পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्धश्व ब्रछनावलौ রঘনাথ প্রাপ্ত হন। রঘুনাথ চন্দ্ররাওকে পিতার পরাতন ভূত্য ও আপন বাল্যসহৎ বলিয়া চিনিলেন, তাঁহাকে সদ্য বা ভগিনীপতি বলিয়া জানিতেন না, সতরাং তিনি সানন্দে তাঁহায় সহিত আলাপ করিতে যাইলেন। চন্দ্ররাও রঘুনাথকে অভ্যর্থনা করিলেন, কিন্তু অলপভাষী জন্মলাদারের ললাট অদ্য পুনরায় কুঞ্চিত হইল। দিনে দিনে রঘুনাথজীর সাহস ও বিক্রমের যশ অধিক বিস্তার হইতে লাগিল, চন্দ্ররাওয়ের চিন্তা গভীরতর হইল। চন্দ্ররাওয়ের স্থির প্রতিজ্ঞা কখনও বিচলিত হইবে না, গভীর মন্ত্রণ কখনও ব্যথা হইত না। অদ্য রঘুনাথজী দৈবযোগে প্রাণে রক্ষা পাইলেন, কিন্তু বিদ্রোহী কপটাচারী বলিয়া শিবজাঁর কার্ষ্য হইতে দ্রীভূত হইলেন। চন্দ্ররাও শিবজীর নিকট কয়েক দিনের বিদায় গ্রহণ করিয়া বাটী যাইলেন। পাঠক! চল, আমরাও একবার বড়লোকের বাটী সভয়ে প্রবেশ করি। - ·魯 জন্মলাদার বাটী আসিলে, বহিদ্বারে নহবৎ বাজিতে লাগিল, অসংখ্য দাস-দাসী সম্মুখে আসিল, অনেক প্রতিবেশী সাক্ষাৎ করিতে আসিলেন। অচিরে চন্দ্ররাওয়ের আগমন-বাত্ত সমগ্র দেশে রাষ্ট্র হইল। জন্মলাদারের বাটীর অন্তঃপরে ধুমধাম পড়িয়া গেল, সেই ধুমধামের মধ্যে শাস্তনয়না ক্ষীণাঙ্গী লক্ষমীবাই নীরবে স্বামীর অভ্যর্থনার আয়োজন করিতে লাগিলেন। লক্ষীবাই যথার্থ লক্ষীস্বরপো, শান্ত, ধীর, বদ্ধিমতী, পতিব্ৰতা; বাল্যকালে পিতার , আদরের কন্যা ছিলেন, কিন্তু কোমল বয়সে বিদেশে অপরিচিত লোকের মধ্যে অপভাষী কঠোরস্বভাব স্বামীর হস্তে পড়িলেন, বক্ষ হইতে উৎপাটিত কোমল পাপের ন্যায় দিন দিন শতক হইতে লাগিলেন। নয় বৎসরের বালিকার জীবন শোকাচ্ছন্ন হইল, কিন্তু সে শোক কাহাকে জানাইবে ? কে দুটা কথা বলিয়া সাস্তুনা করিবে ? বালিকা পাবকথা স্মরণ করিত, পিতার কথা সমরণ করিত, প্রাণের সহোদরের কথা স্মরণ করিত, আর গোপনে আশ্রবেষণ করিত। শোকে পড়িলে, কণ্টে পড়িলে, আমাদের বৃদ্ধি তীক্ষয় হয়, আমাদের হৃদয় ও মন সহিষ্ণ হয় । বালিকা দুই এক বৎসরের মধ্যেই সংসারের কায্য করিতে লাগিলেন, স্বামীর সেবায় রত হইলেন। হিন্দী রমণীর পতি ভিন্ন আর কি গতি আছে ? স্বামী যদি সহৃদয় ও