পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्ञश्म ब्रकनाबजनै রঘুনাথ। প্রভু দুই একটী যুদ্ধে এ দাস কাৰ্য্য করিতে সমর্থ হইয়াছিল, প্রভুও দাসকে অভিলষিত পরস্কার দিতে স্বীকৃত । অদ্য সেই পুরস্কার y চন্দ্ররাওকে বিনা দণ্ডে মুক্ত করন। রোধে শিবজীর নয়ন হইতে অগ্নিকণা বাহির হইতেছিল; গজন করিয়া বলিলেন,রঘুনাথ। রঘুনাথ ! কখন কখন আমাদের উপকার করিয়াছিলে বলিয়া অদ্য আমাদিগের বিচার অন্যথা করিতে চাহ ? রাজ-আদেশ অন্যথা হয় না; তুমিও আপনার বীরত্বের কথা আপনি বলিতে ক্ষান্ত হও । - এ তিরস্কার বাক্যে রঘুনাথের মুখ আরক্ত হইয়া উঠিল। তিনি ধীরে ধীরে কম্পিত্যবরে উত্তর করিলেন,—প্রভু! পরস্কার চাহা দাসের অভ্যাস নাই। অদ্য জীবনের মধ্যে প্রথমবার পুরস্কার চাহিয়াছি, প্রভু যদি এ পরিস্কার দানে অসম্মত হয়েন এ দাস দ্বিতীয়বার চাহিবে না। দাসের কেবল এই মাত্র ভিক্ষা, প্রভু সদয় হইয়া তাহাকে বিদায় দিন, রঘুনাথ সৈনিকের ব্ৰত ত্যাগ করিবে, পুনরায় গোস্বামী হইয়া দেশে দেশে ভিক্ষা করিতে থাকিবে। শিবজী ক্ষণেক নিস্তব্ধ ও নিপন্দ হইয়া রহিলেন । তখন একজন অমাত্য নিকটে আসিয়া কানে কানে জানাইল, চন্দ্ররাও রঘুনাথের ভগিনীপতি, সেই জন্য রঘুনাথ ভগিনীপতির প্রাণভিক্ষা করিতেছেন। তখন বিস্ময়পণে হইয়া শিবজী চন্দ্ররাওকে খালাস দিবার আদেশ করিলেন। শেষে বজ্রনাদে বলিলেন,—যাও চন্দ্ররাও, শিবজীর রাজ্য হইতে বহিস্কৃত হও । অন্য দেশে যাও, অন্য আত্মীয় কুটন্বৈকে বধ কর, অন্য মিত্রের সব্বনাশ সাধন কর, শত্রর নিকটে উৎকোচ গ্রহণ, ষড়যন্ত্র ও বিদ্রোহাচরণ করিতে করিতে পাপজীবনের অবশিস্ট ভাগ সমাপ্ত কর। চন্দ্ররাও ভীর নহেন। ধীরে ধীরে ক্ৰোধ-জজরিত শরীরে রঘুনাথের নিকট যাইয়া বলিলেন,—বালক ! তোর দয়া আমি চাহি না, তোর দেওয়া জীবন আমি তুচ্ছ করি। পরক্ষণেই আপন ছুরিকা নিজ বক্ষঃস্থলে স্থাপন করিয়া অভিমানী ভীষণ-প্রতিজ্ঞ চন্দ্ররাও জমেলাদার আপনার চিরনিকুতি সাধন করিলেন। জীবনশন্য দেহ সভাস্থলে পতিত হইল! পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ ঃ ভ্রাতা ভগিনী সত পরিবার, কেবা বল কার, যেমত বক্ষের ছায়া। জলবিম্বব প্রায় আমাদের আখ্যায়িকা শেষ হইয়াছে; এক্ষণে উপন্যাস-লিখিত ব্যক্তিদিগের বিষয় দলই একটী কথা বলিয়া বিদায় লইব । পাইয়া আনন্দাশ্র বর্ষণ করিতে লাগিলেন। তিনি পুলকিত হৃদয়ে রঘুনাথকে আহবান করিলেন, সানন্দহদয়ে শভেদিনে কন্যাদান করিলেন। সরযর সখ কে বর্ণনা করিবে ? চারি বৎসর যে দেবকাস্তির জপ করিয়াছিলেন, সেই পরষদেব যখন সরষকে কোমল হৃদয়ে ধারণ করিলেন, সরযর ওঠে উষ্ণ ওঠে স্থাপন করিলেন, তখন সরয উন্মাদিনী হইলেন। আর রঘুনাথ ?—রঘুনাথ তোরণদগে যে স্বপ্ন দেখিয়াছিলেন, তাহা অদ্য সার্থক হইল। সেই প্রিয় কণ্ঠমালা বার বার সরযর হৃদয়ে দোলাইয়া দিলেন, সেই পাপবিনিন্দিত দেহ হৃদয়ে ধারণ করিলেন, সেই বিশাল স্নেহপণ নয়নের দিকে চাহিয়া চাহিয়া জগৎ বিস্মত হইলেন! সরয তাঁহার সপ্তমবর্ষীয়া “দিদি"কে বিস্মত হইলেন না। রঘুনাথের অনুরোধে শিবজী গোকণকে একটী জায়গীর দান করিলেন, ও গোকর্ণের পত্র ভীমজীকে উন্নীত করিয়া হাবিলদার পদে নিযুক্ত করিলেন। ミ8○