পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমেশ রচনাৱলী সেই আয়ত স্নেহপণ নয়ন, সেই চিত্তহারী অতুল লাবণ্য রঘুনাথ! এ সন্দেরী কি তোমার হইবে ? তুমি একজন সামান্য হাবিলদার মাত্র, জনাদন অতি উচ্চকুলোস্তব রাজপত, তাঁহার পালিতা কন্যা রাজাদিগেরও প্রাথনীয় ! কি জন্য এরপে আশায় হৃদয় ব্যথা ব্যথিত করিতেছ? রঘুনাথ! এ ব্যথা তৃষ্ণায় কেন হৃদয় দগ্ধ করিতেছ? কিন্তু যৌবনকালে আশাই বলতী হয়, শীঘ্ন আমাদের নৈরাশ হয় না, অসাধ্যও আমরা সাধ্য বিবেচনা করি, অসম্ভবও সম্ভব বোধ হয়। রঘুনাথ আকাশের দিকে চাহিয়া চাহিয়া অনেকক্ষণ কি চিন্তা করিতেছিলেন। অনেকক্ষণ পরে দণ্ডায়মান হইলেন, আপন হৃদয়ের উপর উভয় বাহন স্থাপন করিয়া ক্ষণেক দণ্ডায়মান রহিলেন, মনে মনে বলিলেন,— “ভগবন, সহায় হও, অবশ্য কৃতকায্য হইব ! যশ, মান, খ্যাতি মনুষ্যসাধ্য, কি জন্য আমার অসাধ্য হইবে ? আমার শরীর কি অন্য অপেক্ষা ক্ষীণ ? বাহ কি অন্য অপেক্ষা দন্বেল ? দেবগণ আমার সহায় হও, আমি যুদ্ধে পিতার নাম রক্ষা করিব, রাজপতের উচিত সম্মান লাভ করিব। তাহার পর ? যদি কৃতকাৰ্য্য হই, তাহা হইলে সরয ! আমি তোমার অযোগ্য হইব না। তখন সরষ ! তোমাকে গলপচ্ছলে আদ্যকার এই সকল কথা বলিব, তখন তোমার সন্দের হস্তদ্বয় আমার এই কম্পিত হস্তদ্বয়ে স্থাপন করিব, তখন ঐ লাবণ্যময় দেহলতা এই উদ্বিগ্ন হৃদয়ে ধারণ করিব, তখন ঐ সন্দের বিশ্ববিনিন্দিত ওঠস্বয়”—রঘুনাথ! রঘুনাথ ! উন্মত্ত হইও না। তখন রঘুনাথ কথঞ্চিৎ শাস্ত-হৃদয়ে গহের দিকে ফিরিলেন। সহসা দেখিলেন একটী কণ্ঠমালা পড়িয়া রহিয়াছে,—দুইটী করিয়া মুক্তা, পরে একটী করিয়া পলা,—রঘুনাথ সে মালা চিনিলেন। সেই মালা পবেদিন সন্ধ্যাকালে সরয কণ্ঠে ও বক্ষঃস্থলে ধারণ করিয়াছিলেন, বোধ হয় অসাবধানতা বশতঃ ঐ স্থানে ফেলিয়া গিয়াছেন। রঘুনাথ আকাশের দিকে চাহিয়া বলিলেন,—ভগবন একি আমার আশা পণ্যে হইবার পবেলক্ষণ দান করিলেন ? মালাটী হৃদয়ে ধারণ করিয়া রঘুনাথ নিদ্রা গেলেন, পরদিন প্রাতে রঘুনাথের নিদ্রাভঙ্গ হইল। জনান্দনদেবের নিকট ভবানীর আজ্ঞা জানিলেন---ম্মেলচ্ছদিগের সহিত যুদ্ধে জয়, স্বধৰ্ম্মীদিগের সহিত যুদ্ধে পরাজয়। দগে ত্যাগের পর্বে রঘুনাথ একবার সরযর সহিত দেখা করিলেন। সরয যখন পুনরায় উদ্যানে ফল তুলিতে আসিয়াছেন, ধীরে ধীরে রঘুনাথও তথায় ঘাইলেন। হৃদয়ের উদ্বেগ কথঞ্চিৎ দমন করিয়া ঈষৎ কম্পিত্যবরে রঘুনাথ বলিলেন,-ভদ্রে কল্য নিশিযোগে এই কাঠমালাটী এই স্থানে পাইয়াছি, সেইটী দিতে আসিয়াছি, অপরিচিতের ধন্টতা মাত্রজনা করন । এই বিনীতবাক্য শুনিয়া সরয ফিরিয়া চাহিলেন, দেখিলেন, সেই কমনীয় উদার মুখমণ্ডল, সেই কেশাবত উন্নত ললাট, সেই উত্তজবল নয়নদ্বয়, সেই তরণে যোদ্ধা! রমণীর গৌর মুখমণ্ডল পুনরায় রক্তবর্ণ হইয়া উঠিল। রঘুনাথ পুনরায় ধীরে ধীরে বলিলেন,--যদি অনুমতি করেন, তবে এই সন্দের মালাটী উহার অভ্যস্ত স্থানে পরাইয়া দি। এই অনুগ্রহটী আমাকে প্রদান করন, ভগবান আপনাকে সুখে রাখিবেন। সরয়া সলজনয়নে একবার রঘুনাথের দিকে চাহিলেন, সে বিশাল আয়ত নয়নের ক্ষণদীটিতে রঘুনাথের হৃদয় কম্পিত হইল। তৎক্ষণাৎ রঞ্জিতমুখী লড়জায় আবার চক্ষ মাদিত করিলেন। সম্মতির লক্ষণ পাইয়া রঘুনাথ ধীরে ধীরে সেই কণ্ঠমালা পরাইয়া দিলেন, কন্যার পবিত্র শরীর সপশ করিলেন না। । ক্ষণেক পরে রঘুনাথ ধীরে ধীরে বলিলেন,—তবে অতিথিকে বিদায় দিন। সরয এবার লজ্জা ও উদ্বেগ সংযম করিয়া ধীরে ধীরে রঘুনাথের দিকে চাহিলেন, আবার ধীরে ধীরে দিকে নয়ন ফিরাইয়া অতি মদ অস্পষ্ট স্বরে কহিলেন--আপনার নিকট অন্যগহীত , পুনরায় যদি দাগে আইসেন, ভরসা করি পুনরায় পিতার এই মন্দিরে অবস্থান করিবেন। পিপাসাত্ত চাতকের পক্ষে প্রথম বন্টিবিন্দর ন্যায়, পথভ্রান্ত পথিকের পক্ষে উষার প্রথম রক্তিমাছটার ন্যায়, সরযর প্রথমোচ্চারিত এই অমত কথাগুলি রঘুনাথের হৃদয় আনন্দলহরীতে প্লাবিত করিল। তিনি উত্তর করিলেন—ভদ্রে, আমি পরের দাস, যুদ্ধ আমার ব্যবসা, পুনরায় '&ty