্ধারের উপায় থাকে আমি চেণ্টা করব। জেলেখা তথাপি নীরব। নীরবে আশ্রম মোচন করিয়া ধীরে ধীরে চলিয়া গেল। নরেন্দ্র বিস্মিত হইলেন। নিশাযোগে এই সহসা সাক্ষাতের অর্থ কিছুই স্থির করিতে পারিলেন না। তাঁহার বোধ হইল যেন কোন ঘোর সঙ্কট সন্নিকট। তিনি হস্তে গণ্ড মুকু দি চিত্ত করত নালি না হয় নানা বলে চিন্ত তি গলেন । সহসা গ্রহের দীপ নিৰবাণ হইল, সেই ঘোর অন্ধকারে একজন খোজা আসিয়া নরেন্দ্রকে তাহার সঙ্গে যাইতে ইঙ্গিত করিল। নরেন্দ্র সভয়ে তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিলেন। উভয়ে নিস্তন্ধে কত ঘর কত প্রাঙ্গণ পার হইয়া গেলেন তাহা বলা যায় না। নরেন্দ্র রাজমহলের প্রাসাদ দেখিয়াছিলেন, কিন্তু এরপে প্রাসাদ কখনও দেখেন নাই। কোথাও শ্বেত-প্রস্তর-বিনিমিত ঘরের ভিতর সন্দের গন্ধদীপ জলিতেছে, শ্বেত-প্রস্তর স্তম্ভাকারে উন্নত ছাদ ধরিয়া রহিয়াছে, স্তম্ভে, ছাদে ও চারিদিকে বহমাল্য প্রস্তরের ও সবণ রৌপ্যের যে কারকোৰ্য্য তাহা বৰ্ণনা করা যায় না। কোথাও প্রাঙ্গণে ঈষৎ চন্দ্রালোকে সন্দের ফোয়ারার জল খেলিতেছে, চারিদিকে সন্দের বাগান, সন্দের পম্পেলতা, তাহার উপর দিয়া নৈশ সমীরণ নিস্তন্ধে বহিয়া যাইতেছে। কোথাও বা উদ্যান বক্ষতলে আসীন হইয়া দুই একজন উজলবণ উক্তজবল বেশধারিণী রমণী বীণা বাজাইতেছে, অথবা নিদ্রার বশীভূত হইয়া সখে নিদ্রা যাইতেছে। বাহিরে খোজাগণ নিঃশব্দে পদচারণ করিতেছে, আর রহিয়া রহিয়া মদস্বেরে নৈশ বায় সেই ইন্দ্রপরেীর উপর বহিয়া যাইতেছে। নরেন্দ্র আপন বিপদকথা ভুলিয়া গেলেন, এই সন্দের প্রাসাদ, সন্দের ঘর ও প্রাঙ্গণ, সন্দের উদ্যান ও এই অপব্ব পরিবেশধারিণী রমণীদিগকে দেখিয়া বিস্মিত হইলেন। তিনি কোথায় ? এ কোন স্থান ? কতক্ষণ পরে তিনি একটী উন্নত সবর্ণ-খচিত কবাটের সম্মুখে উপস্থিত হইলেন। সহসা সেই কবাট ভিতর হইতে খালিয়া গেল। নরেন্দ্র একটী উন্নত আলোকপণ ঘরে প্রবেশ করিলেন। সহসা অন্ধকার হইতে উক্তজবল আলোকে আনীত হওয়ায় কিছুই দেখিতে পাইলেন না। আলোক সহ্য করিতে না পারিয়া হস্ত দ্বারা নয়ন আবৃত করিলেন, অমনি শত নারী-কন্ঠবিনিঃসন্ত হাস্যধৰ্মনিতে সে উন্নত প্রাসাদ ধৰনিত হইল। নরেন্দ্র জীবনে কখনও এরপে বিস্মিত হয়েন নাই। কোথায় আসিলেন, এ কি প্রকৃত ঘটনা না স্বপ্ন, এ কি পাথিবি ঘটনা না ইন্দ্রজাল ? নরেন্দ্র পুনরায় চক্ষ উন্মীলন করিলেন, পুনরায় উক্তজবল আলোকচ্ছটায় তাঁহার নয়ন ঝলসিত হইল। আবার হস্ত দ্বারা নয়ন আবাত করিলেন, পনরায় শত নারী-কন্ঠ-ধননিতে প্রাসাদ শদিত হইল। ক্ষণেক পরে যখন নরেন্দ্র চাহিতে সক্ষম হইলেন, তখন যাহা দেখিলেন তাহাতে তাঁহার বিসময় দশগণে বদ্ধিত হইল। দেখিলেন, মমর প্রস্তর-বিনিমিতে একটী উচ্চ প্রাসাদের মধ্যে তিনি আনীত হইয়াছেন। সারি সারি প্রস্তরস্তম্ভ উচ্চ ছাদ ধারণ করিয়া রহিয়াছে, সে ছাদে ও সে স্তম্ভে যেরপে বিভিন্ন বর্ণের প্রস্তরের কারকোয্য দেখিলেন, সেরপে তিনি জগতে কুত্রাপি দেখেন নাই। স্তম্ভ হইতে স্তম্ভান্তরে সুগন্ধ পম্পেমাল্য লম্বিত রহিয়াছে, নীচে স্তবকে স্তবকে পড়পরাশি সজিত রহিয়াছে, শত নারীকণ্ঠ হইতে পাপমাল্য দোদুল্যমান হইয়া সগন্ধে ঘর আমোদিত করিতেছে। ছাদ হইতে, স্তম্ভ হইতে, পপ ও পত্ররাশির মধ্য হইতে সহস্ৰ গন্ধদীপ নয়ন ঝলসিত করিতেছে, ও সেই সন্দের উন্নত প্রাসাদ আলোকময় ও গন্ধপরিপর্ণে করিতেছে। রেখাকারে শত রমণী দন্ডায়মান রহিয়াছে, সেই রেখার মধ্যস্থানে দীপালোক প্রতিঘাতী রত্নরাজিবিনিমিত উচ্চ সিংহাসনে তাহাদিগের রাজ্ঞী উপবেশন করিয়া আছেন! এ স্বপ্ন না ইন্দ্রজাল ?” নরেন্দ্র আলফলায়লায় পড়িয়াছিলেন যে, এবন-হাসেন নামক একজন দরিদ্র ব্যক্তি একদিন নিদ্রা হইতে উত্থিত হইয়া সহসা দেখিলেন, যেন তিনি বাগাদের কালিফ >O>