পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्धश्च ब्रक्रमाबलमै করতে লাগিলেন। “দিল্লীকা লাভ”র ছড়াছড়ি হইতে লাগিল, তাহাতে আর কেহু, পন্তিয়াছিলেন কিনা বলিতে পারি না, কিন্তু আরংজীব অতি শীঘ্রই পস্তিয়াছিলেন । gđ শিবজী কেবল মিস্টান্ন প্রেরণ করিয়া সন্তুষ্ট হইতেন না, মিস্টান্ন ক্রয় করাইয়া নিজের গহে আনিতেন ও অতি প্রকান্ড প্রকাণ্ড আধার সমস্ত নিম্নমাণ করাইয়া স্বয়ং মিস্টান্ন সাজাইয়া প্রেরণ করিতেন। সে আধার কখন কখন তিন চারি হাত দীঘ হইত, আট কি দশ জন লোক বহিয়া লইয়া যাইত। কয়েকদিন এইরনুপে মিস্টান্ন বিতরিত হইতে লাগিল। একদিন সন্ধ্যার সময় এইরুপ দুইটী প্রকান্ড মিস্টান্নের আধার শিবজীর গহ হইতে বাহির হইল। প্রহরিগণ জিজ্ঞাসা করিল,—এ কাহার বাটীতে যাইবে বাহকেরা উত্তর করিল,— রাজা জয়সিংহ-সদনে । প্রহরিগণ। তোমাদের প্রভু আর কত দিন মিস্টান্ন পাঠাইবেন ? বাহকেরা। অদ্যই শেষ । মিস্টান্নের ভার লইয়া বাহকগণ চলিয়া গেল। কতক পথ যাইয়া বাহকেরা একটী অতি সঙ্গোপন স্থানে সন্ধ্যার অন্ধকারে সেই দুইটী আধার নামাইল। বাহকগণ চারিদিকে চাহিয়া দেখিল, জনমাত্র নাই, কেবল সন্ধ্যার বায় রহিয়া রহিয়া বহিয়া যাইতেছে। বাহকেরা একটী ইঙ্গিত করিল, একটী আধার হইতে শিবজী, অপরটি হইতে শম্ভুজী বাহির হইলেন। উভয়ে জগদীশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। বিলম্ব না করিয়া উভয়ে ছদ্মবেশে দিল্লীর প্রাচীরাভিমুখে যাইলেন। সন্ধ্যার সময় লোক অতি অলপ, তথাপি রাজপথে দুই একজন লোক যখন নিকট দিয়া যায়, শম্ভুজীর হৃদয় ভয়ে ও উদ্বেগে কম্পিত হইয়া উঠে। শিবজীর চিরজীবন এইরুপ বিপদপণ", তাঁহার পক্ষে এ বিপদ কিছল নতন নহে, তথাপি তাঁহারও হৃদয় উদ্বেগশন্যে ছিল না। উভয়ে কম্পিতহদয়ে প্রাচীর পার হইলেন। একজন প্রহরী জিজ্ঞাসা করিল,—কে যায় ? শিবজী উত্তর করিলেন,—গোস্বামী। হরেনাম হরেনাম হরেনামৈব কেবলমা ! প্রহরী। কোথায় যাইতেছ ? শিবজী। মথুরা তীৰ্থস্থানে। কলোঁ নাস্তোব নাস্তোব নাস্তোব গতিরন্যথা । উভয়ে প্রাচীর পার হইলেন । প্রাচীরের বাহিরেও অনেক ধনাঢ্য ও উচ্চপদাভিষিক্ত লোক বাস করিতেন। সে সকল দুই পাশ্বে রাখিয়া শিবজী ও শম্ভুজী তুরায় পথ অতিবাহন করিতে লাগিলেন। দরে একটী বক্ষতলে একটী অশ্ব বদ্ধ রহিয়াছে দেখিলেন। অতি সতকভাবে সেইদিকে দেখিলেন, তন্নজী-বণিত অশ্বই বটে। জিজ্ঞাসা করিলেন,—ভাই অশ্বরক্ষক ! তোমার নাম কি ? রক্ষক। জানকীনাথ । শিবজী। কোথায় যাইবে ? রক্ষক। মথুরা। শিবজী বলিলেন,—হাঁ, এই অশ্ব বটে। শিবজী অশ্বে আরোহণ করিলেন, পশ্চাতে শম্ভুজীকে উঠাইয়া লইলেন, মথুরার দিকে চলিলেন। অশ্বরক্ষক পশ্চাৎ পশ্চাৎ পদব্রজে চলিতে লাগিল । অন্ধকার নিশীথে পল্লী বা প্রাস্তর দিয়া নিববৰ্ণক হইয়া শিবজী পলায়ন করিতেছেন । আকাশে নক্ষত্রগুলি মিট মিট করিতেছে, অলপ অলপ মেঘ এক একবার গগন আচ্ছাদিত করিতেছে, বর্ষাকালে পণ কলেবর যমনা প্রবলবেগে বহিয়া যাইতেছে, পথঘাট কদম বা জলপণ"। শিবজী উদ্বেগপণে হৃদয়ে পলায়ন করিতেছেন। দর হইতে অশ্বের পদশব্দ শ্রত হইল। শিবজী লুকাইবার চেষ্টা করিলেন, কিন্তু সে স্থানে বক্ষ বা কুটীর নাই, অগত্যা পর্বোবৎ গমন করিতে লাগিলেন। তিনজন অশ্বারোহী বেগে দিল্লী অভিমুখে আসিতেছেন, তাঁহাদিগের কোষে অসি। দর হইতে শিবজীর অশ্ব দেখিতে পাইয়া তাঁহারা সেইদিকে অশ্ব প্রধাবিত করিলেন । শিবজীর হৃদয় উদ্বেগে দর-দর করিতে লাগিল। নিকটে আসিয়া একজন অশ্বারোহী জিজ্ঞাসা করিলেন, —কে যায় ?

  • ○ミ