পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्ञश्व ब्रक्रमाबलौ . মল্পজী সহসা দণ্ডায়মান হইয়া বলিলেন,—“বন্ধগণ, সাক্ষী থাকিও, যাদবরাও আমার বৈবাহিক হইবেন, আদ্য প্রতিশ্রত হইলেন।” সকলে এই প্রস্তাবে সম্মতি প্রকাশ করিলেন। যাদবরাও উচ্চবংশজ। শাহজীর সহিত আপনার কন্যার বিবাহ দিতে কখনই বাসনা করেন নাই, কিন্তু মল্লজীর এই চতুরতা দেখিয়া বিস্মিত হইয়া রহিলেন। : পরদিন যাদবরাও মল্লজীকে নিমন্ত্রণ করিলেন, কিন্তু বৈবাহিক বলিয়া স্বীকার মা করিলে মল্লজী যাইবেন না বলিয়া পাঠাইলেন। যাদবরাও সেরপে স্বীকার করিলেন না, সতরাং মল্লজী আসিলেন না। যাদবরাওয়ের গহিণী যাদবরাও হইতেও বংশমৰ্য্যাদায় অধিক অভিমানিনী । কথিত আছে যে, যাদবরাও রহস্য করিয়া আপন দহিতার সহিত শাহজাঁর বিবাহ দিবেন বলিয়াছিলেন বলিয়া তাঁহার গহিণী তাঁহাকে বিলক্ষণ দুই চারি কথা শনাইয়া দিলেন। মল্লজী সরোষে একটী গ্রামে চলিয়া গেলেন ও প্রকাশ করিলেন যে, ভবানী সাক্ষাৎ অবতীণা হইয়া তাঁহাকে বিপুল অথী দিয়াছেন। মহারাষ্ট্ৰীয়দিগের মধ্যে জনশ্রুতি আছে যে, ভবানী এই সময়ে মল্লজীকে বলিয়াছেন,—মল্লজী! তোমার বংশে একজন রাজা হইবেন, তিনি শম্ভুর ন্যায় গণান্বিত হইবেন, মহারাষ্ট্রদেশে ন্যায়বিচার পুনঃস্থাপন করিবেন, এবং ব্রাহ্মণ ও দেবালয়ের শত্ৰাদিগকে দ্রীভূত করিবেন। তাঁহার সময় হইতে কাল গণনা হইবে ও তাঁহার সস্তানসস্ততি সপ্তবিংশ পর্ষ পৰ্য্যন্ত সিংহাসনারাঢ় থাকিবেন। সে যাহা হউক, মল্লজী যে এই সময়ে বিপলে অর্থ পাইয়াছিলেন তাহার সন্দেহ নাই। " সেই অর্থের দ্বারা আত্মোন্নতির চেস্টা করিলেন ও এ বিষয়ে তাঁহার শ্যালক যোগপালও তাঁহাকে বিশেষ সহায়তা করিয়াছিলেন। অচিরে মল্লজী আহম্মদনগরের সালতানের অধীনে পঞ্চ সহস্ৰ অশ্বারোহীর সেনাপতি হইলেন ও রাজা খেতাব প্রাপ্ত হইয়া সবেণী ও চাকন দাগ এবং তৎপাশ্বাস্থ দেশের ভার প্রাপ্ত হইলেন। তিনি জায়গীরস্বরুপ পনা ও সোপা নগর পাইলেন। তখন আর যাদবরাওয়ের কোন আপত্তি রহিল না। ১৬০৪ খঃ অব্দে মহাসমারোহে শাহজীর সহিত জীজীর বিবাহ হইল, আহমদনগরের সলেতান স্বয়ং সেই বিবাহে উপস্থিত ছিলেন। তখন শাহজীর বয়ঃক্রম ১০ বৎসর মাত্র। কালক্রমে মল্লঙ্গীর মৃত্যুর পর শাহজী পৈতৃক জায়গীর ও পদ প্রাপ্ত হইলেন। এই সময়ে দিল্লীশ্বর আকবরশাহ আহম্মদনগর রাজ্য দিল্লীর অধীনে আনিবার জন্য যুদ্ধ করিতেছিলেন। আকবরশাহ কতক পরিমাণে জয়লাভ করিলেন এবং তাঁহার মৃত্যুর পর সম্রাট জাহাঙ্গীরও সেই উদ্যমে ব্যাপ্ত রহিলেন । এই যুদ্ধকালে শাহজী সন্যস্তে ছিলেন না। ১৬২০ খঃ অব্দে (জাহাঙ্গীরের শাসনকালে) তিনি আহম্মদনগরের প্রধান সেনাপতি মালীক অশ্বরের অধীনে ছিলেন, ও একটী মহাযুদ্ধে আপন সাহস ও বিক্রম প্রকাশ করিয়া সকলেরই সম্মানভাজন হইয়াছিলেন। জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর পর সমাট শাজিহান সেনাপতি শাহজীকে পশ্চ সহস্ৰ অশ্বারোহীর সেনাপতি করিয়া অনেক জায়গীর দান করেন। কিন্তু সমাটদিগের আদ্যকার অনুগ্রহ কাল থাকে না : তিন বৎসর পর সম্রাট শাহজীর কতকগুলি জায়গীর কাড়িয়া লইলেন। শাহজী বিরক্ত হইয়া বিজয়পরের সুলতানের পক্ষ অবলম্বন করিলেন ও মৃত্যু পৰ্য্যস্ত বিজয়পরের সালতানের অধীনে কায্য করিতে লাগিলেন। - পতনোমুখ আহম্মদনগর রাজ্যের স্বাধীনতার জন্যও শাহজী দিল্লীর সেনার সহিত অনেক যুদ্ধ করিলেন। সুলতান শহহেস্তে পতিত হইলে শাহজাঁ সেই বংশের আর একজনকে সালতান করিয়া সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করিলেন, কতকগুলি বিজ্ঞ ব্রাহ্মণের সাহায্যে দেশ শাসনের সন্দের রীতি স্থাপন করিলেন, বহুসংখ্যক দলগ হস্তগত করিলেন, ও সুলতানের নামে সেনা সংগ্ৰহ করিতে লাগিলেন। সমাট শাজিহান এই সমস্ত দেখিয়া কুদ্ধ হইয়া শাহজী ও তাঁহার প্রভু বিজয়পরের সলেতানকে দমন করিবার জন্য বহুসংখ্যক অশ্বারোহী ও পদাতিক প্রেরণ করিলেন । দিল্লীশ্বরের সহিত যন্ধে করা বিজয়পরের সুলতান বা শাহজীর সাধ্য নহে; কয়েক বৎসর যন্ধের পর সন্ধিস্থাপন হইল; আহমেদনগর রাজ্য বিলুপ্ত হইল (১৬৩৭) । শাহজী বিজয়পরের অধীনে জায়গীরদার ও সেনাপতি রহিলেন, এবং সুলতানের আদেশানুসারে কর্ণাট দেশের অনেক অংশ জয় করিলেন। সতরাং বিজয়পরের উত্তরে পনার নিকট তাঁহার ষেরপ জায়গীর ছিল, দক্ষিণ রুপাট দেশেও সেইরূপ বহল জায়গীর প্রাপ্ত হইলেন। - సి (AG