পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নরেন্দ্র। কিয়পে : আদেশ করন। , t শৈলেশ্বর। বাল্যকালাবধি তুমি তাহার হৃদয়ে প্রেমস্বরপ কণ্টক রোপণ করিয়াছ, সেউী তুমি উৎপাটন কর, না হইলে তাহা উৎপাটিত হইবে না, হেমলতা জীবন্মতা থাকিবে। হেমলতা এক্ষণে সচ্চরিত্র ধৰ্ম্মমপরায়ণ স্বামী পাইয়াছে, সংসারকায্যে ব্ৰতী হইয়াছে, কেবল সময়ে সময়ে তোমার চিন্তা তাহার মনে উদয় হয়, কেবল সেই সময়ে স্বামীর প্রতি হৃদয়ে বিশ্বাসঘাতিনী হয়। সেই চিন্তা তুমি দরে কর। নরেন্দ্র। কিরাপে দরে করিব ? আপনি বলিতেছেন, আমি তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিলে তাহার সব্বনাশ হইবে। শৈলেশ্বর। উপায় আছে। হেমলতার সহিত একেবারে চিরজন্মের মত বিচ্ছেদ ঘটান আবশ্যক। নরেন্দ্র, তুমি যদি যথার্থ হেমলতাকে ভালবাস, যদি যথাথ তাহার কণ্টকোদ্ধারের জন্য প্রাণ দিতে সক্ষমত থাক, তবে যোগী হইয়া নারী-সংসগ ত্যাগ কর, কিংবা মুসলমান হইয়া মুসলমানকন্যা বিবাহ কর। হেম যখন শুনিবে, যে নরেন্দ্র আমার বাল্যকালের ভালবাসা ভুলিয়া যোগী হইয়াছে, অথবা বিধম্মী হইয়া অন্য সত্রীকে গ্রহণ করিয়াছে, তখন অবশ্যই তাহার হৃদয় ক্ৰমে ক্রমে পরিবত্তিত হইবে। মানব-হৃদয় লতার মত শতেক কাঠে জড়াইয়া থাকে না। যে আমাকে একেবারে বিস্মত হইয়াছে, যাহার অন্য আশা, অন্য প্রেম, অন্য উদ্দেশ্য, অন্য চিন্তা, তাহার প্রতি অনুরক্তি কখনই চিরকাল থাকে না । নরেন্দ্র ! তোমার বিষম পাপের এই বিষম প্রায়শ্চিত্ত। নরেন্দ্র । ভগবান জানেন আমি তাহার জন্য অনেক ক্লেশ স্বীকার করিতে পারি, কিন্তু আপনি যে ব্যবস্থা করিলেন তাহা অসহ্য। স্বামিন ! এ ঔষধ অতিশয় তিক্ত, অন্য ঔষধের ব্যবস্থা করন। শৈলেশ্বর । উৎকট রোগে উৎকট ঔষধ আবশ্যক। নরেন্দ্র। সবামিন! আপনি পরম ধামিক শৈব হইয়া আমাকে মসলমান ধৰ্ম্ম অবলম্বন করিবার আদেশ করিতেছেন ? ... .5་ཀཱ་མཱ་ལ་ཝ། পাপের জন্য মনুষ্য গোজন্ম পৰ্য্যন্ত প্রাপ্ত হয়, কেবল জাতিনাশে ভীত マ茂 ? দুইজনে অনেকক্ষণ নিস্তব্ধ হইয়া রহিলেন। নরেন্দ্রনাথ হন্তে গণ্ডস্থল স্থাপন করিয়া সেই অগ্নিস্ফলিঙ্গের দিকে চাহিয়া এক মনে চিন্তা করিতে লাগিলেন, শৈলেশ্বর সেই পন্বতগহদরে ধীরে ধীরে বিচরণ করিতে লাগিলেন। অনেকক্ষণ পর শৈলেশ্বর গম্ভীরস্বরে বলিলেন,—নরেন্দ্রনাথ, তুমি আমাকে বিশ্বাস কর ? নরেন্দ্র। আমার খড়গ গ্রহণ করুন, আর কি প্রমাণ দিব ? শৈলেশ্বর। তবে একটী কথা শন প্রেম নারীর একমাত্র অবলম্ববন, প্রেম নারীর জীবন, পরেষের তাহা নহে ; পরেষের অনেক আশা, অনেক অভিলাষ, অনেক মহৎ উদ্দেশ্য আছে। তুমি যবেক, সাহসী, অভিমানী, এ প্রশস্ত জগতে কি আপন অসি সহায় করিয়া আপনার যশের পথ পরিৎকার করিতে পার না ? সত্ৰীলোকের মত কি কেবল ক্ৰন্দন করিয়া জীবন অতিবাহিত করিতে চাও ? শুনিয়াছি তোমাদের বঙ্গদেশ বীরশন্য। যশশান্য । যাও, নরেন্দ্রনাথ ! সেই দরে বঙ্গদেশে যশঃস্তম্ভ স্থাপন কর, যাও সবদেশের গৌরব সাধন কর, সিংহবীয্য প্রকাশ করিয়া আপন কীৰ্ত্তি স্থাপন কর, এ মহৎ উদ্দেশ্যে তোমার জীবন সমপণ কর। আকাশে এরপে দেবতা নাই, যিনি এ মহৎ উদ্দেশ্যে তোমার সহায়তা না করিবেন। স্বয়ং বজ্রপাণি পরেন্দর, স্বয়ং শালপাণি মহাদেব তোমার মনস্কামনা পণ করিবেন। শৈলেশ্বর নিস্তব্ধ হইলেন। নরেন্দ্রের নয়নদ্বয় জনলিতে লাগিল, তিনি একদটিতে সেই অপব্ব শৈবের দিকে চাহিয়া রহিলেন। পরে একদিন এই শৈবকে যেরপে যন্ধেনিপণ দেখিয়াছিলেন, আদ্য মানব-হৃদয় জ্ঞানে তাঁহাকে সেইরাপ নিপুণ দেখিলেন। শৈব আবার বলিতে লাগিলেন–নরেন্দ্র! এই ঘোর রজনীতে তুমি বিদেশে ভগবান একলিঙ্গের মন্দিরে পজা দিতে আসিয়াছ ! কি জন্য ? দেশের হিতসাধনের জন্য আসিয়াছ ? কোন বীর-ব্লতে ব্ৰতী হইয়া আসিয়াছ ? কোন দেবোচিত মহদন্দেশ্য সাধনাথ আসিয়াছ ? ধিক নরেন্দু! তোমার ন্যায় বীরপরষ একটী বালিকার মুখ দেখিবার জন্য জীবনের মহৎ > ミや