পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भाथबौकथ्कल হেমলতার নয়ন হইতে ঝর ঝর করিয়া জল পড়িয়া সমস্ত মুখমণ্ডল সিক্ত হইতেছিল। , তখন শৈবলিনীর মন শাস্ত হইল, শৈবলিনীরও চক্ষতে জল আসিল। শৈবলিনী সস্নেহে হেমের চক্ষ মছাইয়া বলিল,—হেম, আমাকে ক্ষমা কর। তুমি ধৰ্ম্মপরায়ণা, তুমি পতিব্ৰতা আমি যে মহত্তের জন্যও তোমাকে সন্দেহ করিয়াছিলাম সে জন্য ক্ষমা কর । হেম। দিদি, তুমি ক্ষমা চাহিও না, তোমার দয়া, তোমার ভালবাসা, ঋণ আমি ইহজন্মে পরিশোধ করিতে পারিব না। জন্মে জন্মে যেন তোমার ভগিনী হই, আর আমার কিছল প্রাথনা নাই। আবার দইজনে দুইজনকে ধরিয়া ক্ষণেক নিস্তব্ধ হইয়া রহিল, দুইজনেরই চক্ষ দিয়া জল তুলি র বােল বাল-বাদ হইয়াছে, যাও নরেন্দ্রের সহিত দেখা করিয়া l শৈবলিনী সেই বক্ষতলে অপেক্ষা করিতে লাগিল, হেমলতা মন্দিরমধ্যে প্রবেশ করিল। হেমলতার এক্ষণে উদ্বেগ নাই, ধীরে ধীরে নরেন্দ্রের নিকটে আসিয়া দাঁড়াইল, ও নম্নভাবে মত্তিকার দিকে চাহিয়া রহিল। এতদিনের পর হৃদয়ের হেমকে পাইয়া নরেন্দ্রের হৃদয় উদ্বেগপণ হইল! নরেন কথা কহিতে পারিল না, কেবলমাত্র হেমের হাত ধরিয়া পিপাসিতের ন্যায় সেই অমর্তমাখা মুখখানি দেখিতে লাগিল, শরীর কাঁপিতে লাগিল, নয়ন হইতে ঝর ঝর করিয়া জল পড়িতে লাগিল। হেম আর সহ্য করিতে পারিল না, মস্তক নত করিয়া রহিল, তাহার নয়ন ছল ছল করিতেছিল। অনেকক্ষণ পর হেমলতা নরেন্দ্রের দিকে স্থিরদটি করিয়া বলিল—“নরেন্দ্র !" নরেন্দ্র দেখিলেন, হেমের মুখে আর উদ্বেগের চিহ্ন নাই, লতজার চিহ্ন নাই, মুখমণ্ডল নিমাল ও পরিকার, ধীরে ধীরে হেমলতা বলিল—“নরেন্দু!” চতুচিত্রংশ পরিচ্ছেদ ঃ মাধবীকঙ্কণ, যমনায় বিসর্জন So she strove against her weakness, Though at times her spirit sank Shaped her heart with woman's meekness To all duties of her rank. —Te72my.fo?2. দেবালয়ের সমস্ত দীপ তখন নিৰ্বাণ হইয়াছে ও সমস্ত লোক সপ্ত অথবা চলিয়া গিয়াছে। স্তম্ভ ও প্রকোঠের উপর সন্দের চন্দ্রালোক পতিত হইয়াছে ও সারি সারি স্তম্ভচ্ছায়া ভূমিতে পতিত হইয়াছে। পাশ্বে বিশাল যমনোনদী চন্দ্ৰকরে নিস্তন্ধে বহিয়া যাইতেছে, ও রহিয়া রহিয়া শীতল যমুনার বায় মন্দিরের ভিতর দিয়া গাইয়া যাইতেছে। সেই সন্নিগ্ধ রজনীতে মন্দিরের একটী প্তম্ভচ্ছায়াতে নিস্তন্ধে নরেন্দ্র ও হেম দাঁড়াইয়া রহিয়ছে। হেম স্থিরভাবে বলিল,—নরেন্দ্র ! অনেক দিন পর আমাদের দেখা হইয়াছে, আমার বোধ হয় অনেক দিন দেখা হইবে না, আইস আমাদের মনের যা কথা তাহাই কহি । নরেন্দ্ৰ ! বাল্যকালে আমরা দুই জনে গঙ্গাতীরে খেলা করিতাম, কত স্বপ্ন দেখিতাম। এক্ষণে তুমি সৈনিকের ব্লতে ব্ৰতী হইয়াছ, আমি পরের সী। নরেন্দ্র, বাল্যকালের স্বপ্ন একেবারে বিস্মত হও । হেমলতা ক্ষণেক নিস্তন্ধ হইয়া রহিল, আবার বলিল,—বিধাতা যদি অন্যরাপ ঘটাইতেন, তবে আমাদের জীবন অন্যরাপ হইত, বাল্যকালের স্বপ্ন সফল হইত। কিন্তু নরেন্দ্র, আমরা যেন ভ্ৰমেও বিধাতার নিন্দা না করি। যিনি তোমাকে পরাক্রম দিয়াছেন, যশ দিয়াছেন, তাঁহার নাম লও, অবশ্য তোমাকে সখী করিবেন। যিনি আমাকে এই সংসারে স্থান দিয়াছেন, দেবতুল্য স্বামী দিয়াছেন, শৈবলিনীর ন্যায় ননদিনী দিয়াছেন, ধন ঐশ্বয দিয়াছেন, তিনি দয়ার সাগর, তাঁহাকে আমি প্রণাম করি। ృ89