পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজপত জীবন-সন্ধ্যা প্রথম পরিচ্ছেদ ঃ আহেরিয়া ভুবঃ কপমিব জনয়তা চরণশব্দেন, কণাকৃষ্টজানান্ট মদকলকুরর-কামিনী-কন্ঠকুজিতকলেন শরনিকরবষিণাং ধনুষাং নিনাদেন * * প্রচলিতমিব তদরণ্যমভবৎ । —কাদম্বরী। ১৫৭৬ খঃ অব্দের ফাগেন মাসের প্রথম দিবসে মেওয়ার প্রদেশের অভ্যন্তরে সৰ্য্যেমহলনামক পব্বতদগে মহাকোলাহল শ্রত হইল। একটী উন্নত পৰ্বতশৃঙ্গে এই দাগ নিমিত, দগের চারিদিকে কেবল পাদপপণ পৰ্বতশ্রেণী বা বাক্ষাচ্ছাদিত উপত্যকা বহদের পয্যন্ত দষ্ট হইতেছে। প্রাতঃকালের বালসৰ্য্যে-কিরণ এই অনন্ত পৰ্বত ও উপত্যকাকে সবেণবণে রঞ্জিত করিয়াছে, এবং প্রাতঃকালের মন্দ মন্দ বায়ন-হিল্লোলে সেই অনন্ত পাদপশ্রেণী হইতে সুন্দর মন্মর শব্দ নিঃসত হইতেছে। পত্রে পত্রে শিশিরবিন্দ মক্তসৌন্দৰ্য্য অনুকরণ করিতেছে, বসস্তের পক্ষিগণ ডালে ডালে গান করিতেছে, এবং সেই দগ-প্রাচীর হইতে যতদর দেখা যায়, পৰ্বত ও উপত্যকা সয্যেকিরণে নবপ্লাত হইয়া শোভা পাইতেছে। ঝনঝনা শব্দে দুগের দ্বার উদঘাটিত হইল, শত অশ্বারোহী বশ লইয়া দাগ হইতে বহির্গত হইলেন। ধীরে ধীরে সেই অশ্বারোহিগণ সেই দগের পর্বত অধিরোহণ করিতে লাগিলেন, তাঁহাদিগের শাণিত বষণফলক সযকিরণে ঝকমক করিতে লাগিল, অশ্বক্ষরোহত শিলাখণ্ড হইতে অগ্নিকণা বহিগতি হইতে লাগিল। অচিরে অশ্বারোহিগণ পৰ্বততলে আসিয়া উপস্থিত হইলেন, একটী বনের মধ্যে প্রবেশ করিলেন। অদ্য আহেরিয়া, অর্থাৎ বসন্ত প্রারম্ভে বাৎসরিক মগয়ার দিন। আদ্যকার মগয়ার ফলাফল দ্বারা বৎসরের যুদ্ধের ফলাফল পরিগণিত হইবে, সতরাং সৰ্য্যেমহলের দাগেশ্বর দতজয়সিংহ শত অশ্বারোহী সমভিব্যাহারে মগয়ায় বহিস্কৃত হইয়াছেন। মেওয়ার প্রদেশে চন্দাওয়ৎকুল আহবে ও বিপদে অগ্রগামী, সেই প্রসিদ্ধ বংশমধ্যে দত্তেজয়সিংহ অপেক্ষা দমদমনীয় যোদ্ধা বা ভীষণপ্রতিজ্ঞ সেনানী কেহ ছিল না। দেখিলে বয়স ত্রিংশৎ বৎসর বলিয়া বোধ হয়, আকৃতি দীঘ নয়নদ্বয় জলন্ত অগ্নির ন্যায় উত্তজবল, শরীর আসর-বলে বলিষ্ঠ। যোদ্ধা দক্ষিণ হন্তে দীঘ বশ ধারণ করিয়া রহিয়াছেন, তাঁহার প্রত্যেক পেশী সফীত ও যেন লৌহনিমিত। দলেজীয়সিংহের সহচরগণও সেই চন্দাওয়ৎ-বংশোদ্ভূত, এবং দন্তজয়সিংহের অযোগ্য সহচর নহে। দাগ হইতে অধিরোহণ করিয়া অশ্বারোহিগণ একটী নিবিড় বনের মধ্যে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। কয়েকজন পাইককে পশুর সন্ধানে এইস্থানে পাঠান হইয়াছিল। পাইকগণ একে একে আসিয়া বনচর পশর কোনও অনুসন্ধান না পাওয়ার সংবাদ দিল, কিন্তু যোদ্ধগণ তাহাতে ভগ্নোৎসাহ না হইয়া বনের মধ্যে প্রবেশ করিতে লাগিলেন। সে বনের সৌন্দয্য অতিশয় মনোহর। কোথায় বা সষ্যকর পত্রের ভিতর দিয়া আসিয়া বনপক্ষেপ বা দাবার সহিত ক্রীড়া করিতেছে; কোথায় বা বন এরুপ নিবিড় যে দিবাভাগেই অন্ধকারের ন্যায় বোধ হইতেছে। কখন পব্বত ও শিলাখণ্ডের উপর দিয়া, কখন সন্দের ঋণার পাশ্ব দিয়া, কখন ঝোপের নিকট দিয়া, যোদ্ধগণ নিঃশব্দে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন। বসন্তকালের প্রারম্ভে ক্ষেত্র, ব্যক্ষ, পৰ্বত ও উপত্যক সন্দের শোভা ধারণ করিয়াছে। যোদ্ধাগণও জীবনের বসন্তকালের উদ্বেগ ও বীরমদে মত্ত হইয়া মগয়ায় বাহির হইয়াছেন। সকলই উৎসাহে পাণ, সকলই গব্বিত, সকলই আনন্দময়। মগয়ার ন্যায় উৎসাহপণে ব্যবসাই রাজস্থানে আর নাই, আহেরিয়ার ন্যায় আনন্দময় দিন আর নাই। কতক্ষণ বনের ভিতর বিচরণ করিয়া যোদ্ধগণ একটী প্রান্তরে পড়িলেন; সেই প্রাস্তরের সম্মখে একটী পৰ্বতদগে প্রায় বক্ষাবত রহিয়াছে। দত্তেজয়সিংহ অমাতাকে সবোধন করিয়া বলিলেন,—ঐ না পাহাড়জী ভূমিয়ার দাগ দেখা যায় ? ૨C O