পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अक्षाब्राष्प्ने छौबन-टाछाङ বালিকা। এর অর্থ কি? এ পপ, এ কণ্ঠমালা, এ গীত কাহার জন্য ? তোর চক্ষ দুইটী যে সদাই হাসিতেছে, তোর ওঠ দটী ষে রক্তে ফেটে পড়িতেছে, তোর সমস্ত শরীর যে লাবণ্যে ঢল ঢল করিতেছে, এ কাহার জন্য ? সরয়। তোমার মা তোমার খোঁপা বধিয়া দেন, গহনা পরাইয়া দেন, সে কাহার জন্য ? বালিকা এবার একট লজিত হইল, বলিল,—মা বলিয়াছেন, আগামী বৎসর আমার বিবাহ হইবে, আমার বর আসিবে। 轟 সরয । আমারও বর আসিবে। বালিকা। সত্য ? সরষরে সহিত বালিকার কথা হইতেছিল এরপে সময় একজন দীঘকায় সন্ন্যাসী “হর হর মহাদেও” শব্দ উচ্চারণ করিয়া নদীতীরে উপনীত হইলেন, সন্ধ্যার স্তিমিত আলোকে তাঁহার বিভূতি-ভূষিত দীঘ শরীর বড় সন্দর দেখাইল। বালিকা ভয়ে পলায়ন করিল, সরয়া তীক্ষদস্টি করিয়া দেখিলেন, সন্ন্যাসী সীতাপতি গোস্বামী! সরযর হৃদয় সহসা কম্পিত হইল, মনের আবেগে সমস্ত শরীর কপিতে লাগিল। কিন্তু সরয সে আবেগ সংযম করিয়া লজা বা ভয় ত্যাগ করিয়া ধীরে ধীরে সন্ন্যাসীর নিকট যাইয়া প্রণাম করিয়া স্থিরস্বরে বলিলেন,—প্রভু, আপনি যে অভাগিনীকে একদিন জনাদনের প্রাসাদে দেখিয়াছিলেন, তাহাকে অদ্য এই কুটীরে দাসীকায্যে নিযুক্ত দেখিতেছেন। পিতা কলঙ্কিনী বলিয়া আমাকে দ্রীকৃত করিয়াছেন, কিন্তু ভগবান জানেন আমি বাগদত্ত পতির অনাচারিণী, ইহা ভিন্ন আমার অন্য দোষ নাই । সন্ন্যাসীর নয়ন জলে পণ্য হইল, ধীরে ধীরে বলিলেন,—রঘুনাথের জন্য এত কস্ট সহ্য করিয়াছ ? সরয । নারী যতদিন পতির নাম জপিতে পারে, ততদিন কটকে কট বলিয়া বোধ করে না। সন্ন্যাসীর বক্ষঃস্থল সফীত হইতে লাগিল। সরয আবার বলিলেন,—প্রভুর সহিত কি সেই দেবপরীষের সাক্ষাৎ হইয়াছিল ? গোস্বামী। হইয়াছিল। সরয়। প্রভু তাঁহাকে দাসীর কথা জানাইয়াছিলেন ? গোস্বামী। জানাইয়াছিলাম । সরয়া। কি জানাইয়াছিলেন ? গোস্বামী। আপনার একটী বাক্য, একটী অক্ষরও বিস্মত হই নাই। আমি তাঁহাকে বলিয়াছিলাম,—সরয রাজপতবালা, জীবন অপেক্ষা যশ অধিক জ্ঞান করে। সরয যতদিন জীবিত থাকিবে, রঘুনাথকে কলঙ্কশন্য বীর বলিয়া তাঁহারই যশোগীত গাইবে। সরয । ভাল। গোস্বামী। আমি তাঁহাকে আরও বলিয়াছিলাম, যদি কত্তব্য-সাধনে তাঁহার প্রাণবিয়োগ হয়, সরয তাঁহার যশোগীত গাইতে গাইতে উল্লাসে নিজ প্রাণ বিসজান দিবে। সরয । ভাল। গোস্বামী । আমি তাঁহাকে আরও বলিয়াছিলাম, যে সরয তাঁহার উন্নত উদ্দেশ্য প্রতিরোধ করিবে না । রঘনাথ অসহস্তে যশের পথ পরিকার করন, যিনি জগতের আদিপর্ষ তিনি তাঁহার সহায় হইবেন। উদ্বেগ-গদগদ বরে সরয জিজ্ঞাসা করিলেন--তিনি কি উত্তর প্রদান করিয়াছেন ? জলন্ত স্বরে গোস্বামী উত্তর করিলেন,—রঘুনাথ উত্তর দান করেন নাই, কেবল আপনার কথাগুলি হৃদয়ে ধারণ করিয়া অসাধ্য সাধন করিয়াছেন, অসিহস্তে যশের পথ পরিস্কার কারয়াছেন। 曲 সেই সন্ধ্যার অন্ধকারে গোস্বামীর নয়ন ধক ধক করিয়া জনলিতেছিল, সেই নদীতীরে ও বক্ষমধ্যে গোস্বামীর জলন্ত বাক্যগুলি বার বার প্রতিধৰনিত হইতে লাগিল। “যিনি জগতের আদিপরে্ষ তাঁহাকে প্রণাম করি।”—এই বলিয়া সরযবালা আকাশের দিকে লক্ষ্য করিয়া যোড় করে প্রণাম করিলেন। গোস্বামীও জগতের আদিপর্ষকে লক্ষ্য করিয়া প্রণাম করিলেন । ૨૭ જ