পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

प्रशाब्राष्प्ले छौबूम-ध छाड আহা! সে শোকের গীত শনিয়া শ্রোতৃদিগের নয়নেও জল আস্তি। এরপ চিন্তায় ক্রমে সরযর শরীর শতক হইতে লাগিল, মুখমণ্ডল পাডুবণ ধারণ করিল, নয়ন কালিমাবেষ্টিত হইল। সরলস্বভাব জনাদন এখনও সরযর হৃদয়ের কথা কিছ জানেন না, কিন্তু সরযর শরীরের অবস্থা দেখিয়া যৎপরোনাস্তি চিন্তিত হইলেন, কারণ অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন। নারীর নিকট নারীর মনের কথা গুপ্ত থাকে না, সরয অনেক যত্নে শোক সঙ্গোপন করিলেও তাঁহার সখী ও দাসীগণ তাঁহার গুপ্তকথা কিছর অনুমান করিয়াছিল। তাহারা কথাচ্ছলে বদ্ধ জনাদনকে বলিল,—সরযর বয়স হইয়াছে, বিবাহ স্থির করন। সরযর কানে এ কথা উঠিল । সরয বলিয়া পাঠাইলেন,—পিতাকে বলিও আমার বিবাহে রাচি নাই, চিরকাল অবিবাহিতা থাকিয়া তাঁহারই পদসেবা করিব। জনান্দন সে কথা মানিলেন না, বিবাহের পাত্র স্থির করিতে লাগিলেন। রাজপুরোহিত দ্বারা পালিতা ভদ্র ক্ষত্রিয়কন্যার পাত্রের অভাব ছিল না, অবশেষে রাজা জয়সিংহের একজন প্রধান সেনানীর সহিত বিবাহ স্থির হইল। সরযর কানে এ কথা উঠিল, সরয শিহরিয়া উঠিলেন। লজার মাথা খাইয়া পিতাকে বলিয়া পাঠাইলেন–পিতাকে বলিও, তিনি অন্য একজন সেনানীকে বাক্যদান করিয়াছিলেন, তিনিই আমার বাগদত্ত পতি। অন্য কাহারও সহিত বিবাহ হইলে ব্যভিচার দোষ ঘটিবে। জনান্দন এ-কথা শুনিয়া রটে হইলেন, সরয়াকে তিরস্কার করিলেন, আবার নিজের ঘরে গিয়া মনের দঃখে কাঁদিলেন। অবশেষে কন্যার আপত্তি গ্রাহ্য না করিয়া বিবাহের দিন স্থির করিলেন, রাজা জয়সিংহকে জানাইলেন। সরয়ার কানে এ-কথা উঠিল। সরয তখন নিজে পিতার পদে লুণ্ঠিত হইয়া উচ্চৈঃস্বরে রোদন করিয়া বলিলেন–পিতা, ক্ষমা করন, এ বিষয়ে ক্ষান্ত হউন, নচেৎ আপনার চিরপালিতা এই অভাগিনী কন্যাকে জন্মের মত হারাইবেন। জনাদন কন্যাকে বকে করিয়া কাঁদিতে লাগিলেন। কিন্তু কন্যার কথা কে গ্রাহ্য করে, পাঁচজন ভদ্রলোকে যেরপে পরামর্শ দেয়, সমাজে থাকিলে সেইরাপ কাজ করিতে হয়। বিবাহের দিন নিকটে আসিতে লাগিল, জনাদন অনেক বুঝাইলেন, অনেক কাঁদিলেন, অনেক তিরস্কার করিলেন। অবশেষে আর সহ্য করিতে না পারিয়া বিবাহের পবেদিন সরষকে বলিলেন,—পাপীয়সি, তোমার জন্য কি আমি এই বদ্ধ বয়সে অবমানিত হইব ? তুই তোর পিতার নিকলঙক কুলে কলঙ্ক দিবি ? ধীরে ধীরে অশ্রুপণ নয়নে সরয উত্তর করিলেন–পিতঃ ! আমি অবোধ, যদি আপনার নিকট কখন কোনও দোষ করিয়া থাকি, মাজ’না করন । কিন্তু জগদীশ্বর আমার সহায় হউন, আমা হইতে আপনার অবমাননা হইবে না। এ কথার অর্থ তখন জনাদন বুঝিলেন না, এ কথার অর্থ তাহার পরদিন বদ্ধ বুঝিতে পারিলেন । বিবাহের দিন কন্যাকে কেহ আর দেখিতে পাইল না। ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ঃ কুটীরে দঃখে সুখে খুল্লনা শরৎকাল ভাবে। আশ্বিনে আসিবেন প্রভু দেবীর উৎসবে। কাত্তিক মাসেতে হইল হিমের প্রকাশ । গহে নাহি প্রাণনাথ করি বনবাস ॥ —মকুন্দরাম চক্রবত্তীর্ণ। শরৎকালের প্রাতের কমনীয় আলোকে বেগবতী নারানদী বহিয়া যাইতেছে, সযকিরণে জলের হিল্লোল হাস্য করিতে করিতে যাইতেছে। সেই সন্দের নদীর উভয় পাশ্বে সন্দের পরিচ্ছদে হাস্য করিতেছে, উত্তর ও পাবদিকে সেইরপে শ্যামবর্ণ ক্ষেত্র অথবা সদরে দই একটী গ্রাম দটি হইতেছে, দক্ষিণ ও পশ্চিমে পর্বতরাশির পর পাবতিরাশি বালসযকিরণে অপরপ শোভা ধারণ করিতেছে। ২৩৫