সদয় হয়েন, নারী আনন্দে ভাসিয়া তাহার সেবা করেন, স্বামী নিন্দয় ও বিমুখ হইলেও নারীর পতিসেবা ভিন্ন আর কি উপায় আছে ? কিন্তু যদিও চন্দ্ররাওয়ের হৃদয়ে অভিমান, জিঘাংসা ও উচ্চাভিলাষ বিরাজ করিত, তথাপি তিনি অসহায় নারীর প্রতি নিদায় ছিলেন না। নম্নমুখী, নম্ন-হৃদয়া লক্ষীবাইয়ের পরিচযৰ্যায় চন্দ্ররাও তুষ্ট হইতেন ; যুদ্ধবিগ্রহ শেষ হইলে পতিপরায়ণা লক্ষীবাইয়ের নিকটে আসিয়া শান্তি লাভ করিতেন ; লক্ষীবাইয়ের স্নিগ্ধ কথাগুলি শুনিয়া তাহাকে সাদরে হৃদয়ে ধারণ করিতেন। লক্ষীবাই তখন জগতের মধ্যে আপনাকে ভাগ্যবতী মনে করিতেন, স্বামীর সামান্য যত্বে তিনি পলকিত হইতেন, স্বামীর একটী মিন্ট কথায় তাহার্ক হৃদয় প্লাবিত হইত। যে পাপ চারাটীকে উদ্যান হইতে আনিয়া গহমধ্যে অন্ধকারে রাখা যায় সে চারাটী গহমধ্যস্থ একটী আলোকরেখার দিকে কত পলেকের সহিত ধায়! এইরপে সংসার-কায্য ও পতিসেবায় এক বৎসরের পর আর এক বৎসর অতিবাহিত হইতে লাগিল, ধীর শান্ত লক্ষয়ী যৌবন প্রাপ্ত হইলেন, কিন্তু সে যৌবন কি শান্ত, নিরদ্বেগ! লক্ষী পবের কথা প্রায় ভুলিয়া গেলেন, অথবা যদি সায়ংকালে কখন রাজস্থানের কথা মনে উদয় হইত, বাল্যকালের সখে, বাল্যকালের ক্রীড়া ও প্রাণের ভ্রাতা রঘুনাথের কথা মনে হইত, যদি নিঃশব্দে দই-এক বিন্দ আশ্রয় সেই সন্দের রক্তশন্য গণ্ডস্থল দিয়া গড়াইয়া যাইত, লক্ষী সে অশ্রুবিন্দ মোচন করিয়া পনরায় গহকায্যে প্রবত্ত হইতেন। অদ্য চন্দ্ররাও আহারে বসিয়াছেন, লক্ষীবাই পাশ্বে দণ্ডায়মান হইয়া ব্যজন করিতেছেন। লক্ষীবাইয়ের বয়ঃক্রম এক্ষণে সপ্তদশ বর্ষ। অবয়ব কোমল, উক্তজবল ও লাবণ্যময়, কিন্তু ঈষৎ ক্ষীণ। ভ্রযে়াগল কি সন্দের ও সচিঙ্কণ, যেন সেই পরিকার শান্ত ললাটে তুলিম্বারা অঙ্কিত। শান্ত, কোমল কৃষ্ণ নয়ন দটীতে যেন চিন্তা আপনার আবাসস্থান করিয়াছে। গণ্ডস্থল সন্দের সচিকুণ, কিন্তু ঈষৎ পান্ড্রবণ সমস্ত শরীর শাস্ত ও ক্ষীণ। যৌবনের অপরাপ সৌন্দৰ্য । বিকশিত রহিয়াছে, কিন্তু যৌবনের প্রফুল্লতা উন্মত্ততা কৈ ? আহা! রাজস্থানের এই অপর্বে পাপটী মহারাষ্ট্রে সৌন্দৰ্য্য ও সঘোণ বিতরণ করিতেছে, কিন্তু জীবনাভাবে ঈষৎ শকে। ミOO