পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्धश्च ब्रष्क्रनाबली তোমার ভাগ্য মন্দ, পনরায় উন্নতপদ লাভ করিয়া সৈন্যমধ্যে আসিয়াছ। চন্দ্ররাওয়ের স্থিরপ্রতিজ্ঞা জীবনে কখন নিৰ্ম্মফল হয় নাই, এখনও হইবে না। অন্য উপায় ত্যাগ করিলাম, এই অসি দ্বারা তোমার হৃদয় বিদ্ধ করিব, হৃদয়ের শোণিত পান করিয়া এ ভীষণ পিপাসা নিৰ্বাণ করিব। ভীর! অদ্য আমার হস্তে রক্ষা নাই। রোষে রঘুনাথের নয়ন অগ্নিবৎ জনলিতেছিল, কম্পিত্যবরে বলিলেন,—পামর সম্মুখ হইতে দরে হ, নচেৎ আমি পবিত্র প্রতিজ্ঞা বিস্মত হইব, তোর পাপের দণ্ড দিব। চন্দ্ররাও। ভীর! এখনও যুদ্ধে পরামখে ? তবে আরও শোন। উজয়িনীর যুদ্ধে যে তীরে তোর পিতার হৃদয় বিদীর্ণ হইয়াছিল, সে শত্রনিক্ষিপ্ত নহে, চন্দ্ররাও তোর পিতৃহন্তা ! রঘুনাথ আর নয়নে কিছল দেখিতে পাইলেন না, কণে শনিতে পাইলেন না, রোষে অসি নিকোষিত করিয়া চন্দ্ররাওকে আক্রমণ করিলেন। চন্দ্ররাও ক্ষীণহস্তে অসিধারণ করেন নাই, অনেকক্ষণ যুদ্ধ হইল, উভয়ের অসিতে উভয়ের ঢাল ক্ষত হইল, শরীরও ক্ষত বিক্ষত হইয়া গেল, বর্ষার ধারার ন্যায় উভয়ের শরীর দিয়া রক্ত বহিতে লাগিল। চন্দ্ররাও বলে নান নহেন, কিন্তু রঘুনাথ দিল্লীতে চমৎকার অসিযুদ্ধ শিক্ষা করিয়াছিলেন। অনেকক্ষণ যুদ্ধের পর তিনি চন্দ্ররাওকে পরাস্ত করিলেন, তাঁহাকে ভূমিতে পাতিত করিয়া তাঁহার বক্ষঃস্থলে জান স্থাপন করিলেন, পরে বলিলেন,—পামর! অদ্য তোর পাপরাশির প্রায়শ্চিত্ত হইল, পিতার মৃত্যুর পরিশোধ হইল। মৃত্যুর সময়েও চন্দ্ররাও নিভীক, তিনি বিকট হাস্য হাসিয়া বলিলেন,—আর তোর ভগিনী বিধবা হইল, সে চিন্তা করিয়া সুখে প্রাণবিসত্তজন করিব। বিদ্যুতের ন্যায় সমস্ত কথা তখন রঘুনাথের মনে উপলব্ধি হইল! এই জন্য লক্ষয়ী স্বামীর নাম করেন নাই, এই জন্য চন্দ্ররাওয়ের অনিস্ট না হয়, প্রার্থনা করিয়াছিলেন । পিতৃহন্তা রক্তপিশাচ চন্দ্ররাও বলপবেক প্রাণের লক্ষয়ীকে বিবাহ করিয়াছে! রোষে রঘুনাথের নয়ন দিয়া অগ্নি বহির্গত হইতে লাগিল, কিন্তু তাঁহার উন্নত অসি চন্দ্ররাওয়ের হৃদয়ে স্থাপিত হইল না। তিনি ধীরে ধীরে চন্দ্ররাওকে ছাড়িয়া দিয়া দন্ডায়মান হইলেন। রহিয়াছেন। চন্দ্ররাও অসিযুদ্ধে পরাজিত হইয়া ধলি ও কন্দ্যমে ধনসরিত হইয়া বিকট অসরের ন্যায় আরক্ত নয়নে রঘুনাথের দিকে চাহিতে লাগিলেন। রঘুনাথ পিতার হত্যাকথা ও ভগিনীর অবমাননাকথা সমরণ করিয়া রোষে, অভিমানে ও জিঘাংসায় বিদগ্ধচেতা, অথচ শাস্তিদানে অপারক হইয়া চিত্রাপিত বত্ৰহস্তার ন্যায় দণ্ডায়মান রহিলেন। এমন সময় বক্ষের অন্তরাল হইতে সহসা একজন যোদ্ধা নিৰ্ম্মকান্ত হইলেন । উভয়ে সভয়ে দেখিলেন—শিবজী! শিবজী কোন কথা কহিলেন না, কিছু জিজ্ঞাসা করিলেন না। আপনার সহচর চারিজন সৈন্যকে ইঙ্গিত করিলেন । সেই চারিজন সৈনিক নিস্তন্ধে চন্দ্ররাওয়ের নিকট আসিয়া তাঁহার হস্ত হইতে অসি ও চৰ্ম্ম কাড়িয়া লইয়া তাঁহার হস্তদ্বয় পশ্চাতে বদ্ধ করিয়া বন্দী করিয়া লইয়া গেল। শিবজী অদশ্য হইলেন, রঘুনাথ চকিত হইয়া দন্ডায়মান রহিলেন। পরদিন প্রাতে চন্দ্ররাওয়ের বিচার। তিনি রঘুনাথের পিতাকে হনন করিয়াছিলেন, সে দোষের বিচার নহে; রঘুনাথকে কল্য অন্যায় আক্রমণ করিয়াছিলেন, সে দোষের বিচার নহে। রন্দ্রমণ্ডল-দগে আক্রমণের পর্বে শত্রর রহমৎখাঁকে চন্দ্ররাওই গনপ্ত সংবাদ দিয়াছিলেন, তাহার প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে। অদ্য তাহারই বিচার। তাঁহাকে ভদ্রাচরণ পবেক ছাড়িয়া দিয়াছিলেন, রহমৎখাঁ স্বাধীনতা প্রাপ্ত হইয়া আপন প্রভু বিজয়পুরের সুলতানের নিকট গমন করিয়াছিলেন। জয়সিংহ যখন বিজয়পরে আক্রমণ করেন তখন রহমৎখাঁ আপন নৈসগিক সাহসের সহিত যুদ্ধ করেন, একটী যুদ্ধে অতিশয় আহত হইয়া জয়সিংহের বন্দী হয়েন। জয়সিংহ তাঁহাকে আপন শিবিরে আনাইয়া অনেক যত্ন ও শশ্রেষা করিয়াছিলেন, কিন্তু সে রোগ আরাম হইল না, তাহাতেই রহমতখাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পবেদিন জয়সিংহ রহমৎখাঁকে জিজ্ঞাসা করিলেনু—খীসাহেব! আপনার আর অধিক পরমায় নাই, আমার সমস্ত যত্ন ও চিকিৎসা ব্যথা হইল। এক্ষণে যদি আপনার কোন আপত্তি না থাকে তবে একটী কথা জিজ্ঞাসা করি। 之88