পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবত সময়ের পর কয়েক মাসের মধ্যেই দিল্লীতে সংবাদ আসিল, অবমানিত, অকৃতাৰ্থ জয়সিংহ প্রাণত্যাগ করিয়াছেন! তখনকার ইতিহাস-লেখক কেহ কেহ সন্দেহ করিয়াছেন, , সম্যক্টর আদেশে বিষ প্রয়োগে জয়সিংহের মৃত্যু হয়। অনেকক্ষণ পর দীঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া রামসিংহ বলিলেন,-প্রভু! আমার একটী যাদ্ধা : আছে । আরংজীব। নিবেদন করন। রামসিংহ। শিবজী যখন দিল্লী আগমন করিয়াছিলেন, পিতা তাঁহাকে বাক্য দান করিয়াছিলেন যে দিল্লীতে শিবজীর কোনও আপদ ঘটিবে না। আরংজীব। আপনার পিতা সে-কথা আমাদের অবগত করাইয়াছেন । রামসিংহ। রাজপতদিগের মধ্যে বাক্য দান করিয়া তাহা লঙ্ঘন হইলে অতিশয় নিন্দার বিষয়। পিতার প্রার্থনা ও দাসের প্রার্থনা যে শিবজীর যে কোনও দোষ হইয়া থাকে, প্ৰভু ক্ষমা করিয়া তাঁহাকে বিদায় দিন। আরংজীব ক্রোধ সংবরণ করিয়া ধীরে ধীরে বলিলেন,—সমাটের যাহা উচিত কাৰ্য্য সম্রাট তাহা করিবেন, সে বিষয়ে আপনি চিন্তিত হইবেন না। শিবজী নামে দ্বিতীয় একটী কীট সম্রাটের সেই বিস্তীণ মন্ত্রণাজালে পতিত হইয়াছেন দানেশমন্দ ও রামসিংহ তাঁহাকে উদ্ধার করিতে পারিলেন না! জয়সিংহের যে দোষ, শিবজীরও সেই দোষ। শিবজীও সন্ধিস্থাপনাবধি প্রাণপণে দিল্লীর কাৰ্য্য করিয়াছেন, নিজ সৈন্য দ্বারা অনেক দাগ দিল্লীর অধীনে আনিয়াছিলেন, কিন্তু তাঁহারও বিপলে ক্ষমতা। আরংজীব কোনও ভূত্যের উপর বিপলে ক্ষমতা ন্যস্ত করিতে পারেন না কাহাকেও বিশ্বাস করেন না। যাহাদিগকে অবিশ্বাস করা যায়, তাহারা ক্রমে অবিশ্বাসের যোগ্য হয়। আরংজীবের জীবিতকালের মধ্যেই মহারাষ্ট্ৰীয়েরা ও রাজপতেরা দিল্লীর বিরুদ্ধে যে ভীষণ যুদ্ধানল প্রজালিত করিল, মোগল সাম্রাজ্য তাহাতে দগ্ধ হইয়া গেল। সপ্তবিংশ পরিচ্ছেদ ঃ পীড়া দরে গেল জটাজট | --মধ্যসদন দত্ত । শিবজীর অতিশয় সঙ্কটজনক এক পীড়া হইয়াছে, সমগ্র দিল্লী নগরে এ সংবাদ প্রচারিত হইল। দিবানিশি শিবজীর গহের গবাক্ষ ও দ্বার রুদ্ধ, দিবানিশি চিকিৎসক আসিতেছেন। এ ভীষণ রোগের উপশম সন্দেহস্থল, আদ্য যেরপে রোগবৃদ্ধি হইয়াছে কল্য পৰ্য্যন্ত জীবিত থাকা অসম্ভব। কখন কখন বা সংবাদ রাষ্ট্ৰ হইতেছে যে শিবজী আর নাই! রাজপথ দিয়া বহুসংখ্যক লোক গমনাগমন করিত ও সেই রুদ্ধ গবাক্ষের দিকে অঙ্গলি নিন্দেশ করিত। অশ্বারোহী সৈনিক ও সেনাপতিগণ ক্ষণেক অশ্ব থামাইয়া প্রহরীদিগের নিকট শিবজীর সংবাদ জিজ্ঞাসা করিতেন। শিবিকারোহী রাজা বা মনসবদার শিবজীর গহের সম্মুখে আসিয়া একবার উঠিয়া সেই দিকে দস্টিপাত করিতেন। শিবজী কিরাপ আছেন, তিনি উদ্ধার পাইবেন কি না, তিনি কল্য পৰ্য্যন্ত জীবিত থাকিবেন কি না, এইরুপ নানা কথা নগরবাসী সকলেই বাজারে, পথে, ঘাটে, সব্ব সময়ে আন্দোলন করিত। আরংজীব সব্বদাই শিবজীর রোগের সমাচার জিজ্ঞাসা করিয়া পাঠাইতেন, তথাপি গ্রহের চারিদিকে যে প্রহরী সন্নিবেশিত ছিল তাহা পন্বেমত রাখিলেন। লোকের নিকট শিবজীর রোগের বিষয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করিতেন, মনে মনে ভাবিতেন, যদি এই রোগেই শিবজীর মৃত্যু হয়, তাহা হইলে আমার বিশেষ কোন নিন্দা না হইয়াই অনায়াসে কন্টকোদ্ধার হইবে। كبير সন্ধ্যাকাল সমাগত, এরপে সময়ে একজন প্রাচীন সম্প্রাস্ত মসলমান হাকিম শিবজীর গহদ্বারের নিকট অবতীর্ণ হইলেন। প্রহরিগণ জিজ্ঞাসা করিল,—কি উদ্দেশ্যে শিবজীর সাক্ষাৎ ミミbf