পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्यञ्शू ब्रक्लनाबलै হইলেন, কোষে খঙ্গ রাখিয়া বলিলেন,—যবেক, তোমার পিতার রক্তে এক্ষণও আমার হস্ত কলুষিত রহিয়াছে, তোমার জীবন লইব না, পথ ছাড়িয়া দাও। • শমশেরখাঁ উত্তর করিলেন না। শমশেরখাঁর নয়ন অগ্নিবৎ জলস্ত। শিবজী আত্মরক্ষার প্রয়াস পাইবার পবেই শমশেরের উক্তজবল খঙ্কা আপন মস্তকোপরি দেখিলেন। শিবজী মহত্তের জন্য প্রাণের আশা ত্যাগ করিয়া ইস্টদেবতা ভবানীর নাম লইলেন, সহস৷ দেখিলেন পশ্চাৎ হইতে একটী বশৰ্ণ আসিয়া খড়াধারী শমশেরকে ভূতলশায়ী করিল। পশ্চাতে দেখিলেন, রঘুনাথজী হাবিলদার! - শিবজী। হাবিলদার! এ কাৰ্য্য আমার সমরণ থাকিবে। কেবল এইমাত্র বলিয়া শিবজী অগ্রসর হইলেন। এই অবসরে গবাক্ষ দিয়া রক্তজ অবলম্বন করিয়া সায়েস্তাখাঁ পলাইলেন। কয়েকজন মাউলী সেই গবাক্ষমখে ধাবমান হইয়াছিল, একজন খঙ্গের আঘাত করিয়াছিল, তাহা সায়েস্তাখাঁর অঙ্গলীতে লাগিয়া একটী অঙ্গলী ছেদন করল, কিন্তু সায়েস্তাখাঁ আর পশ্চাতে না দেখিয়া পলায়ন করিলেন। তাঁহার পত্র আবদলে ফতেখাঁ ও সমস্ত প্রহরী নিহত হইল। তখন শিবজী দেখিলেন ঘর, বারান্দা, প্রাঙ্গণ, রক্তে রঞ্জিত হইয়াছে, স্থানে স্থানে প্রহরিগণের মতদেহ পতিত রহিয়াছে, স্ত্রীলোক ও পলাতকগণের আত্তনাদে প্রাসাদ পরিপরিত হইতেছে, মাউলীগণ মোগলদিগের ধবংসসাধনাথ চারিদিকে ধাবমান হইতেছে । মশালের অপস্ট আলোকে কাহারও ৷ মতদেহ, কাহারও ছিন্নমুণ্ড, কোথাও বা রক্ত-প্রণালী ভীষণ দেখাইতেছিল। তখন শিবজী আপন মাউলীদিগকে নিকটে ডাকিলেন। সকল সময়ে, সকল যুদ্ধেই, তিনি জয়লাভ করিলে পর ব্যথা প্রাণনাশ দেখিলে বিরক্ত হইতেন, এবং শত্ররও সেরুপ প্রাণনাশ যাহাতে না হয় সেজনা যথেস্ট যত্ন করিতেন। শিবজী আদেশ করিলেন,—আমাদের কায্য সিদ্ধ হইয়াছে, ভীর সায়েস্তাখাঁ আর আমাদের সহিত যুদ্ধ করিবে না, এক্ষণে দ্রুতবেগে সিংহগড়াভিমুখে চল । অন্ধকার রজনীতে শিবজী অনায়াসে পনা হইতে বহিগতি হইয়া সিংহগড়ের দিকে ধাবমান হইলেন। প্রায় দুই ক্রোশ আসিয়া মশাল জালিবার আদেশ দিলেন। বহুসংখ্যক মশাল জম্বলিল। পনো হইতে সায়েস্তাখাঁ দেখিতে পাইলেন, মহারাষ্ট্র সেনা নিরাপদে সিংহগড়ে উঠিল। পরদিন প্রাতে কুদ্ধ মোগলগণ সিংহগড় আক্রমণ করিতে আসিল, কিন্তু গড়ের কামানের গোলায় ছিন্নভিন্ন হইয়া পলায়ন করিল। কত্তাজী গজের ও তাঁহার অধীনস্থ মহারাষ্ট্ৰীয় অশ্বারোহিগণ বহদের পয্যন্ত পশ্চাদ্ধাবন করিয়া গেল। অলপ বিপদে সাহসী যোদ্ধার আরও যুদ্ধপিপাসা বৃদ্ধি হয়, কিন্তু সায়েন্তাখাঁ সেরাপ যোদ্ধা ছিলেন না। তিনি আরংজীবকে একখানি পত্র লিখিলেন, তাহাতে নিজ সৈন্যের যথেস্ট নিন্দা করিলেন, ও যশোবস্ত অথে বশীভূত হইয়া শিবজীর পক্ষাচরণ করিতেছে এইরুপ জানাইলেন। আরংজীব দুই জনকেই অকমণ্য বিবেচনা করিয়া ডাকাইয়া পাঠাইলেন, এবং নিজপত্রে সুলতান মোয়াজীমকে দক্ষিণে পাঠাইলেন, পরে তাঁহার সহায়তা করিবার জন্য যশোবস্তকে পনবার পাঠাইলেন। ইহার পর এক বৎসরের মধ্যে বিশেষ কোন ষদ্ধকাষ্য হইল না। ১৬৬৪ খঃ অব্দের প্রারম্ভেই শিবজীর পিতা শাহজীর কাল হওয়ায় শিবজী সিংহগড়েই শ্রাদ্ধাদি সমাপন করিয়া পরে রায়গড়ে যাইয়া রাজা উপাধি গ্রহণ করিলেন, ও নিজনামে মাদ্রা অঙ্কিত করিতে লাগিলেন। আমরা এখন এই নবভূপতির নিকট বিদায় লইব। পাঠক ! বহুদিবস হইল তোরণ দাগ হইতে আসিয়াছি; চল, এই অবসরে একবার সেই দগে যাইয়া কি হইতেছে দেখি।

CAH