পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बाथबौकथ्कण করিতেছে, আবার শ্রীরামের চিস্তা করিতেছে। যিনি নিরাশ্রয়া, নিকলঙ্কা, অস্তঃসত্ত্বা, রাজকন্যা, রাজুরাণীকে চিরনিব্বাসিত করিয়াছেন সেই নিষ্ঠর পতিকেও অদ্যাবধি হৃদয়ে স্থান দিয়া অভাগিনী চিন্তা করিতেছে, সেই পতিই সীতার জীবনের জীবন, হৃদয়ের সব্বসব ধন । পতিব্ৰতার কি মাহাত্ম্য! রজনী তৃতীয় প্রহর পয্যন্ত হেমলতা তাহার ধম্মপরায়ণা ননদিনীর নিকট এই সকল পণ্য কথা শুনিত। দুঃখ কথা শুনিয়া হেমলতার হৃদয় আলোড়িত হইত, ননদিনীর হৃদয়ে বদন ঢাকিয়া দর-বিগলিত ধারায় রোদন করিত। আবার মুখ তুলিয়া সেই পবিত্র কথা শুনিত, আবার শোকাকুলা হইয়া অবারিত অশ্রািজল ত্যাগ করিত। হেমলতা ভাবিত,—সংসারে সকলেই দঃখিনী, পণ্যোত্মা সীতা দুঃখিনী, ধৰ্ম্মপরায়ণা সাবিত্রী দুঃখিনী, আমি কে অভাগিনী যে নিজ দঃখে বিহবলা হইয়া রহিয়াছি। তাঁহারা সাধনী ছিলেন, পতিব্ৰতা ছিলেন, অভাগিনী হেমলতা আজিও নরেন্দ্রের চিন্তা করে, দেবতুল্য স্বামীকে বিস্মরণ হইয়া আছে। আমি অবলা, আমার বল নাই, ভগবান সহায় হও, পাপচিন্তা হৃদয় হইতে উৎপাটিত কর, অবলার যতদর সাধ্য চেস্টা করিবে । শৈবলিনীর অপরপে স্নেহ ও প্রবোধবাক্যে হেমলতা ক্রমশঃ শাস্তি লাভ করিল, হৃদয়ের প্রথম প্রেমস্বরুপ ভীষণ শেল উৎপাটিত হইল, কিন্তু অনেক দিনে, অনেক চেস্টায়, অনেক পরিশ্রমে, সে ফল লাভ হইল। সেই পরিশ্রম ও চেষ্টায় যৌবনের প্রফুল্লতা শাক হইয়া গেল, অবয়বে চিন্তার রেখা অঙ্কিত হইল। হেমলতা আজি আর দুঃখিনী নহে, কিন্তু স্বভাবতঃ ধীর, নম্র ও নতশির।। এক্ষণে হেমলতা ও শৈবলিনী সৰবাদাই নরেন্দ্রের কথা কাঁহত, বাল্যকাল হইতে শৈবলিনী নরেন্দ্রকে ভ্রাতা বলিত, এখন হেমও তাহাকে ভ্রাতার স্বরপে জ্ঞান করিত। ভ্রাতার বিপদে বা অবত্তমানে ভগিনীর চিন্তা হয়, হেমও নরেন্দ্রের জন্য ভাবিত, কিন্তু তাহার হৃদয় আর পত্ৰবাবৎ বিচলিত হইত না। কিংবা যদি কখন কখন সায়ংকালে সেই উপবনে একাকী বিচরণ করিতে করিতে হেমের বাল্যকালের কথা মনে পড়িত, ভাগীরথীর কল কল শব্দ শনিয়া, নীল গগনমণ্ডলে উত্তজবল পর্ণচন্দ্র দশন করিয়া, শীতল হরিৎ কুঞ্জবনে উপবেশন করিয়া, বাল্যকালের সঙ্গীর কথা মনে পড়িত, যদি সে কথা মনে পড়িয়া হেমের চক্ষে এক বিন্দ জল লক্ষিত হইত, —পাঠক, তাহা ভ্রাতৃস্নেহের নিদশনস্বরপে বলিয়া মাজ’না করিও। অন্য ভাব তিরোহিত করিবার জন্য হেম অনেক চেন্টা করিয়াছে, অনেক সহ্য করিয়াছে, অভাগিনী অনেক কাঁদিয়াছে, সে ভাব তিরোহিত করিয়াছে। যদি হৃদয়ের কদরে অজ্ঞাতরাপে, সে ভাবের একবিন্দও লক্কোয়িত থাকে, পাঠক, সেটুকু অভাগিনী হেমকে ক্ষমা করিও না। উনত্রিংশ পরিচ্ছেদ ঃ পুরাণ-কথা YET, oh yet thyself deceive not, Love may sink by slow decay, But by sudden wrench believe not Hearts can thus be torn away. —Вyron. ঘাট হইতে ফিরিয়া আসিয়া হেমলতা ও শৈবলিনী গহের সমস্ত কাৰ্য্যাদি সমাপন করিল। পরে দুইজনে একটী ঘরে বসিয়া হেম বলিল,—দিদি ! অনেক দিন অবধি গল্প শুনি নাই, আজ একট অবসর আছে, একটী গল্প বল না ! শৈবলিনী সস্নেহ বচনে উত্তর দিল,—বলিব বৈ কি বোঁ, কোন গল্পটি বলিব তুমি বল। হেম বলিল,—রাজা হরিশচন্দ্রের গল্প অনেক দিন শুনি নাই, সেই গলপ বল। শৈবলিনী হরিশচন্দ্রের গল্প বলিতে লাগিল। মহাভারতের কথা যথার্থই অমতের তুলা, গল্প কি মিটি, র্কি সললিত, কি হৃদয়-গ্রাহী! রাজার রাজ্য গেল, ধন গেল, মান গেল, স্ত্রী-পত্র লইয়া রাজা বনে বনে বিচরণ করিতে লাগিলেন। রাজমহিষী শৈব্যা এক্ষণে রাজার >○>