পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

oله k4 বিস্তততর ক্ষেত্র খুজিতেছিলেন তাহার আভাস পাই ১৮৮৮ সনের সেপ্টেম্বর মাসে অগ্রজ যোগেশচন্দ্রকে লিখিত পত্র হইতে। এই গরত্বেপণ পরখানির কিয়দংশ এখানে দিলাম :

  • “I did not think of an appointment in the India Council, but of a readership in Indian History or in Sanskrit, in Cambridge, Oxford, or London, if my 'History of India' makes a name for itself. Anything which will give me a position and some little income over and above my pension, and will enable me to organise an Indian Party to represent Indians' rights in England and Parliament.”

রমেশচন্দ্র ১৮৯২-৯৩ নাগাদ বৎসরাধিক কালের ছয়টিতে বিলাতে অবস্থান করিয়াছিলেন । এই সময়ে তিনি সেখানে জাতীয় কংগ্রেসের কোন কোন প্রস্তাব, যেমন, বিচার ও শাসন বিভাগের পাথকীকরণ, প্রকাশ্যে সমথন করেন। এরপ কায্যে সরকার যে তাহার উপর রন্ট হইবেন এবং তাহাতে তাঁহার উন্নতির পথে বিঘা ঘটিতে পারে, ইহা তিনি বেশ জানিতেন। সরকারী কমেমর্শ যোগ্যতা প্রদর্শন করা সত্ত্বেও রমেশচন্দ্রের অপেক্ষা জনিয়র ইংরেজ সিবিলিয়ানদের দ্রুত পদোন্নতি হইয়াছিল, কিন্তু ইহাতে তিনি কোনরপে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নাই। পক্ষান্তরে সবদেশের প্রকৃত উন্নতি-সাধনই ছিল তাঁহার লক্ষ্য। তিনি ঐ সময়ে অগ্রজ যোগেশচন্দ্রকে একখানি পত্রে অন্যান্য কথার মধ্যে লেখেন— "...but I only state these facts to show that if Government is not disposed to repose any real trust and confidence in me, I am free to utilise my powers and abilities, such as they are, to the benefit of my country in other ways. And Government will feel this when they see me co-operating with Sir Richard Garth and Mr. Reynolds to press for a reform in the system of our administration.” ইহার পরেই, ১৮৯৪ সনের এপ্রিল মাসে রমেশচন্দ্র যখন বদ্ধমান বিভাগের অস্থায়ী কমিশনর পদে নিয়োজিত হইলেন, তখন সাধারণ ভাবে ইংরেজের ভারত-দ্বেষী মনোভাব পত্রিকার পাঠায় প্রকাশিত হইয়া পড়িল। এই ব্যাপারে দেশী-বিদেশী সংবাদপত্রে বিশেষ বাদানবোদও কিছুকাল যাবৎ চলিয়াছিল। কিন্তু প্রথমে বদ্ধমান ও পরে উড়িষ্যার অস্থায়ী কমিশনর পদে অধিষ্ঠিত থাকিয়া রমেশচন্দ্র শধ্যে যোগ্যতারই প্রমাণ দেন নাই, ভারতীয় ও ইউরোপীয় নির্বিশেষে সকল অধীনস্থ কৰ্ম্মচারী তাঁহার মধর ব্যবহারে এবং সহৃদয়তায় মন্ধে হইয়াছিলেন। তবে রমেশচন্দ্রের মন সরকারী কমে আর বেশী দিন সায় দিতে পারিল না। সাহিত্য-সাধনা এবং সবদেশ-সেবার মুদ্র গত ৩ বাপত লে ললে আশা কম মত অকল দে ল ক | রমেশচন্দ্র অবসর গ্রহণ করিবার অব্যবহিত পরেই ১৮৯৭ সনের ১৪ই ডিসেম্বর লন্ডন য়ুনিভাসিটির ভারতীয় ইতিহাসের অধ্যাপক পদে নিয়োগ-সম্বলিত একখানি পত্র কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে প্রাপ্ত হইলেন। রমেশচন্দ্রের সাহিত্য-সাধনার কথা পরে বিস্তারিত রাপে বলা যাইবে । এখানে এইমাত্র বলিলেই যথেষ্ট হইবে যে, তিনি ইতিমধ্যেই প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি, সাহিত্যাদির সম্বন্ধে গবেষণা করিয়া বিভিন্ন পুস্তকে উহা মুখ্যতঃ ইংরেজী ভাষায় প্রকাশিত করিয়াছেন। ইংলন্ডের বিদগ্ধ সমাজের নিকট হইতে তিনি সবিশেষ প্রশংসাও প্রাপ্ত হন। তাঁহার অবসর গ্রহণের সংবাদে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিলাতে উপস্থিতির সযোগ লইয়া তাঁহাকে তিন বৎসরের জন্য নিয়োগপত্র দিয়া থাকিবেন। তবে এই পদের কোন বেতন ছিল না। বক্তৃতায় উপস্থিত ছাত্ৰগণের নিকট হইতে নিদিষ্ট হারে একটি থোক ফী গ্রহণ করা হইত। তাঁহার বক্তৃতার বিষয় ছিল ভারতের প্রাচীন ইতিহাস, সংস্কৃতি, সাহিত্য, কাব্য প্রভৃতি সম্পকে। এই বক্তৃতাগুলি প্রস্তুতি কালে তিনি গভীর ভাবে গবেষণা কায্যে মনোনিবেশ করিলেন। ইহার ফল-কয়েকখানি ভারতীয় সাহিত্য-সংস্কৃতিমলেক ইংরেজী গ্রন্থ। অন্যত্র এইসব গ্রন্থের উল্লেখ পাওয়া যাইবে। প্রাচীন ভারতের বিবিধ চিন্তাধারার সঙ্গে পরিচিত হইয়া ইংরেজ সমাজ ভারতবষী সম্বন্ধে তাহাদের পন্ব-সংস্কার যাচাই করিয়া লইতে অগ্রসর হইল। রমেশচন্দ্র সবদেশ সেবার এই পন্থাটি গ্রহণ করিয়া ভারতবাসীর যে কি হিতসাধন করিয়াছেন, তাহা বলিয়া শেষ করা যায় না।