পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাধৰীকঙ্কণ উদ্দেশ্য ভুলিয়া থাকে ? প্রেমচিন্তা দরে কর; অথবা যদি প্রেম বিনা জীবন শকে বোধ হয়, তরে বীরোচিত প্রশ্বয়ে বদ্ধ হও । পুরুষসিংহ! সিংহী গ্রহণ কর। নরেন্দ্র । ভগবন! আদেশ করন। শৈলেশ্বর। এ জগৎ অনুসন্ধান কর। পীড়ার সময় সাবিত্রীর ন্যায় তোমার সেবা করিবে, বিপদের সময় নমন্ডেমালিনীর ন্যায় তোমার পাশ্বে অসিহন্তে দাঁড়াইবে, কুশলের সময় বিমল প্রণয়দানে তোমার হৃদয় তৃপ্ত করিবে, যুদ্ধের সময় যশোগীতে তোমার শরীর কণ্টকিত করিবে, এরপে রমণী যদি পাও, তাহাকে গ্রহণ কর। নরেন্দ্র। এরপ নারী কি জগতে আছে ? শৈলেশ্বর। স্বয়ং দেখিতে পাইবে। নরেন্দ্ৰ ! আমার যোগবল মিথ্যা নহে, এরপে নারী না থাকিলে আমি ব্যথা তোমাকে এই গহবরে আহবান করি নাই। আর একটী কথা শন। যে নারীর কথা আমি বলিতেছি, সে হেমলতা অপেক্ষা তোমাকে ভালবাসে, এ নারীকে তুমি পাবে দেখিয়াছ । নরেন্দ্র। স্মরণ নাই । শৈলেশ্বর। অদ্য স্বপ্নে দেখিবে। আমি চলিলাম, এই কলসে যে মদিরা আছে, তাহা পান করিয়া আজ এই গহবরে শয়ন কর। এই নিব্বাণপ্রায় অগ্নির দিকে দেখ, যখন শেষ অগ্নিকণা সমস্ত ভস্ম হইয়া যাইবে তখন সেই স্বপ্ন দেখিবে। যে নারীকে দেখিবে, সেই এই জগতের ఫ్లిতোমার প্রেমাকাঙিক্ষণী, তোমার ন্যায় অভিমানিনী। বীরপরষ! সেই তোমার উপযুক্ত | নরেন্দ্র। মহাশয়, আপনার কথায় বিস্মিত হইলাম। শৈলেশ্বর। আর একটী কথা আছে, এটী মন দিয়া শন। এই স্বপ্ন দেখিয়া কাল প্রাতে তুমি এই গহর হইতে বাহিরে যাইও । তিন দিন তোমাকে সময় দিলাম, স্বপ্নদৃস্টা নারীকে বিবাহ করবে কি না, তিন দিনের মধ্যে স্থির করিবে। যদি সম্মত হও, তবে তিন দিন পরে শ্বেতচন্দনরেখা ললাটে ধারণ করিয়া অমাবস্যার সায়ংকালে আমার সহিত এই গহবরে সাক্ষাৎ করিও, কিরাপে সে কন্যা পাইবে তাহার উপায় বলিয়া দিব। যদি এ বিবাহে সম্মত না হও, তবে রক্তচন্দনের রেখা ললাটে ধারণ করিয়া ঐ অমাবস্যার সায়ংকালে এই স্থানে আমার সহিত সাক্ষাৎ করিও, তোমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত বিধান করিব। ইহাতে প্রতিশ্রত হও, নচেৎ কালী তোমাকে স্বপ্ন দিবেন না। নরেন্দ্র। প্রতিশ্রত হইলাম, তিন দিন পর অমাবস্যার সন্ধ্যায় আপনার সহিত এই গহবরে সাক্ষাৎ করিব। ইহাতে যে প্রকার অঙ্গীকার করিতে বলেন, করিতে প্রস্তুত আছি। শৈলেশ্বর। তুমি বীরপরষ তোমার কথাই অঙ্গীকার। রজনী তিন প্রহর হইয়াছে, আমি বিদায় হইলাম। চতুবিংশ পরিচ্ছেদ ঃ বীণাহন্তে WHO is this maid 2 What means her lay ? —Scott. নরেন্দ্রনাথ অনেকক্ষণ সেই অন্ধকার গহবরে বিচরণ করিতে লাগিলেন, বাল্যকালের ভালবাসা, যৌবনের প্রেম, সহসা উৎপাটিত করিতে প্রস্তুত হইয়াছেন। একাকী অনেকক্ষণ সেই গহবরে পদচারণ করিতে লাগিলেন, কি ভীষণ চিন্তায় তাঁহার হৃদয় উৎক্ষিপ্ত হইতেছিল, তাহা আমরা অনুভব করিতে সাহস করি না। অনেকক্ষণ পর অগ্নি নিৰ্বাণপ্রায় দেখিয়া তিনি শৈবের আদেশ সমরণ করিলেন, কলসে যে মদিরা ছিল, সমস্ত পান করিলেন। মস্তক ঘণিত হইতে লাগিল, অগ্নির একপাশ্বে নরেন্দ্রনাথ শয়ন করিলেন। নরেন্দ্রনাথ অগ্নি দেখিতে লাগিলেন। এক একবার কাঠের এক অংশ প্রদীপ্ত হয় আবার ১২৭