পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গভীর অন্ধকারের দিকে ক্ষণেক নিরীক্ষণ করিয়া রহিলেন, কৈ কেহই নাই, সকলে সপ্ত, নগর শব্দশনা ও নিস্তন্ধ। সন্দিন্ধমনা ব্ৰাহ্মণ পুনরায় আলোকপণে বাজারে ফিরিয়া গেলেন। তথার অনেক দোকান, নানাজাতীয় বিস্তর লোক এখনও ক্রয় বিক্রয় করিতেছে, তাহার ভিতর মিশিয়া যাইবার চেস্টা করিলেন। আবার তথা হইতে সহসা এক গলির ভিতর প্রবেশ করিলেন, পরে দ্রুতবেগে অন্যান্য গলির ভিতর দিয়া নগরপ্রান্তে উপস্থিত হইলেন। তথায় নিঃশব্দে অনেকক্ষণ স্বাস রন্ধ করিয়ঃ দণ্ডায়মান রহিলেন, শব্দমাত্র নাই, চারিদিকে পথ, ঘাট, কুটীর, অট্টালিকা সমস্ত নিস্তব্ধ, নৈশ গগন গভীর দাভেদ্য অন্ধকার দ্বারা সমস্ত জগৎকে আবত করিয়াছে। সহসা একটী চীৎকার শব্দ শ্রত হইল, ব্রাহ্মণের হৃদয় কম্পিত হইয়া উঠিল, তিনি নিঃশব্দে দণ্ডায়মান রহিলেন। ক্ষণেক পর আবার সেই শব্দ হইল, মহাদেওজীর ভয় দরে হইল, সে নাগরিক প্রহরী, পাহারা দিতেছে। দভাগ্যক্রমে মহাদেও যে গলিতে লক্কোয়িত ছিলেন সেই গলিতেই প্রহরী আসিল। গলি অতি সঙ্কীর্ণ, মহাদেওজী পুনরায় সেই ছরিকা হস্তে লইয়া দাভেদ্য অন্ধকারে দণ্ডায়মান রাঁহলেন। প্রহরী ধীরে ধীরে এদিক ওদিক চাহিতে চাহিতে সেই স্থানে আসিল, মহাদেও ষে স্থানে দণ্ডায়মান ছিলেন সেই দিকে চাহিল। মহাদেওজীর হৃদয় দরদের করিতে লাগিল, তিনি শ্বাস রুদ্ধ করিয়া হস্তে সেই ছরিকা দঢ়রপে ধারণ করিয়া দণ্ডায়মান রহিলেন। প্রহরী অন্ধকারে কিছল দেখিতে পাইল না, ধীরে ধীরে সে পথ হইতে চলিয়া গেল। মহাদেও ধীরে ধীরে তথা হইতে বাহির হইয়া ললাটের বেদ মোচন করিলেন। পরে নিকটবত্তীর্ণ একটী দ্বারে আঘাত করিলেন, সায়েস্তাখাঁর একজন মহারাষ্ট্ৰীয় সেনা বাহির হইয়া আসিল। দুইজনে অতি সঙ্গোপনে নগরের মধ্যে অতি গোপনীয় ও মনষ্যের অগম্য স্থানে যাইয়া উপস্থিত হইলেন। তথায় দুইজনে উপবেশন করিলেন। ব্রাহ্মণ। সমস্ত প্রস্তুত ? সেনা। প্রস্তুত। ব্রাহ্মণ । অনুমতি-পত্র পাইয়াছ ? সেনা। পাইয়াছি। আবার অস্পষ্ট পদশব্দ শ্রত হইল। মহাদেওজী এবার ক্রোধে আরক্তনয়ন হইয়া ছুরিকাহস্তে সমদখে যাইয়া দেখিলেন। অন্ধকারে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করিলেন, কিছমাত্র দেখিতে পাইলেন না, ধীরে ধীরে প্রত্যাবত্তন করিলেন। পরে সেনাকে বলিলেন,—রিক্তহস্তে আসিয়াছ : সেনা বক্ষঃস্থল হইতে ছরিকা বাহির করিয়া দেখাইল। ব্রাহ্মণ বলিলেন,—ভাল, সতক' থাকিও ! বিবাহ কবে ? সেনা । কল্য। ব্রাহ্মণ । অনুমতি পাইয়াছ ? সেনা । হ্যাঁ । ব্রাহ্মণ । কতজন লোকের : সেনা। বাদ্যকর দশ জন, ও অসাধারণী ত্ৰিশ জন, ইহার অধিক অনুমতি পাইলাম না। ব্রাহ্মণ। এই যথেস্ট, কোন সময়ে ? সেনা। রজনী এক প্রহর । ব্রাহ্মণ। ভাল, এই দিক হইতে বরষাত্রা আরম্ভ হইবে। সেনা । সমরণ আছে। ব্রাহ্মণ। বাদ্যকরেরা সজোরে বাদ্য করবে। সেনা । সমরণ আছে। ব্রাহ্মণ। জ্ঞাতি কুটবে যত পরিবে জড় করবে। সেনা । সমরণ আছে। ব্রাহ্মণ তখন অলপ হাস্য করিয়া বলিলেন--আমি সেই শুভকায্যের পরোহিত ! সে শুভকায্যের ঘটা সমস্ত ভারতবষে রাষ্ট্র হইবে। * সহসা সজোরে নিক্ষিপ্ত একটী তাঁর আসিয়া ব্ৰাহ্মণের বক্ষঃস্থলে লাগিল। সে তীরে ১৬৩