পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भाथबौकण्कण চতুৰ্দশ পরিচ্ছেদ : দেওয়ানা তাতার বালক BEWARE of the day When the lowlands shall meet thee in battle's array. —Campbell. দুইজনে দগ হইতে নিৰ্ম্মান্ত হইয়া বহির্ভাগে বিস্তত প্রাঙ্গণে আসিয়া পড়িলেন, সে স্থান তখনও জনাকীর্ণ। বড় বড় লোক কেহ শিবিকায়, কেহ হস্তীর উপর, কেহ অশ্বারোহী হইয়া এদিকে ওদিকে যাতায়াত করিতেছে, এবং শত শত ব্যবসায়ী লোক নানা অপরাপ ও বহমাল্য দ্রব্য বিক্রয় করিতেছে, তাহা ক্রয় করিতে বা দেখিতে সহস্ৰ সহস্ৰ লোক ঝাকিয়া আসিতেছে। কেহ গান করিয়া বা নত্য করিয়া অথলাভ করিতেছে, কেহ ভেকেী দেখাইতেছে, কেহ সাপ খেলাইতেছে, কেহ হাত গণিয়া বলিতেছে। গণক বলিয়া পরিচয় দিয়া অনেকেই তথায় আসিয়াছে, এবং রৌদ্রে আপন জীণ বস্ত্র পাতিয়া বসিয়া রহিয়াছে। এক দিকে একখানা যন্ত্র, আর এক দিকে একখানি করিয়া পুস্তক। অনেক লোক তাহাদের নিকট ছয়টিতেছে, কুলকামিনীরাও শত্র বসনে মন্ডিত হইয়া ব্যগ্র হইয়া আসিতেছে, এবং এক এক পয়সা দিয়া হাত দেখাইয়া লইতেছে। তাহাদের মধ্যে নরেন্দ্র এক অপরপে গণক দেখিতে পাইলেন। তাহার বয়স চতুদশ বৎসরের অধিক হইবে না, মখমণ্ডল অতিশয় কোমল ও অতিশয় গৌরবণ, সৰ্য্যেতাপে আরক্ত হইয়া গিয়াছে। চক্ষ, গণ্ডস্থল এবং স্কন্ধের উপর জটা পড়িয়াছে। জটা দ্বারা ঈষৎ আবত হইলেও চক্ষ হইতে যেন অগ্নিসফলিঙ্গরাপে জ্যোতিঃ বাহির হইতেছে। মস্তক হইতে পদ পৰ্য্যন্ত সমস্ত শরীর কৃষ্ণ বসনে আবাত, কোমরে একটী বহমাল্য পেটী রৌদ্রে ঝকঝকা করিতেছে। বালক তাতারদেশীয় মুসলমান, কাহারও নিকট পয়সা না লইয়া হাত দেখিতেছে। তাতার বালকের আকৃতি দেখিয়াই অনেকে তাহার নিকট যাইতেছে। গজপতি ও নরেন্দ্র উভয়ে তাহার নিকটে গেলেন। গজপতি প্রথমে হাত দেখাইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন,—অদ্য সন্ধ্যার সময়েই আমরা দিল্লী নগর পরিত্যাগ করিয়া কোথায় যাইব বল দেখি ? তাতার গজপতির মুখ ও বসন বিশেষ করিয়া দেখিয়া বলিল,—মহারাজা যশোবন্তসিংহ নম্মদাতীরে গিয়াছেন, তুমি সেই স্থানে ষাইবে । গজপতি উচ্চ হাস্য করিয়া বলিলেন,—মহারাজা যশোবন্তসিংহ আরংজীবের সহিত যুদ্ধে দেখিয়া সকলেই বলিতে পারে। ইহার অধিক বলিবার তোমার বিদ্যা নাই ? তাতার প্রজবলিত নয়নে গজপতির উপর স্থির দটি করিয়া ক্ষণেক পর মস্তক নাড়িয়া জটাভার পশ্চাৎদিকে ফেলিয়া বলিল,—রাজপত! আরও বলিতে পারি, আরংজীবের হস্তে সমস্ত রাজপতের নিধন হইবে। মহারাজকে বলিও যেন দ্রুতগতি একটী অশ্ব বাছিয়া লয়েন, নতুবা পলাইবার সময় পাইবেন না। সপ্ত সহস্র রাজপতের মধ্যে সপ্ত শতেরও রক্ষা নাই। রাজপত! সে যুদ্ধে তোমার নিশ্চয় নিধন। গজপতি সাহসী যোদ্ধা, কিন্তু তাতার বালকের আকার ও গম্ভীর বর ও প্রজবলিত চক্ষ দেখিয়া ও কথা শুনিয়া মহমত্তের জন্য তিনি শিহরিয়া উঠিলেন। মহত্তেমধ্যে সে ভাব লিখিয়া থাকেন, মহারাজের যুদ্ধে হৃদয়ের শোণিতদান অপেক্ষা রাজপত অধিকতর গৌরবের কাযf্য জানে না। সকলে ক্ষণকাল নিস্তন্ধ হইয়া রহিল। পরে নরেন্দ্র আপন হাত দেখাইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, –তুমি যদি যথার্থ হাত দেখিতে জান, বল দেখি কল্য নিশাকালে আমি কোথায় ছিলাম এবং কাহাকেই বা দেখিয়াছিলাম ? তাতার অনেকক্ষণ নিস্তন্ধ হইয়া ভূমির দিকে চাহিয়া রহিল, পরে ধীরে ধীরে নরেন্দ্রের ১০৭